সোমবার ● ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » অপরাধ » ধর্ষনের বিচার হয়নি দুই বছরেও
ধর্ষনের বিচার হয়নি দুই বছরেও
হাসান মাহমুদ, আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি:: ২১ সেপ্টেম্বর : বান্দরবানের আলীকদমে ধর্ষিত স্কুল ছাত্রীকে আইনি ও মানবিক সাহায্যার্থে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে গ্রীন হিল শিখা প্রকল্প৷ গতকাল রবিবার বিকেলে গ্রীন হিল শিখা প্রকল্পের আলীকদম উপজেলা কার্যালয়ে ধর্ষিতার পক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ৷ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন গ্রীন হিলের ‘শিখা’ প্রকল্প ব্যবস্থাপক এডভোকেট আহমেদ তাসনিম আলম ৷ এ সময় ধর্ষিতার মা, ধর্ষিতা তার সন্তানসহ উপস্থিত ছিলেন ৷
লিখিত বক্তব্যে এ্যাডভোকেট তাসমিন বলেন, আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়া বশির সর্দার পাড়ার মৃত আহামদ হোসেনের সহায় সম্বলহীন দনিমমুজুর স্ত্রী ছিরলোক বেগম (৪২) তার মৃত ভাই আনোয়ার হোসেন এর ছেলে শামসুল আলম (৩৫) এর বাড়িতে তার ১৪ বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে আশ্রিতা হিসেবে বসবাস করতেন ৷ গত ২০১৩ সালের ডিসেম্বর হইতে লম্পট গৃহ কর্তা শামসুল আলম নান প্রলোভন দেখিয়ে ছিরলোক বেগমের ৫ম শ্রেণীতে পড়ুয়া কিশোরীকে কায়েকদফা ধর্ষন করে ৷ এতে ধর্ষিতা কিশোরী অন্তঃস্বত্বা হয়ে পড়ে ৷ অন্তঃস্বত্বা হওয়ার চার মাস পর বিষয়টি জানাজানি হলে লম্পট ধর্ষক শামসুল আলম মা মেয়েকে ঘর থেকে বের করে দেয় ৷
বক্তব্যে আরো বলা হয়, দিনমজুর ছিরলোক বেগমের একই গ্রামে একটি বসত ভিটা ছিল ৷ লম্পট শামশুল আলম বিধবা ছিরলোক বেগমকে প্রলোভন দিয়ে তার বসতভিটাটি ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করায় ৷ বসত ভিটা বিক্রিলব্ধ ১৫ হাজার টাকা শামশুল হাতিয়ে নেয় ৷ বাড়ি ভিটা হারা ছিরলোক বেগম ও তার স্কুলপড়ুয়া মেয়ের অসহায়ত্বের সুযোগে শামশুল আলম মা-মেয়েকে তার বাড়িতেই রাখে ৷ ছাত্রীর দিনমজুর মা কাজের সন্ধানে বাইরে গেলে লম্পট শামশুল আলম সুযোগ নিয়ে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে কয়েকদফা ধর্ষণ করে ৷
সংবাদ সম্মেলনের ধর্ষিতা মা জানান, ‘শামশুল আলম আমার ভাতিজা ৷ সে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে ৷ গতবছরের ২৫ আগস্টে আমার মেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি ছেলে সন্তাননের জন্ম দেয় ৷’
এডভোটেক আহমেদ তাসনিম আলম আরো জানান, এ ঘটনায় আলীকদম থানায় মামলা নং- ৮, তারিখ- ২৫/০৪/২০১৪ ইং রুজু হয় ৷ পরে পুলিশ বিজ্ঞ আদালতে চার্জশীটও প্রদান করেন ৷ এ পর্যন্ত অভিযুক্ত আসামী গ্রেফতার হয়নি ৷ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ধর্ষণের পর ছাত্রীটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে ধর্ষক শামশুল আলম মা-মেয়েকে তার ঘর থেকে বের করে দেয় ৷ পরে জনৈক ব্যক্তি গোয়াল ঘরে মা-মেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করতে বাধ্য হয় ৷ তাদের থাকার জন্য কোন নিজস্ব ঘর নেই ৷ বর্তমানে তারা নয়াপাড়া গ্রামের দিনমজুর রফিকুল ইসলামের বাড়িতে আশ্রিতা হিসেবে আছেন ৷ অন্তঃস্বত্ত্বা ও সন্তান প্রসবের পর স্কুল ছাত্রীটির পড়ালেখারও ইতি ঘটেছে ৷ মা-মেয়ে ও নবজাতক সন্তানের খোরপোষ ও দেখভাল করার উপযুক্ত কোন অভিভাবক নেই এ পরিবারটির ৷ মামলা হলেও পরবর্তী আইনি কার্যক্রম চালাতে তারা অক্ষম৷
এ অবস্থায় গ্রীন হিল-শিখা প্রকল্প স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অবহেলিত ও আইনি সেবা বঞ্চিত এ স্কুলছাত্রীটিকে সহায়তার হাত বাড়াতে আহ্বান জানান ৷ এছাড়াও আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে সমন্ময় করে সরকারী আশ্রায়ন প্রকল্প হতে একটি প্লট বরাদ্ধ নিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন ৷
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘গ্রীন হিল-শিখা প্রকল্প সমাজের হত-দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা প্রদান, প্রথাগত ও প্রাতিষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করে যাচ্ছে ৷
অাপলোড :২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫: বাংলাদেশ : সময় : সন্ধ্যা ৭.৫০ মিঃ