সোমবার ● ৫ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » জৈন্তাপুরে বিদ্যুৎ বিভাগের দূর্নীতির সাক্ষী গাছ
জৈন্তাপুরে বিদ্যুৎ বিভাগের দূর্নীতির সাক্ষী গাছ
সিলেট প্রতিনিধি :: (২১ অগ্রহায়ন ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বেলা ১.২০মি.) সিলেটের জৈন্তাপুরে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের দূর্নীতির শেষ নেই। ৪শত কোটি টাকায় নির্মিত সাব ষ্টেশনের ১১ হাজার কেভি’র ৩টি লাইনের খুঁটি হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে জীবন্ত গাছ।
সরেজমিনে জৈন্তাপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়- নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির মাধ্যমে জৈন্তাপুরে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নতুন সাবষ্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে ষ্টেশনটি চালু করা হলেও দূর্ভোগের অন্তনেই।
নবনির্মিত সাব ষ্টেশন হতে জাফলং-জৈন্তাপুর বাজারে তিনটি ধাপে ৯টি ১১হাজার কেভির লাইন স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিতরণ কার্যক্রম চালু করা হয়। সাব ষ্টেশন নির্মানের সময় উল্লেখ করা হয়েছিল, যে সকল স্থানে লাইন সরবরাহ করা হয়েছে সেই সকল স্থানে নতুন সার্ভিস লাইন চালু করা হবে।
এছাড়া এর আওতার বাইরে নতুন নতুন গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধি করা হবে। লাগামহীন দূর্নীতির কারনে সাব ষ্টেশন চালু হলেও ২০ হতে ৩০ বৎসর পর্যন্ত পুরানো সার্ভিস লাইন ও খুঁটি বেশির ভাগ স্থানে পরিবর্তন করা হয়নি।
বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন অংশে সেই জরাজীর্ণ পুরাতন লাইন দিয়েই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। নতুন ট্রান্সফরমারের পরিবর্তে বিভিন্ন স্থানে ব্যবহৃত হয়েছে পুরাতন ট্রান্সফরমার।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে পাথর ষ্টোন ক্রাশার মিল মালিকদের নিকট হতে অবৈধ পন্থায় নতুন মিটার দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা উটিয়ে ঘুষ হিসাবে হাতিয়ে নিয়ে নতুন ট্রান্সফরমারগুলো পাথর ক্রাসিং মিলে ব্যবহার করা হয়। পাথর ক্রাশার মিলের পুরাতন ট্রান্সফরমারগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে সর্ভিস লাইনগুলোতে।
এদিকে উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায় সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের নিজপাট মুরগাহাটি এলাকার নাছির উদ্দিন ও তোরা মিয়া ডাক্তারের বাড়ির সামনে গাছকে খুঁটি হিসাবে ব্যবহার করে ১১ হাজার কেভির তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সার্ভিস লাইন স্থাপন করা হয়েছে।
নতুন সাব ষ্টেশন নির্মাণ হওয়ার পূর্বে সদ্য বিদায়ী আবাসিক প্রকৌশলী মাসুদ উদ্দিন পারভেজ বলেছিলেন, সাব ষ্টেশন নির্মাণ হওয়ার পর বৃহত্তর জৈন্তাপুরে বিদ্যুতের কোন সমস্যা থাকবে না।
কিন্তু নতুন সাব ষ্টেশন চালু হলেও সমস্যার যেন শেষ নেই। একদিকে যেমন ভূতুড়ে বিল অপরদিকে রয়েছে সীমাহীন দূর্ভোগ। অল্প বৃষ্টি কিংবা বাতাস দেখা দিলে ঘন্টার পর ঘন্টা সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। উন্নয়ন কাজের নামে পূর্ব ঘোষনা ছাড়াই সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়।
এছাড়া ফিডার হতে শুরু করে খুঁটি, ট্রান্সফরমার এবং সার্ভিস লাইন স্থাপনে চলছে অনিয়মের মহোৎসব। এব্যাপারে বর্তমান আবাসিক প্রকৌশলী নিজাম উদ্দিনের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন- পূর্বের কাজটি যাথা সময়ে শেষ না হওয়ায় ফলে উপজেলার বিভিন্ন অংশে উন্নয়ন কাজ বাকী রেখে তারা চলে যায়।
ফলে নাগরিক সুবিধার কথা বিবের্চনা করে পুরাতন এবং নতুন ট্রান্সফরমারের সমন্বয়ে কাজ করা হয়েছে। বর্তমানে নতুন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
গাছের সাথে সাথে ১১হাজার কেভির লাইন স্থাপনের বিষয় জানতে চাইলে তিনি জানান- গাছটির মালিককে গাছ কাটার জন্য বলা হলেও তিনি রাজি না থাকায় আমরা লাইন চালুর স্বার্থে যাতে কোন ক্ষতি না হয়, সে বিষয় লক্ষ্য রেখেই গাছের সাথে লাইন স্থাপন করেছি।