বুধবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » আজ সিরাজগঞ্জ মুক্ত দিবস
আজ সিরাজগঞ্জ মুক্ত দিবস
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :: (৩০ অগ্রহায়ন ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.০৭মি.) আজ ১৪ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালে এই দিনে সম্পুর্ন শত্রু মুক্ত হয় সিরাজগঞ্জ। ’৭১ সালের ২৬ এপ্রিল পাক হানাদার বাহিনী সিরাজগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহর যখন হানাদার মুক্ত হয় তখনও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে হানাদারের ধ্বংসলীলা চলতে থাকে।
জেলা শত্রু মুক্ত করতে ৯ই ডিসেম্বর থেকে মুক্তিযোদ্ধারা সংঘবদ্ধ হয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন অবস্থানের উপর মরনপণ আঘাত হানতে শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধাদের উপর্যুপরি আক্রমনে একে একে মুক্ত হতে থাকে জেলার কাজিপুর, চৌহালী, রায়গঞ্জ, তাড়াশ, বেলকুচি, কামারখন্দ, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুর। মুক্তিযোদ্ধাদের মরনপন আক্রমনে থানায় থানায় পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর পতন ঘটতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমনের মুখে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী তাদের সহযোগী রাজাকার, আলবদর বাহিনী বিভিন্ন ক্যাম্প ছেড়ে সিরাজগঞ্জ শহরের মুল ক্যাম্পে আশ্রয় নিতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধারাও সিরাজগঞ্জ শহরের পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর উপর আক্রমনের পরিকল্পনা নেয়। ১২ই ডিসেম্বর সকালে মুক্তিবাহিনী শহর থেকে ১ মাইল দুরে শৈলাবাড়ি স্কুলে পাকিস্তানী বাহিনীর ক্যাম্পে আক্রমন করে। দু’দিনের এ যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর পতন ঘটে। মুক্তিযোদ্ধা গেরিলা বাহিনী শৈলাবাড়ি ক্যাম্পের পতন ঘটিয়ে বিপুল পরিমান অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ নিজেদের দখলে নিতে সক্ষম হয়। শৈলাবাড়ি ক্যাম্পে হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের পর স্থানীয় হাজার হাজার জনতা বিজয় উল্লাস করে ক্যাম্প দখল করে নেয়। শৈলাবাড়ি যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিঃ আহসান হাবিব, সুলতান মাহমুদ ও মকবুল হোসেন কালুসহ ৬জন নিহত হন। যুদ্ধে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর ১৮ জনেরও বেশী সৈনিক নিহত হয়। মুক্তি বাহিনীর সহস্রাধিক গেরিলা বাহিনী সিরাজগঞ্জ শহরের উত্তর, পশ্চিম, দক্ষিন দিক থেকে হানাদার বাহিনীকে অবরুদ্ধ করে রাখে। ১৩ই ডিসেম্বর গভীর রাতে হানাদার বাহিনী সিরাজগঞ্জ বাজার ষ্টেশনে হয়ে ট্রেনযোগে ঈশ্বরদী অভিমুখে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ১৪ই ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা সিরাজগঞ্জ মুক্ত করে জয়বাংলা শ্লোগানে উজ্জীবিত হয়ে বিজয় উল্লাসে শহরে প্রবেশ করে। সকাল ১১টায় বিজয়ের গর্বে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা তাদের প্রিয় শহরে দখল নিয়ে সিরাজগঞ্জ সরকারী কলেজ মাঠে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করে। সদর থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গাজী ফজলুর রহমান জানান, দিবসটি উপলক্ষে সকালে র্যালী বিকেল আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে।