মঙ্গলবার ● ১০ অক্টোবর ২০১৭
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » বগুড়ায় আউশ ধানের বাম্পার ফলন : খুশি কৃষক : চলছে নবান্ন উৎসব
বগুড়ায় আউশ ধানের বাম্পার ফলন : খুশি কৃষক : চলছে নবান্ন উৎসব
বগুড়া প্রতিনিধি :: (২৫ আশ্বিন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩.৫৮মি.) বগুড়া জেলা’সহ গাবতলী উপজেলায় পুরোদমে শুরু হয়েছে আপদকালিন বর্ষালী আউশধান কাটা-মাড়াই। ফলন ভাল হওয়ায় খুশি কৃষক পরিবার। ফলে কৃষকের ঘরে চলছে নবান্ন উৎসব।
জানাযায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নসহ পৌরসভা’য় আউশধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয় ৪শ হেক্টর জমিতে। ইতিমধ্যে অর্জিত ও উৎপাদন হয়েছে ৪শ ৫০হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয় ১হাজার ৯২মেট্রিক টন (চাল)। যা গতবছরের চেয়ে ১শত হেক্টর বেশি জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ আশা করছেন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। এছাড়াও গাবতলী ইছামতি নদীতে জেগে উঠা জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে। তবে দিনমজুর সংকট হওয়ায় তাদের মজুরী বেড়েছে। তবুও কৃষকরা পুরোদমে আউশ ধান কর্তন করছে।
এ দিকে কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগিতায় আউশ ধান চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরন বিষয়ক আলোচনা সভা ও মাঠ দিবস পালন করা হয়েছে। এতে বক্তব্য রাখেন গাবতলী উপজেলা কৃষি অফিসার আঃ জাঃ মুঃ আহসান শহীদ সরকার।
এবছরে নেপালতলীতে আউশ ধান চাষ বেশী করা হয়েছে।
এছাড়াও কৃষক মাঠ স্কুল ও কৃষকদের নিয়ে আউশধান চাষ বিষয়ক উঠান বৈঠকসহ কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মশালা করা হয়। ফলে উপজেলার গ্রামাঞ্চলে আউশধান সংগ্রহে কৃষক-কৃষানিরা এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। দিনমজুর সংকটসহ মূল্যেবৃদ্ধি পেলেও কৃষক পরিবারগুলো এখন দম ফেলানোর সময় নেই। কৃষকের আঙ্গিনা জুড়ে এখন মৌ-মৌ গন্ধে মুখরিত। নবান্ন উৎসবে মেতে উঠেছে কৃষক পরিবার। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখাগেছে, এখন কৃষকরা আউশধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। কাগইলের কৈঢোপ গ্রামের কৃষক মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, এ বছরে পরিবেশ অনুকুল ও ধান ক্ষেতে পোকা মাকড়ের আক্রমন কম থাকায় আগামজাতের বর্ষালী ধানের ভাল ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে আউশধান চাষ ও উৎপাদন বেড়েছে। ধানগাছে পোকা থেকে রক্ষা করতে পাচিং ও আলোক ফাঁদ পদ্ধতি ব্যবহার করে কোন কীটনাশক ছাড়াই পোকা দমন করা সম্ভব হয়েছে। নেপালতলীর ডওর গ্রামের আদর্শ কৃষক নুরুল ইসলাম জানান, প্রতি বিঘায় ২৫-৩০মন আউশধান পেয়েছি। এখন ধানের ন্যায্যমূল্যে পেলেই আমরা খুশি। তাই তারা আউশধানের ন্যায্য মূল্যে নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কৃষি অধিদপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
গাবতলী উপজেলা কৃষি অফিসার আঃ জাঃ মুঃ আহসান শহীদ সরকার জানান, কৃষি বিভাগের পক্ষে থেকে সার্বক্ষনিক পরামর্শের ফলে এবছরে আউশধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছেড়ে যাবে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ সোহরাব হোসেন জানান, উপজেলা জুড়ে কৃষকরা আপদকালিন বর্ষালী আউশধান কাটা-মাড়াই শুরু করেছে।এবছরে ধানের ভাল ফলন হয়েছে। ফলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। গাবতলী উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা জুলফিকার আলী হায়দার জানান, সারের সংকট নেই। ফলে কৃষক এবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী জমিতে আউশধান চাষ করছে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাহাদত হোসেন জানান, কৃষি বিভাগের সহযোগীতায় আমরা সবসময় কৃষকদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা করে আসচ্ছি।
এবছরে আউশধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। আমরা কৃষকদের নিয়ে কাজ করছি। ফলে গাবতলীতে বর্ষালী আউশধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন কৃষকের ঘরে ঘরে চলছে নবান্ন উৎসব।