মঙ্গলবার ● ১০ অক্টোবর ২০১৭
প্রথম পাতা » নওগাঁ » আত্রাইয়ে আলোক ফাঁদ : কমছে কীটনাশকের ব্যবহার
আত্রাইয়ে আলোক ফাঁদ : কমছে কীটনাশকের ব্যবহার
নওগাঁ প্রতিনিধি :: (২৫ আশ্বিন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.০৩মি.) নওগাঁর আত্রাই উপজেলার কৃষকদের কাছে ধানে আক্রান্ত পোকা-মাকড় চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জনপ্রিয় একটি পদ্ধতির নাম হচ্ছে আলোক ফাঁদ পদ্ধতি। দিন দিন উপজেলার কৃষকরা এই কৃষিবন্ধব পদ্ধতির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
বর্তমানে উপজেলার ৮ইউনিয়নের ২৪টি ব্লকে উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে ও উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতায় সন্ধ্যায় আমন ফসলের ক্ষেতে পোকা-মকড়ের উপস্থিতি যাচাইয়ের জন্য এই আলোক ফাঁদ স্থাপন করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিটি বর্তমানে উপজেলার কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আমন ধানের ক্ষেতের আইলে কোথাও পানি ভর্তি পাত্রে, কোথাও কাগজের উপড় আলো জ্বেলে ধানে আক্রমণাত্মক বিভিন্ন পোকা ধরছেন। কৃষকরা নিজেই জমিতে এই পোকাগুলোর উপস্থিতি দেখে ধান ক্ষেতে পোকার আক্রমণের আগেই কোন ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে তা খুব সহজেই নিরূপন করতে পারছেন । এই পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকরা নিজেই তাদের আমন ক্ষেতে কোন ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে তা স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার সহযোগিতায় প্রয়োগ করতে পারছেন। এতে করে পোকার আক্রমনের আগেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারছেন উপজেলার কৃষকরা। এই আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে এলাকার অনেক কৃষক বর্তমানে খুব কম ঔষধ ব্যবহার করছেন। এতে কৃষকদের খরচ অনেকটাই কমে আসছে এবং ধানের উৎপাদনের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এবার আমন ধান ও অন্যান্য ফসল উৎপাদনে লাভবান হবে বলে আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা, সম্প্রতি রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলার সকল উপজেলায় ধান ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের উপস্থিতি পর্যবেক্ষনে একযোগে গত সোমবার সন্ধ্যায় এই আলোক ফাঁদ অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলার শাহাগোলা গ্রামের কৃষক আজাদ সরদার, রফিকুল ইসলাম ও ভবানীপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, ওয়াজেদ আলী লিটন জানান, আমরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে অনেক উপকৃত হয়েছি। সহজ লভ্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করে তারা খুব সহজেই খেতের পোকামাকড়গুলো নিধন করতে পারছেন। পোকামাকড়গুলোর উপস্থিতি চিহ্নিত করে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছেন। এতে করে তাদের খরচ অনেকটাই কমে এসেছে। এটা পরিবেশ বান্ধব একটি পদ্ধতি।
এ বিষয়ে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা শফি উদ্দিন আহম্মেদ জানান, উপজেলার কৃষক সহজ লভ্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করে তারা খুব সহজেই ক্ষেতের পোকামাকড়গুলো নিধন করতে পারছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের অনুপ্রেরনায় কৃষকরা বর্তমানে এই “আলোক ফাঁদ” পদ্ধতির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকরা সহজেই আমন ধানের শত্রু বিভিন্ন পোকা নিধন করতে পারছেন। এতে করে আমন ক্ষেত পোকার আক্রমন থেকে রক্ষা পাচ্ছে। এটি একটি পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কে এম কাউছার হোসেন জানান, এটি একটি সহজলভ্য পদ্ধতি। উপজেলার কৃষকরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে খুব সহজেই ধানের ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেন। কৃষকরা যদি এই পদ্ধতিটি আমন মৌসুমে অব্যাহত রাখেন তাহলে একদিকে তাদের ধান উৎপাদনে খরচ কম হবে এবং অপরদিকে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।