মঙ্গলবার ● ১৬ মে ২০১৭
প্রথম পাতা » জাতীয় » প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে হাওরাঞ্চলে ব্যাপক প্রস্তুতি
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে হাওরাঞ্চলে ব্যাপক প্রস্তুতি
ময়মনসিংহ অফিস :: (২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বেলা ৩.৩৪মি.) নেত্রকোনা জেলার দশটি উপজেলার সবচেয়ে অবহেলিত চারদিকে পানি বেষ্টিত হাওর দ্বীপ উপজেলা খালিয়াজুরী। দেখতে দ্বীপের মত এ উপজেলাটি বাইরে থেকে অপরিচিত যে কেউ দেখলে প্রথমে দ্বীপ বলতে বাধ্য। এ অঞ্চলের মানুষজন বছরে তাদের একমাত্র ফসল বোরো ধানের উপর নির্ভরশীল।
এই বছর আগাম পানি চলে আসায় হাওরের একমাত্র বোরো ফসল তলিয়ে গেছে। ফলে এ অঞ্চলের কৃষকরা চোখে মূখে অন্ধকার দেখছেন, হয়ে পড়েছেন দিশেহারা । একমাত্র ফসল তলিয়ে যাওয়ায় একেবারে নিঃস্ব এ উপজেলার ধনী-গরীব সকল শ্রেণি পেশার মানুষ।
আর এ দূঃসময়ে এলাকার মানুষের জীবন সংগ্রাম নিজ চোখে দেখার জন্যই আগামী ১৮ মে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল খালিয়াজুরী উপজেলা পরিদর্শনে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সরেজমিনে হাওরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, এই প্রথম প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে ক্ষতিগ্রস্থ হাওরবাসীর মনে নতুন করে আশার সৃষ্টি হয়েছে। সাজসাজ রব আর সর্বত্রই চলছে ধোয়ামুছাসহ নানা প্রস্তুতি। ফলে হাওর এলাকার ক্ষত্রিগ্রস্থ অসহায় বেশ কিছু মানুষের কয়েক দিনের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে বাড়তি এ সুযোগ হলেও তা অপ্রতুল বলে দাবি শ্রমিকদের।
প্রশাসনের সকল সেক্টরের বড়বড় কর্মকর্তারা কাজে বেশ মনোযোগি হয়েছেন। মেরামতসহ ধুয়ে মুছে রং করে জেলা পরিষদ ডাকবাংলোকেও সাজানো হচ্ছে সতুন রূপে। সেই সাথে হেলিপ্যাড, নামার জায়গা তৈরিসহ জনসভাস্থল এমন কি আশে পাশের এলাকাতেও চলেছে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ। যা দেখে অনেকেই মনে করছেন এমন বড় বড় মানুষেরা যদি কিছুদিন পরপরই আসতেন। তাহলে অন্তত তাদের কষ্টের চেহারা একদিন পাল্টে যেতো সত্যি সত্যিই।
এ ব্যাপারে এলজিইডি’র খালিয়াজুরী উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুল মান্নান খান বলেন, মোট ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৪৭ জন নারী এখানে কাজ করছে। তারা বাড়তি পাচ্ছে দৈনিক ১৫০ করে। তারা সবাই আর ই আর এমপি প্রকল্পের মহিলা। প্রতি মাসে তারা একটা ভাতা পায়।
খালিয়াজুরী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শামছুজ্জামন শোয়েব বলেন, প্রধানমন্ত্রী এই এলাকা নিজ চোখে দেখে এই জনপদের ক্ষতিগ্রস্থদের আগামী ফসল উঠা পর্যন্ত ত্রাণ সহয়তা, ঋণ মওকুফ, স্থায়ী বাঁধ বন্দোবস্থ করে যাবেন বলে আমি আশাবাদী। পাশাপাশি আরো ত্রাণ বাড়িয়ে দেবেন এমন আশাও করতে পারি।
জেলার সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল গণি বলেন, তারা এলাকার স্বাস্থ্য সেবা সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটি বিশেষ কেবিনেরও ব্যবস্থা রয়েছে। নৌ-এম্বুলেন্স ব্যবস্থা করা হয়েছে। এলাকায় মাইকিং চলছে। পানি বাহিত কোন রোগ আছে কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে জেলা প্রশাসক ড. মুশফিকুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ গত পহেলা এপ্রিল বাঁধ ভেঙে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল মদন-মোহনগঞ্জ খালিয়াজুরীর ৭০ হাজার হেক্টর জমির কাঁচা-পাকা ধান পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে হাওরপাড়ের প্রয় ১ লাখ ৮৬ হাজার কৃষক চরম ভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। কিন্তু সরকারি কার্ড বরাদ্দ হয়েছে মাত্র ৫০ হাজার জনের নামে যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।