সোমবার ● ২৩ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » অপরাধ » নাটোরের চেয়ারম্যান বাবা সুলতানের নির্যাতনে হাসপাতালে গৃহবধূ ফজিলা
নাটোরের চেয়ারম্যান বাবা সুলতানের নির্যাতনে হাসপাতালে গৃহবধূ ফজিলা
আব্দুল মজিদ, নাটোর প্রতিনিধি::
নাটোরের সিংড়ায় ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ ওরফে বাবা সুলতানের প্রকাশ্য নির্যাতনের শিকার গৃহবধু ফজিলা বেগম এখন সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মহিলা ওয়ার্ডে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন৷ ফজিলা বেগমকে প্রকাশ্যে রাস্তায় অস্ত্রের মুখে টেনে বনকুড়ি ব্রীজে নিয়ে গিয়ে তার মাথায় রামদার কোপে জখম করার পর তার বাম পা ও হাত ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে ৷ এ ঘটনায় সোমবার বিকেলে নাটোর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ ওরফে বাবা সুলতানসহ মোট নয়জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন স্থানীয় মসজিদ কমিটির সাধারন সম্পাদক মোঃ হাতেম আলী৷ সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নির্যাতিত ফজিলা বেগম ও তার স্বামী বাবলু মিয়া এবং এলাকাবাসী জানান, রোববার দুপুরে উপজেলার বনকুড়ি গ্রামে বনকুড়ি মসজিদের নিয়ন্ত্রনে থাকা খাস জলাশয়ের মাছ ধরতে যায় ১২নং রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ ওরফে বাবা সুলতান ও তার সহযোগীরা৷ এ সময় এলাকার নারী-পুরুষ সকলে এসে তাদের মাছ মারতে বাধা দিলে বাবা সুলতান পকেট থেকে পিস্তল বের করে গুলি করার হুমকি দিয়ে সেখান থেকে সবাইকে তাড়িয়ে দেন৷ ঘটনার সময় বনকুড়ি গ্রামের বাবলু মিয়ার স্ত্রী ফজিলা বেগম (৩৮) সকলের পিছনে পড়ে গেলে বাবা সুলতান তাকে ধরে রাস্তার ওপর দিয়ে টেনে-হিঁচড়ে বনকুড়ি ব্রীজে নিয়ে যান৷ পরে তার সহযোগী শামীম ও এনামুলসহ কয়েকজন এলোপাথারীভাবে মারপিটের পর তার মাথায় রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে এবং তার বাম পা ও হাত ভেঙ্গে দেয়৷ বাবা সুলতার চলে যাওয়ার পর এলাকাবাসী আহত গৃহবধু ফজিলা বেগমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ এলাকাবাসী জানিয়েছেন ‘বাবা সুলতান’ খ্যাত সুলতান আহমেদ ২০১১ সালের ২৫জুন ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন৷ সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী ও নির্যাতনের কারনে তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা দায়ের হলে তিনি আত্নগোপনে চলে যান৷ বেশীর ভাগ সময়ই ইউনিয়ন পরিষদ চলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দিয়ে৷ সুলতান আতংকে সাধারণ মানুষ জন কেউ আর ইউনিয়ন কার্যালয়ে যেতে চাননা৷ অভিযোগ রয়েছে, সেখানে একটি গোপন কক্ষও আছে যেটি সবার কাছে সুলতানের টর্চার সেল নামেই পরিচিত৷ নির্যাতনের ভয়ে প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতেও চাননা৷ তিনি বগুড়ায় অবস্থান করে সপ্তাহে দু’একদিন অফিস করেন৷ এর আগে এই চেয়ারম্যান সুলতানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে দুর্নীতিসহ সতেরটি অভিযোগে তার ওপর অনাস্থা এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছিলেন ইউনিয়ন পরিষদের দশজন ইউপি সদস্য৷ এব্যাপারে সিংড়া থানার ওসি নাসির উদ্দিন মন্ডল বলেছেন, বিষয়টি তিনি লোকমুখে শুনেছেন তবে ওই ঘটনায় এখনো কেউ থানায় মামলা করতে আসেন নাই৷ মামলা করলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে ৷
আপলোড ২৩ নভেম্বর ২০১৫ : বাংলাদেশ : সময় : সন্ধ্যা ৬.৫৩মিঃ