মঙ্গলবার ● ১১ জুলাই ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে, ইন্দোনেশিয়ায় বন্দি : ঝিনাইদহে মানব পাচারের ছোবলে আক্রান্ত তিন পরিবার
মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে, ইন্দোনেশিয়ায় বন্দি : ঝিনাইদহে মানব পাচারের ছোবলে আক্রান্ত তিন পরিবার
জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (২৭ আষাঢ় ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.১৭মি.) ঝিনাইদহের চন্ডিপুরে মানবপাচারের ভয়ংকর ছোবলে তিনটি পরিবার। প্রভাবশালী দালালের বাড়িতে বারংবার তাগাদা দেওয়া সত্বেও মুক্তি নেই এ তিনটি পরিবারের। জানাগেছে, ঝিনাইদহের গান্না ইউনিয়নের চন্ডিপুরের প্রভাবশালী আলোচিত মানব পাচারকারী দালাল আব্দুস ছাত্তারের ছেলে সিরাজের মাধ্যমে একই গ্রামের নজরুল হুজুরের ছেলে আলামিন ৩,৫০,০০০/-(তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকা, কুতুব মীরের ছেলে বাবু ৩,৬০,০০০/-(তিন লাখ ষাট হাজার) টাকা ও আবু তাহেরের ছেলে কামাল ৩,৭৫,০০০/-(তিন লাখ পচাঁত্তর হাজার) টাকা দিয়ে প্রতিমাসে ৫০,০০০/(পঞ্চাশ হাজার) টাকা বেতনে মালএশিয়া চাকুরিতে যাবে মর্মে চুক্তিতে গত মাসের ৩রা জুনে রওয়ানা হয়।
বেশ কিছুদিন ছেলেদের খোঁজ খবর না পেয়ে দালাল সিরাজের বাড়িতে উক্ত পরিবার গুলো ধর্না দেয়া শুরু করে। একপর্যায়ে দালাল সিরাজ ইন্দনেশিয়ায় আটকে রেখে তাদের বাড়িতে ফোন করার ব্যাবস্থা করে। ছেলেরা মোবাইল ফোনে বাড়িতে জানায়, তারা ইন্দোনেশিয়ায় একটি বদ্ধ ঘরে আটকা আছে। তাদের খাওয়া দাওয়া প্রাই বন্ধ বলে জানান উক্ত তিন পরিবারের অভিভাবকগন। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, আটকা ছেলেরা ১৫/২০ দিন প্রায় না খাওয়া অবস্থায় আছে, তাদের দেখার কেউই নেই। ২/৩দিন পর পর সামান্য কিছু খাবার দালালে জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেলে পালিয়ে যায়। এখন বন্ধ ঘরে মৃত্যুর প্রহর গুনছে আলামিন, বাবু ও কামাল বলে জানিয়েছেন অভিভাবক নজরুল, কুতুবমীর ও আবু তাহের। কেঁদে কেঁদে চোখের জল শুকিয়ে গিয়েছে ভুক্তভুগি তিনটি পরিবারের। দেখার যেন কেউই নেই।
ভুক্তভুগি নজরুল, কুতুবমীর ও কামালের পিতা আবু তাহের ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে কেঁদে সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, তার ছেলে বেশ কিছুদিন ইন্দোনেশিয়ায় উপোশ থেকে মৃত্যুর প্রহর গুনছে এবং মোবাইল ফোনে বলছে ভিটেবাড়ি বেঁচে হলেও আমাকে এখান থেকে উদ্ধার করো। নইলে আমি ২/৩দিনের মধ্যেই মারা যাব। নজরুল, কুতুব মীর ও আবু তাহের সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে মাধ্যমে তাদের ছেলেদেরকে ফিরিয়ে পেতে ও দালাল সিরাজ ও তার সহযোগিদের উপযুক্ত শাস্তি দাবী করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনা কাছে।
এদিকে, চন্ডিপুর বাজারের জৈনিক স্কুলের ছাত্র, মশিয়ার, বিল্লাল ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামবাসী, স্থানীয়রা, চা দোকানের মালিক জানান, তাদের চুক্তি অনুযায়ি মালএশিয়া না নিয়ে কেন ইন্দনেশিয়া নিয়ে বন্ধ ঘরে আটকে রেখেছে ? চুক্তি অনুযায়ি সমস্ত টাকা পরিশোধ করার পরেও কেন তাদের মালএশিয়া নিয়ে যাবার কথা বলে ইন্দোনেশিয়া নিয়ে আটকে রাখছে ? কি অপরাধ তাদের অপরাধ ? তাছাড়া সিরাজ দালালের কমিশন খাওয়া কিছু প্রভাবশালী স্থানীয় নেতা ও মাস্তানদের জন্য কেউই কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না। একই গ্রামের সদ্য শিশু নির্যাতন মামলায় জামিনে থাকা মীর কামরুল সাংবাদিকদের শিতল হুমকির মাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশ না করার জন্য বিশেষ ভাবে পরামর্শ দিয়েছেন। এঘটনায় দালাল সিরাজের বাসায় গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশিরা বলছে সে ঢাকায় আছে। তার মোবাইল (০১৭২৬-২৭৮০৭৫) বন্ধ রাখার কারণে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।