রবিবার ● ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাঙামাটি জেলা পরিষদের মাসিক সভা
রাঙামাটি জেলা পরিষদের মাসিক সভা
ষ্টাফ রিপোর্টার :: (৪পৌষ ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৩০মি.) আগামী ২০১৭সাল থেকে রাঙামাটি জেলার এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের লক্ষ্যে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা।
তিনি বলেন, রাঙামাটির প্রত্যন্ত পাহাড়ী এলাকার বিদ্যালয়ের অসংখ্য শিক্ষার্থী রয়েছে যারা অর্থের অভাবে ফরম পূরণ করতে না পারায় এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনা। ফলে মাধ্যমিক স্তরেই শিক্ষা জীবন থেকে তারা ঝড়ে পড়ে। এটি খুবই দুঃখজনক। এ সমস্যা নিরসনে পরিষদ হতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা এর ফলে এসএসসি পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হবেনা বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি প্রাথমিক শিক্ষাসহ শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তা এগিয়ে নেওয়ার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
১৮ডিসেম্বর রবিবার রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত পরিষদের মাসিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম জাকির হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় পরিষদের সদস্যবর্গ, কর্মকর্তা ও হস্তান্তরিত বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় স্বাস্থ্য বিভাগের সিভিল সার্জন ডা. স্নেহ কান্তি চাকমা বলেন, জেলার স্বাস্থ্য বিভাগে বিভিন্ন বিষয়ের প্রচুর কনসালটেন্ট এবং মেডিকেল অফিসার এর পদ শূন্য হয়ে আছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হতে ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে এ জেলার বিভিন্ন উপজেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য ৩৮জন নার্স পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ১৪জন নার্সকে জেনারেল হাসপাতালে ও বাকী নার্সদের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, গত ১০ডিসেম্বর সারা দেশের ন্যায় রাঙামাটিতেও সাড়ে ৮২ হাজার শিশুকে ভিটামিন “এ” ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তা জানান, চলতি অর্থ বছরে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ২৭টি স্থাপনা মেরামতের আওতায় আনা হয়েছে এবং ১৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মেরামতের কাজ চলছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বলেন, শীত মৌসুম এসে যাওয়ায় বিভিন্ন শাক-সবজি চাষ চলছে এবং বিভিন্ন উপজেলায় ভুট্টা ও চিনা বাদাম চাষের প্রদর্শনী প্লট দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, চেলাছড়া ও আটারকছড়া আবাসিক বিদ্যালয়গুলো রাজস্বখাতে চালু করার জন্য মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, জেলার সদর ও কাউখালী উপজেলায় সিআইজি প্রকল্পের আওতায় ২০জন করে ২টি গ্রুপে লোক নিয়োগ করা হবে এবং তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এছাড়া জেলে নিবন্ধনের কাজ এখনো চলছে। যেসব জেলে এখনো নিবন্ধিত হয়নি তাদের নিবন্ধনের জন্য তিনি এ সভার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট জেলেদেরকে অনুরোধ জানান।
জেলা সমাজসেবা বিভাগের কর্মকর্তা বলেন, সমাজসেবা কর্তৃক তালিকাভুক্তদের মাঝে ক্ষুদ্রঋণ, বয়স্ক ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, প্রতিবন্ধী শিক্ষা ভাতা সঠিকভাবে প্রদান করা হচ্ছে।
বিসিক-কুটির শিল্প উন্নয়ন প্রকল্পের মহা-ব্যবস্থাপক জানান, বর্তমানে ২৭টি প্রশিক্ষণ কোর্স চলছে যা আগামী ৩মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে। তিনি জানান বিসিক কর্তৃক গত ১৬ডিসেম্বর থেকে ৩দিনব্যাপী বিজয় দিবস মেলা আয়োজন করা হয়েছে।
জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে ৮টি ক্যাটাগরিতে যুবদের প্রশিক্ষণ প্রদান কার্যক্রম চলছে যা আগামী ৩১ডিসেম্বর সমাপ্ত হবে এবং আগামী ১লা জানুয়ারি ২০১৭ হতে নতুন ব্যাচে বেকার যুবদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এছাড়া অন্যান্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট এর কর্মকর্তা জানান, পার্বত্য চুক্তির ১৯ বছরপূর্তিতে রাঙামাটিতে ও আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস উপলক্ষে ঢাকায় ইন্সটিটিউট হতে স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় নৃত্যানৃষ্ঠান ও সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।
জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসার জানান, চলতি মাসের ৫ ডিসেম্বের ইসিমোড এর প্রতিনিধিদের সম্মানে উন্নয়ন বোর্ড মিলনায়তনে শিল্পকলার শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এবং ৯ ডিসেম্বর গণহত্যা দিবস পালন ও ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সভায় হস্তান্তরিত বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ তাদের বিভাগের স্ব স্ব কার্যক্রম উপস্থাপন করেন।