শনিবার ● ২৮ অক্টোবর ২০১৭
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » বিধবা মায়ের মুখে আহার তুলে দিতে চাকরী করছে প্রতিবন্ধী তুহেল
বিধবা মায়ের মুখে আহার তুলে দিতে চাকরী করছে প্রতিবন্ধী তুহেল
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: (১৩ কার্তিক ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.১৮মি.) হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ পৌর এলাকার নহরপুর গ্রামের মৃত আদরিছ মিয়ার কিশোর পুত্র শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. তুহেল মিয়া (১৬) উচ্চতায় ৩ ফুট ২ ইঞ্চি। সমাজের বুঝা না হয়ে নিজের পায়ে দাড়াতে অদম্য ইচ্ছা শক্তি নিয়ে চায়ের স্টলে চাকুরী করে লেখাপড়া ও পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করে আসছে । তুহেল নহরপুর শাহজালাল (রহ.) দাখিল মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণির ছাত্র। উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও শত দরিদ্রতার মাঝেও চালিয়ে যাচ্ছে লেখাপড়া। প্রতিবন্ধী হয়ে নয় উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সমাজে মাতা উঁচু করে দাঁড়ানোর ইচ্ছে তুহেলের। তার জন্মের দুই বছর মাথায় তার বাবা মারা যান। তার বাবার কোন বসতভিটা না থাকায় তার মা মনোয়ারা বেগম শারীরিক প্রতিবন্ধী একমাত্র সন্তান তুহেলকে নিয়ে ভাইয়ের বাড়িতে আশ্রিত হিসেবে বসবাস করে আসছেন। অভাবের তাড়নায় পেটে দু-মোটো ভাত দিতে গিয়ে মনোয়ারা বেগম মানুষের বাড়িতে কাজ করে কোন রকম সংসার চালিয়ে আসছেন। বর্তমানে শারীরিকভাবে দুর্বল ও অসুস্থ হওয়ায় কাজ-কর্ম করতে না পারায় তারা অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। হত দরিদ্র মনোয়ারা বেগমের পক্ষে তুহেলের পড়াশোনার খরচ ও সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। কৈশোর জীবনে তার বাবা আদরিছ মিয়া আকষ্মিক মৃত্যুবরণ করেন। বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের হাল ধরে কিশোর বয়সেই প্রতিবন্ধী তুহেল বাধ্য হয়ে চায়ের স্টলে চাকুরী করে নিজের লেখাপড়া ও মায়ের মুখে আহার তুলে দিচ্ছে। তুয়েলের সাথে আলাপকালে সে জানায়, চাকুরী করে লেখাপড়া করতে গিয়ে আমার মারাত্বক ব্যাগাত ঘটছে। ঠিক মতো মাদ্রাসায় যেতে পারিনা। মায়ের ভরণ পোষন ও চিকিৎসার টাকা যোগাতে আমার লেখাপড়া প্রায় বন্ধের পথে। বিত্তবানদের সহায়তায় লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চায় প্রতিবন্ধী তুহেল। তুহেলের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, সে লেখাপড়ায় ভালো করলেও আমার একমাত্র সন্তান শারীরিক প্রতিবন্ধী তুহেল পরিবার চালাতে গিয়ে স্টলে চাকুরী করতে হচ্ছে। টাকার অভাবে পড়ালেখার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র কিনতে পারেনা। ওর নামে কোন প্রতিবন্ধী কার্ড নেই। সে প্রতিদিন যা রোজগার করে ঐ টাকা দিয়ে কোন রকম অর্ধাহারে বেঁচে আছি। যদি তার নামে কোন প্রতিবন্ধী কার্ড থাকতো তাহলে ঐ টাকায় তার লেখাপড়ার কাজে আসতো। আমার ছেলে পিতৃহীন তুহেল মাতা গুজার ঠাঁই ও লেখাপড়া করে বড় হতে চায়। মানুষের সেবা করতে চায়। সরকার ও বিত্তবানদের সহায়তায় লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চায় প্রতিবন্ধী তুহেল। সে সবার সহযোগিতা নিয়ে বাঁচতে চায় ।