বুধবার ● ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » কাউখালীতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন
কাউখালীতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন
কাউখালী প্রতিনিধি :: (১৪ পৌষ ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.০৭মি.) প্রেমের টানে ঘর ছেড়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন রাঙামাটি জেলার কাউখালী উপজেলায় পোয়াপাড়া ভাড়া বাসায় আসা মাদারীপুরের মেয়ে শিউলী আক্তার সোনিয়া।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়,গত কয়েক মাস পুর্বে কাউখালী উপজেলার পোয়াপাড়া গ্রামের জনৈক জাবেদ আলমের ভাড়া বাসা নেন মাদারীপুরের রাজৈর থানার কাশিমপুর নাজিরখাঁ গ্রামের আব্দুল হক বেপারীর মেয়ে কুয়েত প্রবাসী মো. ইদ্রিস হোসেন রিপনের স্ত্রী শিউলী আক্তার সোনিয়া (৩০)। বিয়ের পর স্বামী অর্থ উপার্জনের আশায় চলে যান কুয়েতে। এরই মধ্যে স্বামীর আত্মীয়ের সুত্রে কাউখালী এসে ভাড়া বাসা নেন সোনিয়া। এক পর্যায় বাড়ির মালিক জাবেদের ফুফাত ভাই উত্তর নাইল্যাছড়ির মজিবুল আলমের পুত্র মো. পারভেজ (২৮) এর সাথে তার পরিচয়। সেই থেকে তাদের ভাড়া বাসায় আসা যাওয়ার মধ্যে গড়ে উঠে ভাই বোনের সম্পর্ক,ভাই বোনের পবিত্র সম্পর্ক থেকে তা শেষ পর্যন্ত প্রেমিক প্রেমিকায় রুপ নেয়। এক পর্যায় সোনিয়া তার প্রেমিকের বাড়ি নাইল্যাছড়ি আসা যাওয়া শুরু করতে থাকেন এর মধ্যে চতুর প্রেমিক পারভেজ কৌশলে প্রেমিকা হতে তার প্রবাসী স্বামীর পাঠানো সমস্ত গয়না স্বর্ণালংকার নগদ টাকা এক লক্ষ সাতষট্টি হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। বেশ কয়েক মাস পুর্বে প্রেমিকাকে নিয়ে রাঙামাটি পর্যটন শহরে বেড়াতে যাওয়ার নাম করে উঠেন এক আবাসিক হোটেলে সেখানে চতুর এই প্রেমিক জোর করে ধর্ষন করে তার প্রেমিকা সোনিয়াকে। এরই মধ্যে সোনিয়া দুই মাসের অন্তস্বত্তা হয়ে পড়েন।
পরে অর্ন্তঃস্বত্তা সোনিয়া সব কিছু হারিয়ে প্রেমিক পারভেজকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন প্রেমিক পারভেজ এসব বিষয় উড়িয়ে দেন, কিন্তু দমে যাওয়ার মতো মেয়ে নন প্রেমিকা সোনিয়া। ঘটনা জানান ৪নং কলমপতি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যাজাই মারমাকে তিনি সংশ্লিষ্ট ইউপি মেম্বার শাহাজানকে নিয়ে সমস্থ ঘটনা শুনে প্রেমিক পারভেজকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে পারভেজ ঘটনা অস্বিকার করে। পরে চেয়ারম্যান বিষয়টি সুরাহা করতে না পেরে সোনিয়াকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন। প্রেমিকা সোনিয়া নিরুপায় হয়ে গত ২০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকাল ৫টার সময় উত্তর নাইল্যাছড়ি প্রেমিক পারভেজের বাড়িতে গিয়ে উঠেন, প্রেমিকাকে আসতে দেখে প্রেমিক পারভেজ তার পিতা,মাতা সহ ঘরে তালা মেরে এলাকা হতে পালিয়ে চলে যান। খবর পেয়ে স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে এ সময় এলাকার লোকজন মেম্বার ছুটে আসেন এবং তার কাছ থেকে ঘটনা শুনে উপজেলা আ’লীগ নেতৃবৃন্দকে এবং প্রশাসনকে বিষয়টি জানান কিন্তু ভুক্ত ভুগী প্রেমিকা সোনিয়া কারো কথা শুনতে নারাজ। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মৌখিক আশ্বাসের ভিত্তিতে গত ২২ডিসেম্বর কাউখালী সদরে সমঝোতা করার জন্য বসেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। প্রেমিক পারভেজ তার পরিবারের সদস্যদের এবং সোনিয়াকে নিয়ে বসে তিন লক্ষ টাকা কাবিন মুলে পারভেজের সাথে ২৫ ডিসেম্বর তার বিয়ের দিন ধার্য করা হয় এবং সোনিয়ার কাছ থেকে নেয়া টাকা হতে এক লক্ষ এবং তার স্বর্ণালংকার পেরত দিবে বলে সিদ্ধান্ত হয়, কিন্তু তার দুই দিন পরে প্রেমিক পারভেজ এলাকা হতে উধাঁও।
বিষয়টি সোনিয়া কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিতভাবে জানান, শেষ পর্যন্ত কোথাও কোন আশ্রয় না পেয়ে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব সোনিয়া ২৮ ডিসেম্বর বুধবার প্রতারক প্রেমিক পারভেজের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেছেন । বিষয়টি এখন কাউখালীতে টক অব দ্যা উপজেলায় পরিনত হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রেমিক পারভেজের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে (০১৮১৩৭৯৯৬২৪) সে পরে কথা বলবে বলে জানিয়ে মোবাইল কেটে দেয় পরক্ষনে তার সাথে যোগাযোগের করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ৪নং কলমপতি ইউপি মেম্বার মো. শাহজান বলেন,আমরা বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে সমাধান করার জন্য চেষ্টা করি, বৈঠকে পারভেজ ও তার অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন, তারা বৈঠকের রায় মেনে বাড়িতে গিয়ে সকলে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান, এখন আমাদের কি করার আাছে।
অপরদিকে এ প্রসঙ্গে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফিয়া আখতারসিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন,বিষয়টি নিয়ে বাদি সোনিয়া আমাকে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল, আমি বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকার কমিশন অথবা ব্লাষ্টে গিয়ে ছেলেটির বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য পরামর্শ প্রদান করি। শুনেছি বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ভাবে সমাধান করার চেষ্ঠা করা হয়েছিল কিন্তু সমাধান হয়নি। অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে সোনিয়া মামলা করতে ভয় পাচ্ছেন বলে জানান,কারন পারভেজ তাকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে কাউখালী উপজেলার পোয়াপাড়া ও উত্তর নাইল্যাছড়ি এলাকার সাধারন মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয় লোকজনের একটাই দাবী পারভেজের দৃষ্টান্তমুলুক শাস্তি হোক। যাতে এলাকায় এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।