মঙ্গলবার ● ১০ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » বিবিধ » নাটোরের দুইটি উপজেলায় উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত
নাটোরের দুইটি উপজেলায় উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত
আব্দুল মজিদ, নাটোর প্রতিনিধি::মঙ্গলবার নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে সিংড়ায় ব্যাপক কারচুপি, জয় বাংলা বলে কেন্দ্র দখল, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর এজেন্টেদের কেন্দ্রে যেতে বাঁধা দেয়া ও যারা কেন্দ্রে গিয়েছে তাদের মারপিট করে বের করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে ৷ জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে সিংড়া গোল-ই আফরোজ সরকারি কলেজ কেন্দ্রে এক যুবককে ও শোলাকুড়া কেন্দ্রে হট্টগোল করা অভিযোগে দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক করে পুলিশ৷ কেন্দ্র গুলোতে ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম৷ প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিংড়া উপজেলার মোট ১১৮টি কেন্দ্রের মধ্যে সকাল থেকেই ইটালী, কলম, তাজপুর ও চামারী ইউনিয়নের বেশ কিছু কেন্দ্র নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ পরিচয়ধারী৷ তারা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর এজেন্টেদের কেন্দ্রে যেতে বাঁধা দেয় ও যারা কেন্দ্রে গিয়েছে তাদের মারপিট করে বের করে দেয়৷ শোলাকুড়া মাদরাসা কেন্দ্রে এজেন্টেদের মারপিট করার সময় সুমন ও রনি নামের দুই সরকার সমর্থককে আটক করে আমর্ড পুলিশ ও বিজিবি এবং জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে সিংড়া গোল-ই আফরোজ সরকারি কলেজ কেন্দ্রে সপন নামের এক যুবককে আটক করেছে থানা পুলিশ৷ এদিকে দুপুর ১ টার দিকে ইটালীর পাকুরিয়া কেন্দ্রে জয়বাংলা বলে লাঠি হাতে সরকার সমর্থকরা কেন্দ্র দখলে নেয়, এসময় কেন্দ্রে থাকা পুলিশকে নিরব ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়৷ এক কথায় পুরো সিংড়া উপজেলা জুড়েই মঙ্গলবারের নির্বাচনে প্রকাশ্যে ব্যাপক কারচুপি করতে দেখা গেছে ৷ অনেক গুলো কেন্দ্রে ভোটাররা বাহিরে দাড়িয়ে থাকলেও ভিতরে সরকার সমর্থকরা ব্যালট পেপারে সিল মেরে নিজেরাই বাক্স ভর্তি করেছে বলে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছে ৷ দখল করা কেন্দ্র গুলোতে মারমুখি অবস্থান নিয়ে থাকায় সাধারণ মানুষও সেখানে যেতে পারে নাই৷ এছাড়া রাকসা কেন্দ্রে সরকার সমর্থকদের প্রিজাইডিং অফিসারের নিকট থেকে ব্যালট বই নিয়ে প্রকাশ্যে সিল মারতে দেখা গেছে৷ সিংড়া উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট আলী আজগর জানিয়েছেন, সকাল থেকেই উপজেলার ইটালী ইউনিয়নের তিরোইল, ইটালী, পাকুরিয়া, বাঁশবাড়িয়া ও সাতপুকুরিয়া কেন্দ্র কলম ইউনিয়নের কালিনগর, নূরপুর, আনন্দ নগর, নাছিয়ারকান্দি, তাজপুর ইউনিয়নের হরিপুর এবং চামারী ইউনিয়নের সোনাপুর ও মহিষমারীসহ উপজেলার বেশ কিছু কেন্দ্র নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা৷ কালিনগর ও তেরাইল কেন্দ্রে কোন সাধারন ভোটার বা বিএনপি সমর্থক ভোট দেয়ার জন্য ঢুকতে পারে নাই৷ দুপুরে এলাকার মানুষ আবার কেন্দ্রে যাওয়ার চেষ্টা করলে পাকুরিয়া কেন্দ্রে প্রকাশ্যে লাঠি হাতে নিয়ে ৫০-৬০জন লোক সাধারন মানুষকে তাড়িয়ে দেয়৷
ইটালী কেন্দ্রে যুবলীগের ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুল করিম ও যুবলীগ নেতা কামাল হোসেনের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে ভোট নেয়া হয়৷ এদিকে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুন হাসান সাপ্তাহিক উত্তর গণজীবনের ভূয়া কার্ড দিয়ে সাংবাদিক পরিচয়ে কয়েকটি মোটর সাইকেল নিয়ে চোগ্রাম ও ছাতারদিঘী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার কেন্দ্রে ঘুরে ঘুরে বিএনপি সমর্থিতদের তাড়িয়ে দেয়৷ রাতভর তাদের এজেন্টদেরও কেন্দ্রে না যেতে ভয় দেখানো হয়৷ বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ফয়জুনেসা পুতুলকেও সরকার সমর্থকরা বিভিন্ন কেন্দ্রে যেতে বাঁধা দেয় বলে অভিযোগ করেন ৷ এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন ও নিবার্চনের রিটানিং অফিসারকে জানিয়েও কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি বলে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী অভিযোগ করেন৷ অপরদিকে গুরুদাসপুরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি ও অনিয়ম ও বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বেশ কিছু কেন্দ্রে আসতে দেয়া হয়নি৷ আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রাথী শফিকুল ইসলাম শফিক এসব অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবী করে বলেছেন, পরাজয় এড়াতে এসব বলা হচ্ছে ৷ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট খন্দকার মোহম্মদ আলী বলেন, কয়েকটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার সংবাদ পেয়ে সেখানে দ্রুত ট্রাইকিং ফোর্স পাঠানো হয়৷ প্রসঙ্গত সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও থানা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মারা যাওয়ায় এই উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে তেমন কোন অনিয়মের খবর পাওয়া যায়নি৷
আপলোড : ১০ নভেম্বর ২০১৫: বাংলাদেশ : সময় : সন্ধ্যা ৬.২৫মিঃ