সোমবার ● ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » প্রেম করে বিয়ে : স্বজনদের হামলায় গ্রাম ছাড়া পরিবার
প্রেম করে বিয়ে : স্বজনদের হামলায় গ্রাম ছাড়া পরিবার
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :: (২৭ ভাদ্র ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.০৪মি.) প্রেম করে বিয়ে করায় এক পরিবারকে মারপিট ও বসতবাড়ী ভাংচুর ও লুটপাট করে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, বউকে দিয়ে জোরপুর্বক ডিভোর্স দিয়ে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার পায়তারা করছে। এ অবস্থায় গ্রামছাড়া হয়ে পরিবারটি অন্য গ্রামে গিয়ে মানবেতরজীবন করছে। ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বড়পাঙ্গাসী ইউনিয়নের হাওড়া গ্রামে। অন্যদিকে এলাকার মাতব্বরদের বিষয়টি মিমাংসা করে দেয়ার আশ্বাস দেয়ায় মামলা করতে সাহস পাচ্ছে না পরিবারটি।
স্থানীয়রা জানান, হাওড়া গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে আল-আমিনের সাথে একই গ্রামের আব্দুস সোবহামেনর মেয়ে সুমাইয়া খাতুনের সাথে ১২বছর প্রেমের সম্পর্ক চলাবস্থায় ২০১৫ সালের ৫ মে ঢাকা আদালতের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। কিন্তু চাকুরী না হওয়ায় দুজনেই বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখে। এ অবস্থায় সুমাইয়ার বাবা সিরাজগঞ্জ শহরের তেলকুপি গ্রামের সাবেক এক চেয়ারম্যানের ছেলে দুবাই প্রবাসীর সাথে বিয়ে ঠিক করায় আল-আমিন বিয়ের বিষয়টি ফাঁস করে দেয়। বিয়ের কথা শুনেই সুমাইয়ার বাবা সোবহান, ভাই এনামুল, এমদাদুল, সালাহ উদ্দিন, আমজাদ ও লিটনসহ সুমাইয়ার স্বজনরা আল-আমিন ও তার পরিবারকে মারপিট এবং বসতবাড়ী ভাংচুর-লুটপাট করে গ্রাম থেকে বের করে দেয়। এছাড়াও সুমাইয়াকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ডিভোর্স করিয়ে অন্যত্র বিয়ে দেবার জন্য দিনতারিখ নির্ধারন করে।
আল-আমিন জানান, আমরা দুজনে কোর্টে বিয়ে করে প্রায় আড়াই বছর গোপনে সংসার করেছি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেরিয়েছে। আমাদের স্মৃতির অনেক ছবি রয়েছে। চাকুরী না হওয়ায় জমি বিক্রি করে বউকে শাড়ী-গহনাসহ সবকিছু কিনে দিয়েছি। কিন্তু সুমাইয়ার বাবা-ভাই সুমাইয়াকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার চেষ্টায় করায় বিয়ের বিষয়টি ফাঁস করা হয়। এ কারণে তারা আমাকেসহ আমার পরিবারের সকলকেই মারপিট ও ঘরবাড়ী লুট করে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি। মাতব্বরা মামলা করতে নিষেধ করায় মামলা করতেও পারছি না। বর্তমানে আমরা গ্রাম ছেড়ে অন্য বাড়ীতে আশ্রয় নিয়ে রয়েছি। তারপরেও সুমাইয়ার স্বজনরা বিভিন্নভাবে মোবাইলে হুমকি প্রদান করছে।
আল-আমিনের বাবা রেজাউল করিম জানান, আমাদের মারপিট করে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়ার পর মাতব্বরা বিষয়টি মিমাংসা করে দিবে বলে মামলা করতে নিষেধ করে। এ জন্য মামলা করা হয়নি। কিন্তু একমাস পেরিয়ে গেলেও মাতব্বরা শুধু আশ্বাসই দিচ্ছে।
এলাকার মাতব্বর হাজী আবুল হোসেন, আমজাদ হোসেন, শাহআলম ও বেলাল হোসেন জানান, ঘটনাটি শোনার পর থেকে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করছি। কিন্তু কোন পক্ষই এগিয়ে না আসায় মিমাংসা করা সম্ভব হচ্ছে না।
তবে সুমাইয়ার ভাই এনামুল তার বোনের সাথে আল-আমিনের সম্পর্ক-বিয়ে ও তাদের বসতবাড়ী ভাংচুরের বিষয় অস্বীকার করে বলেন, গ্রামের লোকজন তাদের বসতবাড়ী ভাংচুর করেছে। আমরা এর সাথে জড়িত না।