মঙ্গলবার ● ৭ নভেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » সিলেট সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি গায়েব : তদন্ত কমিটি গঠন
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি গায়েব : তদন্ত কমিটি গঠন
সিলেট জেলা প্রতিনিধি :: (২৩ কার্তিক ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.৩৫মি.) সিলেট সিটি করপোরেশনের বিকল তিনটি গাড়ি ‘গায়েব’ নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনে সংবাদ প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয়েছে। গত কদিন আগে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সিসিকের তিন গাড়ি গায়েব’র ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেন নগরভবনের কর্মকর্তারা। গাড়ি গায়েবের রহস্য উদঘাটনে গঠন করা হয় তিন সদস্যের কমিটি।
গাড়ি গায়েব প্রসঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানান, গাড়ি তিনটি দীর্ঘদিন ধরে বিকল অবস্থায় সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী কার্যালয় (পীর হাবিবুর রহমান পাঠাগার) এর সামনে ফেলে রাখা হয়েছিল। গাড়িগুলোর বডির অংশ বিশেষ ছাড়া আর কোন কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। বিকল গাড়িগুলো কী করা যায়- এব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানতে ২০০৯ সালের ৩১ আগস্ট তৎকালিন মেয়র বদর উদ্দীন আহমদ কামরান মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেছিলেন। বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী দায়িত্ব নেয়ার পরও ওই গাড়ি তিনটির বর্তমান অবস্থা জানিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেন। চিঠি চালাচালির প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ৭ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব সরোজ কুমার নাথ গাড়িগুলোর বর্তমান অবস্থা নির্ণয়ে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।
ওই নির্দেশনার পর গঠিত কমিটি তিনটি গাড়ির মূল্যমান নির্ধারণ করে মাত্র ৪৩ হাজার টাকা। কমিটির প্রতিবেদনে বিকল পিকআপের বর্তমান মূল্য ৮ হাজার টাকা ও গাড়িটি মেরামতে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া বিকল অ্যাম্বুলেন্সের মূল্য ১৫ হাজার টাকা ও মিনি ট্রাকের মূল্য ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। এবং মেরামতের জন্য যথাক্রমে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও ৭ লাখ টাকা প্রয়োজন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয় থেকে গাড়িগুলো নিলামের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু ওই নির্দেশনার পর দেড় বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও করপোরেশন নিলামের কোন উদ্যোগ নেয়নি।
আরিফুল হক চৌধুরী জানান, বিভিন্ন গণমাধ্যমে গাড়ি গায়েবের সংবাদ পড়ার পর তিনি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। করপোরেশনের সচিব বদরুল হককে প্রধান করে কমিটির সদস্য রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমিন ও পানি শাখার নির্বাহী প্রকৌশরী আলী আকবরকে।
তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন কয়েক কোটি টাকার গাড়ি ও যন্ত্রপাতি কিনেছে। এগুলো রাখার জন্য করপোরেশনের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে রাখা অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রগুলো সরানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। ওই সময় গাড়ি তিনটি গায়েব হয়। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে উল্লেখ করে আরিফ বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের খামখেয়ালিপনার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ সেপ্টেম্বর সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে থেকে তিনটি গাড়ি গায়েব হয়। এ ঘটনার প্রায় এক মাস পর ২৪ অক্টোবর পরিবহন শাখার উপ সহকারি প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মো. জাবেরুল ইসলাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। গাড়ি গায়েবের একমাস পর জিডি করা নিয়ে নগরভবন ও নাগরিক সমাজে নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়।