বৃহস্পতিবার ● ২৭ এপ্রিল ২০১৭
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা হিংস্র এবং মারাত্মক আক্রমণের শিকার
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা হিংস্র এবং মারাত্মক আক্রমণের শিকার
অনলাইন ডেস্ক :: বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ব্লগার ও বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ওপর সহিংসতা বেড়েছে। সংখ্যালঘুরা হিংস্র এবং মারাত্মক আক্রমণের শিকার হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ)-এর ২০১৬ সালের প্রতিবেদনে এভাবেই বাংলাদেশের পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। ২৬ এপ্রিল বুধবার সংস্থাটির এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ইউএসসিআইআরএফ-এর এবারের প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে সুনির্দিষ্ট কোনও ক্যাটাগরিতে রাখা হয়নি। তবে সংস্থাটি সাতটি দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়টি পর্যবেক্ষণের কথা বলেছে। এই সাত দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নামও রয়েছে।
সাত দেশের তালিকায় থাকা বাকি দেশগুলো হচ্ছে নেপাল, বেলারুশ, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, কিরগিজস্তান, মেক্সিকো এবং সোমালিয়া।
এছাড়া পশ্চিম ইউরোপেও মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা পর্যবেক্ষণের কথা বলেছে ইউএসসিআইআরএফ। তবে সংস্থাটির এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন মার্কিন প্রশাসনের জন্য বাধ্যতামূলক নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে উদ্বেগজনক দেশের তালিকায় ১০টি দেশের নাম সুপারিশ করে সংস্থাটি।
দেশগুলো হচ্ছে মিয়ানমার, চীন, ইরিত্রিয়া, ইরান, উত্তর কোরিয়া, সৌদি আরব, সুদান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তান। ২০১৬ সালের প্রতিবেদনেও একই তালিকায় এ দেশগুলোর নাম ছিল।
এছাড়া প্রতিবেদনে আরও ছয়টি দেশের কথা বলা হয়েছে; যাদের অবস্থাও প্রায় সুনির্দিষ্টভাবে উদ্বেগজনক দেশগুলোর মতোই। এই দেশগুলো হচ্ছে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিরিয়া এবং ভিয়েতনাম।
এর পরের শ্রেণি অর্থাৎ দ্বিতীয় সারিতে এসেছে ১২টি দেশের নাম। দেশগুলো হচ্ছে আফগানিস্তান, আজারবাইজান, বাহরাইন, কিউবা, মিসর, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, কাজাখস্তান, লাওস, মালয়েশিয়া ও তুরস্ক।
যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশন-এর বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০১৬ সালে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগার, বুদ্ধিজীবী ও বিদেশিদের ওপর হিংস্র এবং মারাত্মক আক্রমণ বেড়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলো এসব হামলা চালিয়েছে।
বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার অবশ্য এসব বিষয়ে তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে। হামলা পরিকল্পনায় জড়িত থাকার দায়ে অভিযুক্ত অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারেন- এমন ব্যক্তিদের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। তবে সরকারের এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও হুমকি এবং সহিংসতার পরিমাণ বেড়েছে। এতে সব ধর্মের অনুসারী নাগরিকদের মধ্যেই একটা ভীতিকর অনুভূতি তৈরি হয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশে অবৈধ ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি সাধারণভাবে ভূমি দখল হিসাবে পরিচিত। এসব ক্ষেত্রে মালিকানাজনিত ব্যাপক বিরোধের কথা বলা হয়। বিশেষ করে হিন্দু ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা এর শিকার হন। এছাড়া রোহিঙ্গা মুসলিমদের অবস্থা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে।
ধর্মীয় স্বাধীনতা পরিস্থিতি মূল্যায়নের লক্ষ্যে ২০১৬ সালের মার্চে ইউএসসিআইআরএফ-এর একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে। ওই সফরের ভিত্তিতে সংস্থাটি মার্কিন সরকারের কাছে একটি সুপারিশ তুলে ধরেছে।
এতে মার্কিন সরকারের প্রতি বলা হয়েছে, তারা যেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি ধর্মীয় বিভেদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নিন্দা জানানোর আহ্বান জানান। ধর্মীয় কারণে সংঘটিত সহিংসতা এবং হয়রানির বিরুদ্ধেও সরকারের শক্তিশালী অবস্থান কামনা করেছে সংস্থাটি। সূত্র : এইবেলাডটকম