বৃহস্পতিবার ● ১৯ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » অপরাধ » গাজীপুরে প্রতারক লুত্ফুল হায়দার তুহিন গ্রেফতার
গাজীপুরে প্রতারক লুত্ফুল হায়দার তুহিন গ্রেফতার
মুহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, গাজীপুর প্রতিনিধি :: গাজীপুর শহরের মাধববাড়ি এলাকা থেকে ১৮ নভেম্বর বুধবার ভোর রাত ৪.২০মিনিটে প্রতারক লুত্ফুল হায়দার তুহিনকে আটক করেছে জয়দেপুর থানা পুলিশ ৷
আটক লুত্ফুল হায়দার তুহিন গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার কাউরাইদ গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলাম ও জাহানারা ইসলামের ছেলে ৷
জয়দেপুর থানা পুলিশের এস.আই আকবর হোসেনের নের্তৃত্বে তাকে আটক করা হয় ৷
মাধববাড়ি মোড়ের একটি বাসায় পাওনাদারদের ভয়ে সে নিজেকে আত্নগোপন করে রাখে ৷ সে তার স্ত্রী শাহিদা বেগমকে নিয়ে আনুমানিক ৫মাস যাবত্ ১২৫/সি বাসাটিতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছে ৷
মামলা সূত্র আমাদের গাজীপুর জেলা প্রতিনিধিকে জানায়, তার বিরুদ্ধে চেক প্রতারণার চারটি মামলা রয়েছে ৷ উক্ত চারটি মামলাই গাজীপুরে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এর ২নং আদালতে করা হয় ৷ আদালত হস্তান্তর যোগ্য দলিল আইন ১৮৮১ (এন আইন এ্যাক্ট) এর ১৩৮ ধারা দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ৷
আদালতে মামলা দায়েরের পর বার বার তার কাছে উকিল নোটিশ পাঠিয়ে কোন সাড়া মেলেনি ৷
একাধিক সূত্র আমাদের গাজীপুর জেলা প্রতিনিধিকে জানায়, প্রতারক তুহিন আদম (বিদেশে লোক পাঠানোর) ব্যবসার সাথে জড়িত ৷ এবং ব্যবসার নাম করে গাজীপুর জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সে প্রায় ১ কোটি টাকা আত্নসাত্ করে গাজীপুর থেকে অন্য স্থানে পালিয়ে যায় ৷
তার মাধ্যমে বিদেশ যাবে বলে অসংখ্য লোক প্রতারণার শিকার হয়েছে এবং জায়গা-জমি, গরু, গাড়ি, বসত-বাড়ি, স্বর্ণ অলংকার সহ অসংখ্য মূল্যবান জিনিস বিক্রি করে টাকা দিয়ে আজ সর্বহারা ৷
আসামী তুহিন পেশায় একজন আদম ব্যবসায়ী হলেও ব্যবসার নামে প্রতারণা বিশ্বাস ভঙ্গ ও বেআইনী কর্মকান্ডে জড়িত ও আইন অমান্যকারী ব্যক্তি ৷
প্রতারক তুহিন বিদেশ পাঠানোর নাম করে যাদের কাছ থেকে টাকা আত্নসাত্ করেছে৷ তারা হলেন ফজুল মিয়া (পাড়াগাঁও) ১০ লক্ষ, মাহফুজ শিকদার (গাজীপুর) ৪ লক্ষ ৫০ হাজার, শফিকুল (প্রহ্লাদপুর) ৪ লক্ষ, জসিম উদ্দিন (প্রহ্লাদপুর) ৪ লক্ষ, শাজাহান (প্রহ্লাদপুর) ৩ লক্ষ, মাইন উদ্দিন (প্রহ্লাদপুর) ৩ লক্ষ, আশরাফুল (দালান বাজার) ৪ লক্ষ, ইসমাইল হোসেন (ফুলদী) ৩ লক্ষ, জামাল উদ্দিন (কালীগঞ্জ) ১ লক্ষ ৫০ হাজার, আজমির হোসেন (বেরুয়া) ১ লক্ষ ৫০ হাজার, রহিম মিয়া (ফুলদী) ২ লক্ষ, আফসার (ফুলদী) ২ লক্ষ, হাশেম ৪ লক্ষ, চান মিয়া (কাপাইস) ৪ লক্ষ, আমির হোসেন (জাঙ্গালিয়া) ২ লক্ষ, আবু বক্কর সিদ্দিক (গাজীপুর) ৩ লক্ষ, চান মিয়া (আজমতপুর) ৩ লক্ষ, আব্দুল জাব্বার (কালীগঞ্জ) ২০ হাজার, আল আমিন চৌধুরী (জিন্দা) ৫০ হাজার, খোরশেদ আলম (কালীগঞ্জ) ২৫ হাজার, ওসমান কাজী (কালীগঞ্জ) ২০ হাজার, সুমন কাজী (কালীগঞ্জ) ২০ হাজার, রিপন কাজী (কালীগঞ্জ) ৫০ হাজার, নাদিম সরকার (ফুলদী) ২ লক্ষ, শামীম (আজমতপুর) ২ লক্ষ, রাসেল মিয়া (বেরুয়া) ২০ হাজার, কাপাসিয়ার মাইন উদ্দিন ২৫ লক্ষ টাকা ৷
মামলার বাদী ফজুল হক ও তার ছোট ভাই আনিসুর রহমান আমাদের গাজীপুর জেলা প্রতিনিধিকে জানান, প্রতারক তুহিনকে টাকা দিয়ে আজ আমাদের অবস্থা ভয়াবহ ৷ আমরা তার কাছে পাওনা টাকা দাবি করলে সে বিভিন্ন ভাবে আমাদেরকে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে ৷ তারা আরও বলেন আমাদের পাওনা টাকা কোন ভাবেই না পেয়ে আইনের আশ্রয় নেই, এবং আদালতে মামলা দায়ের করি ৷ আজ ১৮ নভেম্বর বুধবার রাত ৪.২০মিনিটে আমাদের সহযোগীতায় তাকে পুলিশ আটক করে জয়দেপুর থানায় নিয়ে যায় ৷
মামলার প্রথম সাক্ষী মাহফুজ শিকদার আমাদের গাজীপুর জেলা প্রতিনিধিকে জানান, আমার পাওনা টাকা প্রতারক তুহিনের কাছে দাবি করলে সে নানা তালবাহানা করে, এবং আমাকে সে একাদিকবার প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে ৷