শুক্রবার ● ১২ মে ২০১৭
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বনাথে বাঁশের সাঁকো চাদা তুলে চলছে মেরামত
বিশ্বনাথে বাঁশের সাঁকো চাদা তুলে চলছে মেরামত
মো. আবুল কাশেম,বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: (২৯ বৈশাখ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.৫৮মি.) সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চি ও রামপাশা ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। স্বাধীনতার পর থেকে কাংখিত উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি এই এলাকায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় দুটি ইউনিয়নের গ্রামগুলোর মানুষের মৌলিক চাহিদা, পশ্চাদপদতা, দারিদ্রতা তাদের পিছু ছাড়ছে না। এলাকাবাসী খাজাঞ্চি নদীর ওপর চলাচলের জন্য তৈরি করেছেন দুটি বাঁশের সাঁকো। এই সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন শতশত মানুষ চলাচল করে আসছে। এলাকাবাসীর অর্থায়নে নির্মিত বাঁশের সাকো দুটি মধ্যে একটি সাঁকো ভেঙে যায়। স্থানীয় বাবুনগরে নির্মিত এই বাঁশের সাকো গত মঙ্গলবার গ্রামবাসীর অর্থায়নের ফের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।
জানাযায়, বাবুনগর গ্রামবাসীর অর্থ ও স্বেচ্ছা শ্রমে প্রায় ৪০ মিটার বাঁশের সাকো নির্মানের কাজ করা হচ্ছে। উপজেলার বিলপাড়, দ্বিপবন, বাবুনগর, পাঁচঘরি, দোহাল, পালেরচক, কোনাপাড়া, নোয়াপাড়া, শ্রীপুরসহ ১২ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষের দূভাগ্য খাজাঞ্চি নদী। নদীর এপার ওপারে ১২ গ্রামের মানুষের বসবাস। প্রতিনিয়ত দুটি ইউনিয়নের হাজার-হাজার মানুষ জীবনের ঝুকি নিয়ে নানা উপায়ে পারাপার হয়ে থাকে। দেশ স্বাধীনের ৪৭ বছরের এ এলাকার মানুষের যাতায়াত বাবুনগর গ্রাম ও রাজাগঞ্জ বাজারে খাজাঞ্চি নদের ভোগান্তি লাঘবে কোনো ব্রীজ নির্মাণ করা হয়নি। উপজেলা পর্যায়ে সরকারী কোনো সহায়তা না পাওয়ায় ওই এলাকার মানুষের বাঁশ-কাঠ অর্থ ও স্বেচ্ছা শ্রমে নির্মিত করেন বাঁশের সাঁকো।
প্রবাদ আছে, মড়ার উপর খারার ঘাঁ, খাজাঞ্চি নদের ওপর একটি ব্রীজের অভাবে দুপারের কৃষক তাদের ফসল উৎপাদন, ফসল ঘরে ও হাটবাজারে নিতে চরম ভোগান্তিতে পরতে হয়। সরকারী কোনো সহায়তা না পাওয়ায় ১২ গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে চাদা হারি করে নিজেরা পরিশ্রম করে খাজাঞ্চি নদীর ওপরে দুটি সাঁকো নির্মাণ করছেন। প্রতিবছর সরকার কোটি-কোটি টাকা গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট নির্মাণে বরাদ্দ দিলেও নিদিষ্ট জায়গায় সঠিক বাস্তবায়ন না হওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এলাকাবাসী। তবে এলাকাবাসীর প্রাণের দাবী খাজাঞ্চি নদীর ওপর একটি ব্রীজ নির্মাণ করে হাজার হাজার মানুষের দূভোগ লাঘব করা হউক।
দুটি ইউনিয়নের প্রায় ১২ পল্লী এলাকা হওয়া সেখানে বিভিন্ন উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত রয়েছে এই এলাকার জনসাধারণ। আবার অনেক স্থানে রাস্তার অস্তিত্ব প্রায় বিলীন। খাজাঞ্চি ইউনিয়নের বিলপাড় ও রামপাশা ইউনিয়নের শ্রীপুরে মধ্যখান দিয়ে বয়ে যায় খাজাঞ্চি নদী। ওই নদীর ওপর রয়েছে দুটি বাঁশের সাঁকো ব্রীজ। বর্ষাকালে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের পুহাতে হয় দূর্ভোগ।
এলাকাবাসী জানান, দেশ স্বাধীনের পর থেকে এলাকায় তেমন কোনো উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। ভোটের সময় জনপ্রতিনিধিরা শত ওয়াদা দিলেও তা বাস্তবে মিলছে না। খাজাঞ্চি নদীর ওপর একটি ব্রীজ নির্মাণ করার জন্য সরকারের প্রতি জোরদাবী জানান তারা।
বাবুনগর গ্রামের শংকর বিহারী দাশ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নদীর ওপর ব্রীজ নির্মাণে দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী। কিন্তু এতে কোনো ফল হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী চাঁদা তুলে নদীর ওপর দুটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন।
তিনি বলেন, বাবুনগর গ্রামের বিনোদ বিহারীর বাড়ির সামন থেকে পাচঘড়ি গ্রামের পশ্চিমে শ্রীপুর মাজারের পূর্বে নিজ উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করি। প্রতি বছর সাঁকো মেরামত করতে প্রচুর টাকা খরচ ব্যয় হয়। এতে নিজে ও গ্রামের লোকজন তা বহণ করেন। এই সাঁেকা দিয়ে দুটি বিদ্যালয়ে এলাকার শতশত শিক্ষার্থী যাতায়াত করে থাকেন। সম্প্রতি একটি সাঁকো ভেঙে যায়। তবে গ্রামবাসীর অর্থায়নে ফের সাঁকোটি মেরামত করা হচ্ছে।
খাজাঞ্চি ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার গিয়াস উদ্দিন বলেন, খাজাঞ্চি নদীর ওপর একটি ব্রীজ নির্মিত খুবই দরকার। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।
রামপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলমগীর এলাকার মানুষ বঞ্চিতের কথা স্বীকার করে বলন, এলাকার মানুষ বিভিন্ন উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত রয়েছে। আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নতি করতে।