রবিবার ● ২২ অক্টোবর ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » রোহিঙ্গারা দিন দিন হিংস্র আচরণ করছে
রোহিঙ্গারা দিন দিন হিংস্র আচরণ করছে
উখিয়া প্রতিনিধি :: (৭ কার্তিক ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.২২মি.) মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে মানবিক আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। আর এদিকে আশ্রয় দেওয়া এসব রোহিঙ্গারা দিন দিন হিংস্র আচরণ আচরণ করছে বাংলাদেশীদের উপর। মরণ নেশা ইয়াবা, মানবপাচার, খুন, ধর্ষণ, মারধরসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে এসব রোহিঙ্গারা। সাধারণ লোকজনের পাশাপাশি হিংস্র রোহিঙ্গাদের মারধরের শিকার হলেন টেকনাফে কর্মরত এক পুলিশ কর্মকর্তা।
ইতিপূর্বে রোহিঙ্গা শিবির এলাকা থেকে বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার, রোহিঙ্গাদের হাতে রোহিঙ্গা খুন, রোহিঙ্গাদের হামলায় আহত ব্যক্তির মৃত্যুসহ গত এক মাসে নানা ঘটনা জন্ম দিয়েছেন রোহিঙ্গারা। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে ইয়াবাসহ ধরা পড়ছে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। সম্প্রতি ত্রাণের টোকেন বিতরণ কালে এক এনজিও কর্মী তাদের কবল থেকে রেহায় পেতে এক গাছে উঠে যায়। অনেকটা রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় লোকজন অসহায় হয়ে পড়ছে দিন দিন। রোহিঙ্গারা অবাধে বাংলাদেশী সীম ব্যবহার করার কারণে নানা অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে যাচ্ছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টম্বর রোহিঙ্গাদেও হামলায় উখিয়ার পালংখালি এলাকার মুরগির খামার ব্যবসায়ি জমির উদ্দিন আহত হয়। গত ১৬ সেপ্টম্বর উখিয়ার কুতুপালং এলাকায় রোহিঙ্গাদের হামলায় রোহিঙ্গা খুনের ঘটনা ঘটে। যেই সংবাদটি বিদেশী গনমাধ্যমে স্থান পায়।
৭ অক্টোবর কুতুপালং এর রোহিঙ্গা বস্তি লাগোয় তেলপাড়া খাল থেকে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গত ৮ অক্টেবর কুতুপালং এ ত্রাণের টোকেন বিতরণ করতে গিয়ে মুক্তি নামে স্থানীয় এনজিও কর্মী রোহিঙ্গাদের কবল থেকে বাঁচতে গাছে উঠে পড়ে।
গত ১৯ অক্টোবর মহিষ বিক্রিকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা মোহাম্মদ হোছনের ছেলে ধলাইয়া ও কালাইয়ার সাথে কথা কাটাকাটি হয় স্থানীয় আবু সিদ্দিকের। এক পর্যায়ে রোহিঙ্গা দুই সহোদর ক্ষুদ্ধ হয়ে আবু ছিদ্দিককে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় আবু ছিদ্দিককে প্রথমে টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতাল ও পরে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আইসিইউতে রাখা হয়। ২১ অক্টোবর ভোর ৬ টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে। নিহত ব্যক্তি টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পূর্ব লেদার মৃত কালা চাঁনের ছেলে।
সর্বশেষ গত শনিবার টেকনাফের নয়াপাড়া শরণার্থী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-ব্লকে রোহিঙ্গা নারী দিল বাহার ও তার স্বামী সৈয়দ আহমদ অবৈধভাবে একটি মুদির দোকান স্থাপন করার চেষ্টা করে। এসময় ক্যাম্পে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কবির আহমদ ঘটনাস্থলে গিয়ে দোকান নির্মাণে বাঁধা প্রদান করলে প্রথমে তর্কাতর্কি ও পরে বিবাধে জড়িয়ে পড়ে। এসময় সিভিল পোষাকে থাকা পুলিশের উপর হামলা চালায়। এঘটনায় ওই ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই কবির আহত হয়। তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত পুলিশের এসআই কবির আহমদ নয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ। এছাড় ইতিমধ্যে রোহিঙ্গা ইয়াবা নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধরা পড়ছে।
উখিয়ার পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দীন চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গাদের ভারে উখিয়া টেকনাফ জর্জরিত হয়ে গেছে। রোহিঙ্গাদের চাপে স্থানীয় লোকজনের এখন ঘর থেকে বের হওয়াই দায় হয়ে পড়েছে। তার উপর তারা নানা অপরাধ কর্মকা- ঘটাচ্ছে। এতে স্থানীয়দের জীবন চরম নিরাপত্তা হীনতায় পড়েছে। অদূর ভবিষ্যতে রোঙ্গিহারা আরো বড় ধরণের বিস্ফোরণ ঘটাতে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
উখিয়া-টেকনাফের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তায় কাজে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যের সত্যি দু:খজনক ব্যাপার। তাছাড়া লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের মাঝে কিছু উশৃঙ্খলা ও খারাপ প্রকৃতির লোক আছে। তাছাড়া ক্যাম্পে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ক্যাম্প গুলোতে গোয়েন্দা নজরদারী বাড়ানো হয়েছে।
শনিবার পুিলশের উপ-পরিদর্শক এসআই কবির আহমদের উপর রোহিঙ্গাদের হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এই ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।