বৃহস্পতিবার ● ১৮ মে ২০১৭
প্রথম পাতা » জাতীয় » আবারো ফসল না উঠা পর্যন্ত খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে : প্রধানমন্ত্রী
আবারো ফসল না উঠা পর্যন্ত খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে : প্রধানমন্ত্রী
ময়মনসিংহ অফিস :: (৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.১৪মি) আগাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যতদিন পর্যন্ত কৃষকের ঘরে ফসল না উঠবে ততদিন সরকার খাদ্য সহায়তা দেবে এমন আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হাওরের ফসল রক্ষা করতে নদী খনন করা হবে। নদীভাঙা মানুষকে ঘর নির্মাণসহ হাওরাঞ্চলে আবাসিক স্কুল করে দেয়া হবে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি নিজের চোখে আপনাদের দেখতে এসেছি। আপনারা হাওরের মানুষ, আমরা গোপালগঞ্জের বাওরের মানুষ। বন্যায় যেন আপনারা ক্ষতিগ্রস্থ না হন, তার ব্যবস্থা করা হবে।’
১৮ মে বৃহস্পতিবার দুপুরে নেত্রকোনোর খালিয়াজুড়ি ডিগ্রি কলেজ মাঠে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, আমরা জনগণের সেবা করতে এসেছি। আমি চাই আপনাদের জীবন মানের উন্নয়ন করতে।
তিনি আরও বলেন, এই এলাকার বাবরকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বানিয়ে খালেদা জিয়া বান্দরের হাতে লাঠি তুলে দিয়েছিল।এই এলাকার ১২জনকে হত্যা করেছিল।
এসময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি শুধু ঢাকায় বসে কথা বলে, মির্জা ফখরুল এসেছিলেন ফটোসেশন করে চলে গেছেন। খালেদা জিয়াও এখানে আসেননি। ত্রাণ দেননি।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পানি সম্পদ মন্ত্রী আমিনুল ইসলাম, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, দূযোগ ও ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌদুরী মায়া, স্থানীয় সংসদ সদস্য রেবেকা মমিন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, বিভাগীয় কমিশনার জিএম সালেহ উদ্দিন, রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুলল্লাহ আল মামুন, জেলা প্রশাসক ড. মো. মুশফিকুর রহমান, পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মতিউর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক আশরাফ আলী খান খসরু ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার রায় প্রমুখ।
তার আগে আগাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হাওরাঞ্চল পরিদর্শন করতে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৪৯মিনিটের দিকে জেলার খালিয়াজুরী ডিগ্রী কলেজ মাঠসংলগ্ন নির্মিত হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি।
সেখানে সকাল ১০টায় হাওরাঞ্চলের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ও দু:স্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। ত্রাণ বিতরণ শেষে ক্ষতিগ্রস্থ হাওর এলাকা পরিদর্শন করেন।
প্রধানমন্ত্রী নেত্রকোনা সফরকালে খালিয়াজুরী উপজেলায় ১ হাজার ৫০০ ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের মাঝে ৩০ কেজি করে চাল ও নগদ ১ হাজার টাকা করে অর্থসহায়তা দেয়া হয়।
পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢল ও বৃষ্টির পানিতে গত মাসের শুরুর দিকে প্লাবিত হয় নেত্রকোনা,সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জের অনেক হাওরের বাঁধ। এর ফলে এসব হাওরের লক্ষাধিক হেক্টর জমির বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে যায়। এর মধ্যে নেত্রকোনার মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরী উপজেলায় ধান, মাছ পানির নিচে তলিয়ে যায়। ফলে মহাবিপদে পড়েন এই এলাকার হাওরের কৃষকরা। তাদের দু:খ দুর্দশা দেখতে আজ নেত্রকোনা যান প্রধানমন্ত্রী।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মো. মুশফিকুর রহমান জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলনায়তনে নেত্রকোনা জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সুধীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং এক জনসভায় মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী। দুপুরেই প্রধানমন্ত্রী ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে খালিয়াজুরী উপজেলা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছিল।
জেলা পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিথিকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে মাঠে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েত করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় এসএসএফ, র্যাব, বিজিবি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং আনসার সদস্যরা মাঠে ছিল।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চল পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরে তিনি বন্যায় দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন।