শনিবার ● ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » সিলেটে পরিবহন ধর্মঘট চলছে: যাত্রী ভোগান্তি চরমে
সিলেটে পরিবহন ধর্মঘট চলছে: যাত্রী ভোগান্তি চরমে
সিলেট প্রতিনিধি :: ( ৬ ফাল্গুন ১৪২৩ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪৪৪মি.) সিলেটের শাহজালাল উপশরের মেন্দিবাগ এলাকায় মাদকসহ দুই ট্রাক শ্রমিককে আটকে ঘটনায় পরিবহন শ্রমিকদের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার জের ধরে সিলেটে আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়ে তা এখনও চলছে।
ধর্মঘটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা।
সিলেট জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সহ সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম শনিবার সকাল ১১টায় সিএইচটি মিডিয়াকে জানান, সিলেটে সর্বাত্মক পরিবহন ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। ধর্মঘটের সমর্থনে শ্রমিকরা নগরীর চন্ডিপুলে পিকেটিং করছেন।
তিনি জানান, পিকআপ ড্রাইভারের সাথে অপ্রীতিকর ঘটনার জেরে পুলিশ মেন্দিবাগ মাইক্রোবাস অফিসে হামলা চালায়। এতে তাদের ৫ জন শ্রমিক গুরুতর আহত হন। কোতয়ালী থানার ওসি সোহেল আহমদের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়।
তিনি বলেন, শ্রমিকদের ওপর হামলা ও ওসির প্রত্যাহার দাবিতে এ ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে। বিকাল ২টায় এ রিপোর্ট লেখার পর্যন্ত প্রশাসনের সাথে মালিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের জন্য বৈঠক চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নগরীর সুবহানীঘাট এলাকায় পিকআপ ভ্যানে (সিলেট-ন-১১-১৭৩৬) তল্লাশী চালিয়ে মদসহ তুরণ, লিটন নামের ২ শ্রমিককে আটক করে পুলিশ। এর জের ধরে রাত ৯টায় উপশহর পয়েন্ট এলাকায় সড়ক অবরোধ করে রাখে পরিবহন শ্রমিকরা।
তখন পুলিশ সদস্যরা সেখানে এসে অবরোধ তুলে নেয়ার কথা বললেও তারা পুলিশের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ এবং কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়।
আহতদের মধ্যে রয়েছে-সিলেট জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ মানিক মিয়া, গুরুতর আহত মোশাহিদ আলী, মকবুল হোসন বাদল, সুলতান আহমদ, জামাল আহমদ, কামাল আহমদ, খালেদ, আলম, ফলিক, সোহাগ, সফিনুরসহ ১৫ জন।
খবর পেয়ে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান এবং মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এস এম রোকন উদ্দিন ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তারা এ নিয়ে দু’পক্ষের সাথে কথা বলেন। এক পর্যায়ে রাতে তারা অবরোধ তুলে নেয়। এরপর রাত সাড়ে ১১টার দিকে কোতয়ালী থানার ওসির অপসারণ দাবিতে শ্রমিকরা ফের সড়ক অবরোধের সৃষ্টি করে এবং শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়।
সিলেট জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সহ সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসনাত আবুল আজ শনিবার সকাল ৬টা থেকে সিলেট জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করেন। তারা কতোয়ালী থানার ওসি সোহেল আহমদকে প্রত্যাহার ও আটক শ্রমিকদের মুক্তি না দিলে ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলে জানান।
এদিকে, শুক্রবার রাত ২টার দিকে শাহজালাল নতুন ব্রিজ থেকে সুবহানীঘাট, কুমারপাড়াসহ এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ট্রাক এলোপাতাড়ি রেখে যানজট সৃষ্টি করে রাখা হয়। এ কারণে শাহজালাল ব্রীজ থেকে উত্তর দিকে কুমারপাড়া এবং দক্ষিণ দিকে বাবনা মোড় পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে, রাতেই শ্রমিকরা রোজভিউ’র সম্মুখ থেকে অবরোধ তুলে নিয়েছেন।
কোতয়ালী থানার সেকেন্ড অফিসার শাহ ফজলে আজিম পাটোয়ারি জানান, মদসহ দুই পরিবহন শ্রমিককে আটকের জের ধরে পরিবহন শ্রমিকরা মেন্দিবাগে সড়ক অবরোধের সৃষ্টি করে। এ সময় ডিবি পুলিশের সাথে শ্রমিকদের ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে কোতয়ালী থানার ওসি সোহেল আহমদ ঘটনাস্থলে গেছেন বলে জানান তিনি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শ্রমিক ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে।