মঙ্গলবার ● ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কোচিং বাণিজ্যে দিশেহারা শিক্ষা ব্যবস্থা
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কোচিং বাণিজ্যে দিশেহারা শিক্ষা ব্যবস্থা
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, দক্ষিণাঞ্চল থেকে ফিরে :: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাট ১০ জেলার শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্যে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা ।সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম। স্কুল ছুটির পর বদলে যায় এখানকার পরিবেশ। অনেকটা খোলামেলাভাবেই শুরু হয় কোচিং বাণিজ্য আজ ধ্বংসের পথে শিক্ষা ব্যবস্থা ।
শিক্ষক-অভিভাবকদের বাধ্য করেন শিক্ষার্থীদের কোচিং ক্লাসে নিয়ে আসতে।
আমাদের বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবিরের পাঠানো তথ্যর ভিতিতে জানা যায় সরেজমিনে বাগেরহাট জেলার ৯ উপজেলা ও ইউনিয়নে চলছে শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্যে । সে দিকে নজর নেই প্রশাসনের।
এ চিত্র শুধুমাত্র বাগেরহাটে নয়, পুরো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্যে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। কোচিং বাণিজ্য বন্ধে ২০১২ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশেষ বিধি নিষেধ চালু করলেও তা বন্ধ হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে এক আবেদনে খুলনা জিলা স্কুলের বেশ কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগ জানানো হলে খুলনায় তা নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। জেলাপ্রশাসকের অধীনে ৪৬.৪৪/৩৫২ (যুক্ত) স্মারকে এ ঘটনায় তদন্ত হলেও প্রতিবেদনটি আলোর মুখ দেখেনি।
জানা গেছে, কোচিং বাণিজ্যে জড়িত শিক্ষকরা রাজনৈতিক ও অন্যভাবে ক্ষমতাধর। যে কারণে শিক্ষা প্রশাসনও এ ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে পারে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোচিং সেন্টারগুলোর সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টার পদে রয়েছেন সরকার দলীয় প্রভাবশালী একজন রাজনীতিবিদ। ফলে সরকারের কোচিং বাণিজ্য বন্ধের নীতিমালার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রকাশ্যেই কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। অনেক ক্ষেত্রে স্কুলের ক্লাসরুমে কোচিং চালিয়ে পূর্বের মতোই অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। আর এসব কাজে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক রয়েছেন মুখ্য ভূমিকায়। সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী লায়লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র এস.এম. রাহাতল ইসলাম । স্কুলের আগে ও পরে তাকে পড়তে হয় চারজন শিক্ষকের কোচিং ক্লাসে। ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, স্কুলের শিক্ষকরাই এসব কোচিং নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। স্কুলের শ্রেণিকক্ষে এখন আর ক্লাস হয় না। তাই, কোচিং সেন্টার ও টিউটোরিয়াল হোমই ভরসা।
জানা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা কোচিং এর সাথে জড়িত। তার ওপর অলিগলিতে রয়েছে অসংখ্য কোচিং সেন্টার।
সেই সাথে ব্যবসায়িক চিন্তায় স্বাভাবিক চিন্তা আর নৈতিকতা হারিয়েছেন অনেক শিক্ষক।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা, খুলনার বিভাগীয় কর্মকর্তা টি এম জাকির জানান, জাতীয় শিক্ষানীতির সুপারিশের আলোকে ‘শিক্ষা আইন-২০১৬’-এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, যে আইনে নীতিমালা ভেঙে কোচিং সেন্টার পরিচালনা করলে আর্থিক জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। আইনটি বাস্তবায়ন হলে কোচিং সেন্টারের সংখ্যা কমে আসবে। তিনি বলেন, সরকার শিক্ষকদের বেতন কয়েকগুণ বৃদ্ধি করেছেন। ফলে অনৈতিকভাবে ব্যবসায়িক স্বার্থে কোচিং চালালে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চলবে …………….১