শনিবার ● ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » ঢাকা » নাসিক নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছিল না : ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ
নাসিক নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছিল না : ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ
ঢাকা প্রতিনিধি :: (১০ পৌষ ১৪২৩ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.৩৪মি.) সাবেক উপ-রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছিল না। এই নির্বাচনে সরকারদলীয় প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভি বেশি সুবিধা পেয়েছেন। সরকারের পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন সবইতো তাদের বন্ধুপ্রতিম। আর বিএনপির প্রার্থীর সাথে তো তারা এ ধরনের আচরণ করেনি।
তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, নাসিক নির্বাচনে যদি জনগণ আপনাদেরকে ভোট দিয়েই থাকে তাহলে অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দিন। এখনই আসুন। এই নির্বাচনে যারা জিতবেন তারাই দেশ পরিচালনা করবেন।
২৪ ডিসেম্বর শনিবার সকালে রাজধানীতে নাগরিক ফোরামের উদ্যোগে “স্বাধীন, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপির প্রস্তাব : নাসিক নির্বাচন’’ শীর্ষক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মওদুদ আহমদ এসব বলেন।
মওদুদ আহমদ বলেন, বাংলাদেশের বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা। আর গণতন্ত্র ফেরাতে স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন দরকার। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে বলেই নিরপেক্ষ ইসি গঠনে প্রস্তাব দিয়েছে। বর্তমানে রাষ্ট্রপতি যে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে তা ইতিবাচক এবং এই আলোচনা অব্যাহত রাখা দরকার। যাতে সবাই মিলে মতৈক্য হওয়া যায় নিরপেক্ষ ইসি গঠনে।
তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশে কোনো রাজনীতি নেই। যা আছে অপরাজনীতি এবং একদলীয় রাজনীতি। বিরোধী দলের কোনো প্রয়োজনীয়তাই তারা বোধ করছেনা। বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করতে সমস্ত আয়োজন তারা করেছে। এ জন্যই কি আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। অথচ আমার লন্ডনে থেকেও স্বাধীন পুর্ব পাকিস্তান গঠনের লক্ষ্যে কাজ করেছি। তখন আওয়ামী লীগও কোনো আন্দোলন করতে পারেনি। এরপর দেশের পর্যায়ক্রমে বহু আন্দোলন হয়েছে। অতপর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সময় আমি বিদেশ থেকে আইনজীবি নিয়ে আসি। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির ব্যাবস্থা করি।
মওদুদ আহমদ বলেন, ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর সময়ই আমাকে জেল খাটতে হয়েছে। কারণ তিনি বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আমরা তার বিরোধীতা করেছিলাম। আর আমাকেই জেল খাটতে হয়েছে।
গণতন্ত্র ফেরানোই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মস্তব্য করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, বর্তমান সরকার দেশের সব মূল্যবোধ ধ্বংস করে ফেলেছে। তারা নতুন কোনো মূল্যবোধ তৈরি করতে পারেনি। গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক চর্চা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অর্থাৎ কোনো ক্ষেত্রেই তারা মূল্যবোধ দেখাতে পারেনি।
তিনি বলেন, নাসিক নির্বাচনে যদি সরকারকে জনগণ ভোট দিয়েই থাকে তাহলে ভয়ের কী? প্রশাসন, আইনশৃঙ্খল বাহিনী নিরপেক্ষ করে দিয়ে একটি তত্বাবধায়ক বা নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার গঠন করুন। এখনই নির্বাচন দিন। যারা জিতবে তারা দেশ পরিচালনা করবে। এটা তো সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় সুযোগ। এই নির্বাচনে শেখ হাসিনার সরকার জিতলে আমরা মেনে নেবো। আর আমরা জিতলে তারা মেনে নেবে।
নাগরিক ফোরামের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহিল মাসুদের সভাপতিত্বে এবং আদর্শ নাগরিক আন্দোলনের প্রতষ্ঠিাতা ও সভাপতি মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসানের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস- চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নি, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রাকিবুল ইসলাম রিপন, ঘুরে দাঁড়াও আন্দোলনের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, আদর্শ নাগরিক আন্দোলনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম ইউনুস, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন মাহি প্রমুখ।