মঙ্গলবার ● ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » খাগড়াছড়িতে সংবাদপত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি
খাগড়াছড়িতে সংবাদপত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: (১৩ পৌষ ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৪৫মি.) খাগড়াছড়িতে কয়েকটি সংবাদপত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে উড়ো চিঠি দেওয়া হয়েছে। ২৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ভোরে সংবাদপত্রের দোকান ‘প্রতিভা ট্রেডার্স খুলতেই চারটি খামের মধ্যে উড়ো চিঠি পাওয়া যায়। খাগড়াছড়ির সংবাদপত্র এজেন্ট রতন কুমার দে বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রশাসনকে অবহিত করেছেন বলেও জানিয়েছে। সাংবাদিককে মারধর ও প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের প্রাণ নাশের হুমকির ঘটনার পর পত্রিকার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে উড়ো চিঠি দেওয়ার ঘটনায় সাংবাদিক মহলে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা আরও বেড়েছে।
খাগড়াছড়ির সংবাদপত্রের এজেন্ট রতন কুমার দে জানান, মঙ্গলবার ভোর রাতে কর্মচারী দোকান খোলার পর খামে ভড়া চারটি চিঠি পান। তাকে দেওয়া উড়ো চিঠিতে লেখা হয়েছে যে, ‘ইদানিং প্রথম আলো, সমকাল, যুগান্তর, ইত্তেফাক, কালেরকন্ঠ, সুপ্রভাত বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকা এলাকার সুনামধন্য জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে মিথ্যাচার করছে। জনবিরোধী এসব পত্রিকা খাগড়াছড়িতে আনা ও বিক্রি নিষিদ্ধ করা হলো। পত্র প্রাপ্তির পর যদি এসব পত্রিকা খাগড়াছড়ি আসে, তার দায়-দায়িত্ব আপনাকে নিতে হবে।’
এ ব্যাপারে সংবাদপত্র এজেন্ট রতন কুমার দে জানান, তিনি তাৎক্ষনিভাবে বিষয়টি জানাতে খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো. মজিদ আলীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। এসময় পুলিশ সুপারের পরামর্শ অনুযায়ী একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগে কে বা কারা এমন উড়ো চিঠি দিয়েছে তা সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয় নি।
খাগড়াছড়ির মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তারেক মো. আব্দুল হান্নান জানান, একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ধরণের উড়ো চিঠির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন খাগড়াছড়ির পেশাজীবী সাংবাদিকরা।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও সমালোচনার ঝড় বইছে। খাগড়াছড়ির সাংবাদিক প্রদীপ চৌধুরী তার ফেসবুকে লিখেছেন, খাগড়াছড়িতে বেশ কয়েকটি পত্রিকা বিক্রির উপর নিষেধজ্ঞা দিয়ে উড়ো চিঠি। পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বনামধন্য সংবাপত্রসেবী রতন কুমার দে’ এ মাত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। নিশ্চয়, সামনে টেলিভিশন বন্ধের খবরও আসতে পারে।
খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূইয়া এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন, তাহলে তো সংবাদপত্রের পরাজয় ও বিদায় বেলা, সন্ত্রাসীদের বিজয় মেলা!
এর আগে খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম কর্তৃক প্রথম আলো’র আলোকচিত্র সাংবাদিক নীরব চৌধুরীকে পিটানোর ঘটনায় প্রতিবাদের কারণে হুমকি পাওয়ায় জেলার ৩৫ সাংবাদিক একযোগে সাধারণ ডায়রি করেছিলেন। নীরব চৌধুরী নিজেও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেছেন।
প্রসঙ্গত, ১৮ ডিসেম্বর চেঙ্গীনদীতে বালু তোলার ছবি তুলতে গেলে খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলমের অনুসারী ক্যাডার দিদারুল আলমসহ কয়েকজন তাকে ধরে নিয়ে যায়। পরে পৌরভবনে সচিবের কক্ষে নীবর চৌধুরীকে নিজ হাতেই মেয়র রফিকুল আলম মারধর করেন। ওই ঘটনার প্রতিবাদে ২০ ডিসেম্বর সাংবাদিকরা মানববন্ধন কর্মসুচি পালনকালে মেয়রের অনুসারীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং কর্মসূচি পালনকারী সাংবাদিকদেরকে ধরে ধরে জবাই করার হুমকি দিয়েছে। ওই দিনই সাংবাদিকরা জিডি করেন। বর্তমানে ওসব জিডি’র ব্যাপারে তদন্ত চলছে।