রবিবার ● ৫ নভেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » এডিবি’র অর্ধশত কোটি টাকার উন্নয়ন কাজে হ-য-ব-র-ল
এডিবি’র অর্ধশত কোটি টাকার উন্নয়ন কাজে হ-য-ব-র-ল
পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: (২১ কার্তিক ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.২৯মি.) পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় দাতা সংস্থা এডিবি’র অর্থায়নে কোষ্টাল টাউন্স ইনফ্রাসট্রাকচার প্রজেক্ট (সিটিইআইপি) এর প্রায় ৩২ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজের গুনগত মান নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এডিবি’র অর্থায়নের এসকল কাজ কয়েকটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে নিয়ে পৌরসভার প্রভাবশালী কতিপয় কাউন্সিলর ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা সম্পন্ন করায় প্রকল্পের নির্দেশনা যথাযথ ভাবে অনুসরণ করা হয়নি। এছাড়া নিম্নমানের উপকরণ সামগ্রী দিয়ে অধিকাংশ কাজ সম্পন্ন করায় এসকল কাজের স্থায়িত্ব নিয়েও সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় নাগরিক ও সিটিইআইপি প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, কলাপাড়া পৌরসভার নাগরিকদের নগরিক সেবা নিশ্চিত করতে দাতা সংস্থা এডিবি কোষ্টাল টাউন্স ইনফ্রাসট্রাকচার প্রজেক্ট (সিটিইআইপি) এর অধীনে কয়েকটি প্যাকেজে অর্থ বরাদ্দ দেয়। এরপর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ প্রকল্পের বিপরীতে দরপত্র আহবান করে এবং ওই দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। প্রায় ৩২ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজের ওই দরপত্রে ৫ কি.মি. ঢাকনাসহ বক্স ড্রেন, ১৪ কি.মি. সড়ক, পানি সরবরাহের জন্য ওভার হেড ট্যাংক, পাইপ লাইন, পাম্প হাউজ, প্রডাকশন টিউবওয়েল নির্মাণসহ হাউজ কানেকশনের কাজ রয়েছে। এতে ঢাকনাসহ বক্স ড্রেনের ৬ কোটি ২৮ লাখ টাকার প্যাকেজের কাজ ইউনুস আল মামুন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে এবং ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকার অপর প্যাকেজের কাজ আরসি-সি-একে-জেভি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে কার্যাদেশ নেয়া হয়েছে। ১৪ কি.মি. আরসিসি কার্পেটিং সড়কের ৮ কি.মি. অংশের ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকার কাজ ভোলার রুপালী কনষ্ট্রাকশন ফার্ম এবং ৬ কি.মি. অংশের ৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকার কাজ পটুয়াখালীর পল্লী ষ্টোর কনষ্ট্রাকশন ফার্ম এর নামে নেয়া হয়েছে। এছাড়া ১২ কোটি ১২ লাখ টাকার পানি সরবরাহের জন্য ওভার হেড ট্যাংক, পাইপ লাইন, পাম্প হাউজ, প্রডাকশন টিউবওয়েল নির্মাণসহ হাউজ কানেকশনের কাজের কার্যাদেশ নেয়া হয়েছে ঢাকার জিলানী ট্রেডার্সের নামে। দরপত্র আহবান থেকে সম্পন্নকরণ প্রক্রিয়া পর্যন্ত কাগজে কলমে যথাযথ থাকলেও বাস্তবে কাজ করছেন পৌরসভার প্রভাবশালী কতপিয় কাউন্সিলর ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী। ফলশ্রুতিতে পৌরসভার নাগরিকরা বর্ষা মৌসুমে পানির মধ্যে নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে রাতের অন্ধকারে এসকল উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করলেও মুখ খুলতে সাহস পায়নি কেউ। এ বিষয়ে সিটিইআইপি প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: ফারুকুজ্জামান সিএইচটি মিডিয়াকে জানান, প্রকল্প সমূহের কার্যাদেশে ইউনুস আল মামুন, আরসি-সি-একে-জেভি, রূপালী কনষ্ট্রাকশন এবং জিলানী ট্রেডার্সের নাম থাকলেও বাস্তবে কাজ করছেন স্থানীয় ঠিকাদাররা। প্রকল্পের শতকরা আটানব্বই ভাগ কাজ যথাযথ ভাবে সম্পন্ন হওয়ার দাবী করেন তিনি।
এ বিষয়ে কলাপাড়া পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মিজানুজ্জামান সিএইচটি মিডিয়াকে জানান, সিটিইআইপি প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ তদারকির জন্য তাদের নিজস্ব কর্মকর্তা রয়েছে। তারপরও পৌরসভা এসকল কাজের মানের বিষয়ে যথাযথ নজরদারী অব্যাহত রাখছে। কাজের মান নিয়ে কোন রকম সংশয় নেই বলেও দাবী তার। প্রসংগত, দাতা সংস্থা এডিবি’র অর্থায়নে এর আগে পৌরসভায় আরবান গভর্নমেন্ট ইনফ্রাসট্রাকচার প্রজেক্ট-২ (ইউজিআইআইপি) এর অধীনে কোটি কোটি টাকার সড়ক নির্মাণ কাজ মো: ইউসুফ আলী ও আল মামুন এন্টারপ্রাইজের নামে নিয়ে সম্পন্ন করে ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় প্রভাবশালী নেতা। বছর না যেতেই এসকল সড়কের বিদ্যমান খানা খঁন্দকে প্রমাণ মেলে পুকুর চুরির। অথচ কাগজে কলমে ওই সড়ক উন্নয়ন কাজের ফাইলেও রয়েছে যথাযথ ভাবে সম্পন্ন করার নোট।