শনিবার ● ২৭ মে ২০১৭
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » ‘ধার’ করা জনবল দিয়ে ঈদে যাত্রীর নিরাপত্তা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম রেল পুলিশ
‘ধার’ করা জনবল দিয়ে ঈদে যাত্রীর নিরাপত্তা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম রেল পুলিশ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :: (১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ২.৫৪মি.) ‘ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার’- এ অবস্থা চলছে বাংলাদেশ রেলওয়ে পুলিশে। এবছরও ‘ধার’ করে জনবল নিয়ে ঈদে ঘরে ফেরা রেলওয়ে পূবাঞ্চলের যাত্রীদের নিরাপত্তা দেবে রেলপুলিশ।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে ১২টি থানা ও ১৬টি ফাঁড়ি রয়েছে। যার জন্য রয়েছে ১২৩০ জন্য পুলিশ সদস্য(অফিসার ও কনেষ্টবল)।
এদের সহযোগিতার আনা হচ্ছে ৩২০ জন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্য ও ৫২০ জন ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যকে।
এরা দায়িত্ব পালন করবে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের রেলস্টেশনগুলোতে। স্টেশনের পাশাপাশি দায়িত্বপালন করবে নৈশকালীন একপ্রেস ট্রেনগুলোতে।
রেলওয়ে পুলিশ সূত্র জানায়, ব্রিটিশ শাসনকালে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে প্রথম রেললাইন চালু হয়েছিল ১৮৬২ সালে। প্রতিষ্ঠার পর ধীরে ধীরে এর বিস্তৃতি ঘটানো হয়। বিস্তৃতির সাথে সাথে চুরি-ডাকাতি সহ বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি দেখা দেয়। এজন্য প্রথমে আধাসামরিক বাহিনী গঠন করা হয় এবং পরে রেল পুলিশ প্রতিষ্ঠা করা হয়। পাকিস্তান সৃষ্টির পর পুরো রেলওয়ে পুলিশকে একটি রেঞ্জের আওতাভুক্ত করা হয়। বাংলাদেশ সৃষ্টির পর রেল পুলিশে মৌলিক কোন পরিবর্তন আনা হয়নি। তবে রেল সদর দফতর চট্টগ্রামে সরিয়ে নেয়া হয়। বর্তমানে রেল পুলিশের দুটি জোন রয়েছে, চট্টগ্রাম এবং সৈয়দপুর জোন। এ দুটি জোনে দু’জন পুলিশ সুপার পুলিশ প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন। আর ১১৯ কিলোমিটার পথের জন্য একটি থানা।
যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যত নিরাপত্তারক্ষী দরকার, তা রেল পুলিশের হাতে নেই। নেই আধুনিক সরঞ্জাম। তাদের দাবি, কমপক্ষে ১০ হাজার সদস্য হলে রেলওয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
তবে নানাবিধ সমস্যা থাকলেও তারা যাত্রীদের পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে পারবেন কিনা ?
অপরদিকে রেলের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) রয়েছে। তাদের সংখ্যা সারাদেশে প্রায় ২ হাজার। আরএনবি সদস্যরা ট্রেনে কোনো ডিউটি করে না। তারা রেলের গুদাম ও রেলের নিজস্ব স্থাপনার নিরাপত্তায় কাজ করে। তাদের অনেকে টিকিট কালোবাজারীর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে।
তবে এই বিষয়ে আরএনবির কোন অফিসার মূখ খুলেন না। চট্টগ্রাম রেল ষ্টেশন এলাকায় আরএনবির ১৩১ জন সদস্য কর্মরত । তাদের মধ্যে অনেকে এই কালোবাজারীর সাথে যুক্ত আছেন বলে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ রয়েছে। গুরুতর ভাবে টিকিট কালোবাজারী সহ বিভিন্ন অভিযোগ থাকলেও পোস্টিং হাবিলদার শাহীন মৃধা ও হাবিলদার ইউসুফ আলী চট্টগ্রাম জেলায় প্রায় ১ যুগের অধিক সময় ধরে কর্মরত। তাদের কে চট্টগ্রাম জেলার বাহিরে বদলী করার বিষয়ে কারো কোন মাথা ব্যাথা নেয়। কারন তাদের রয়েছে তেলে মাথায় তেল দেওয়ার বিশেষ প্রযুক্তিগত কৌশল।
তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, চট্টগ্রাম রেল ষ্টেশন ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে জেলা থেকে টিকিট কালোবাজারীর অভিযুক্ত রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বদলী করা না গেলে এবারের ঈদে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারীর হাত থেকে যাত্রী সাধারণকে মুক্তি দেওয়া সম্ভব না।
আর রেলওয়ে পুলিশ ট্রেনের চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই প্রতিরোধে কাজ করে। এছাড়া লাশ উদ্ধার ও রেলযাত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে। ফলে অপরাধ দমন, মামলা তদন্তের পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক রেলযাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। প্রতি থানায় প্রয়োজনের তুলনায় খুব কম সংখ্যক এসআই রয়েছে। ফলে থানাগুলোতে তদন্তের অভাবে ঝুলে আছে অনেক মামলা।