মঙ্গলবার ● ১৬ মে ২০১৭
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহে জঙ্গি আস্তানা : বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার
ঝিনাইদহে জঙ্গি আস্তানা : বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বেলা ৩.২৮মি.) ঝিনাইদহে ফের জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়া গেছে। এবার সদর উপজেলার চুয়াডাঙ্গা গ্রামে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে দুটি বাড়ি ঘিরে রেখেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ১৬ মে মঙ্গলবার ভোরে থেকে বাড়ি দুটি ঘিরে রাখা হয়ে। ঝিনাইদহ র্যাব-৬-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মুনির আহমেদ সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, জঙ্গিদের লুকিয়ে থাকার খবর পেয়ে মঙ্গলবার ভোরে চুয়াডাঙ্গা গ্রামের ওই দুটি বাড়ি ঘিরে ফেলা হয়। তিনি বলেন, আস্তানা সন্দেহে দুটি বাড়িতে অভিযান শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এ সময় ওই বাড়ির পাশ থেকে একটি ‘আস্তানার’ পাশের বাঁশবাগান থেকে সক্রিয় দুটি সুইসাইডাল ভেস্ট উদ্ধার করা হয়। অভিযানে যাওয়ার পরই জানা যাবে বাড়ির ভেতরে কতজন জঙ্গি আছে।সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে মেজর মনির আরো জানান, নিহত জঙ্গি তুহিনের ভাই সেলিমের বাড়ি এবং তার চাচাতো ভাই প্রান্তর বাড়ি ঘিরে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে খুলনা থেকে আসা র্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট অভিযান শুরু করে। সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে একই কথা জানান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমানও। র্যাব আরো জানায়, চুয়াডাঙ্গা গ্রামে নিহত জঙ্গি তুহিনের ভাই সেলিমের বাড়ি এবং তাঁর চাচাতো ভাই বাড়ি ঘিরে রাখা হয়েছে।
ঝিনাইদহ র্যাবের কমান্ডার মেজর মনির আহমেদ সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, ‘পুলিশ কতগুলো অপারেশন করল, ধরা পড়ল, আগেও ধরা পড়ছিল। ওই জঙ্গি সার্চেরই একটা পর্যায়ে গিয়ে আমরা কয়েক দিন ধরে এখনো এই আশপাশে ঝিনাইদহ শহরের ভেতরে আরো কিছু জঙ্গি আস্তানা, তাদের ডাম্পিং পয়েন্ট রয়েছে। কিছু একটা আছে এ রকম। র্যাব ক্যাম্প থেকে আধা কিলোমিটার দূরেই জঙ্গি আস্তানা দুটির অবস্থান। স্থানীয়রা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, বাড়ি দুটির মালিকের নাম সেলিম ও প্রান্ত। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই। সেলিম হচ্ছে মহেশপুর উপজেলার বজরাপুরে গ্রামের অভিযানে নিহত জঙ্গি তুহিনের ভাই। মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে বাড়ি দুটি ঘিরে ফেলা হয়। বাড়ি দুটিতে জঙ্গি এবং বিপুল পরিমাণ বোম ও বিস্ফোরক থাকতে পারে বলে কোম্পানি কমান্ডার মেজর মনির আহমেদ জানিয়েছেন।
র্যাব-৬ এর অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি খন্দকার রফিকুল ইসলাম সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, কয়েকদিন আগে মহেশপুরে তুহিন নামের এক জঙ্গি নিহত হয়। তার স্বজন ও সহযোগীদের অনুসরণ করছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের কাছে তুহিনের রেখে যাওয়া কিছু বিস্ফোরক থাকতে পারে। এ সন্দেহ থেকে তুহিনের বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়। ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, এর আগে তিন দফা ওই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।
কিন্তু তখন কিছুই পাওয়া যায়নি। গত এক মাসের মধ্যে ঝিনাইদহে এ নিয়ে ৫টি জঙ্গি আস্তানার খোঁজ পেল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত ২০ এপ্রিল সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে আব্দুল্লাহ নামে ধর্মান্তরিত এক ব্যক্তির বাড়ি ঘিরে অভিযান চালায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। দুই দিনের অভিযান শেষে ওই জঙ্গি আস্তানা থেকে ২০টি কেমিকেল কন্টেইনার, ৬টি বোমা, ৩টি সুইসাইড ভেস্ট, ৯টি সুইসাইড বেল্টসহ বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হলেও সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি।
এরপর গত ৫ মে মহেশপুর উপজেলায় এক বাড়িতে পুলিশের অভিযানে নব্য জেএমবির ২ জঙ্গি নিহত হন। আর সদর উপজেলার লেবুতলায় আরেক বাড়িতে পাওয়া যায় ৮টি বোমা ও একটি ৯ এমএম পিস্তল। এর মধ্যেই ২৬ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের আরেক জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়া যায়। ওই অভিযানে ৪ জন নিহত হন, তার মধ্যে ঝিনাইদহের সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে আব্দুল্লাহ নামে জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে জানাগেছে। প্রসঙ্গত, ৭ মে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় বজরাপুর এলাকায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওই অভিযানে দুই জঙ্গি নিহত হয়। এদেরই একজন তুহিন। একইদিন বজরাপুরের পাশাপাশি সদর উপজেলার লেবুতলায়ও একটি পরিত্যক্ত জঙ্গি আস্তানা থেকে কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়।