বৃহস্পতিবার ● ২৩ নভেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » কৃষি » কেচোঁ সারের ব্যবহার কমছে রাসায়নিক সারের ব্যবহার
কেচোঁ সারের ব্যবহার কমছে রাসায়নিক সারের ব্যবহার
সুদাম, নওগাঁ প্রতিনিধি :: (৯ অগ্রহায়ন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.১১মি.) নওগাঁর রাণীনগরে দিন দিন কৃষকদের মাঝে কেচোঁ দ্বারা উৎপাদিত পরিবেশ বান্ধব জৈব সারের (ভার্মি কম্পোস্ট সার) ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে ফসলের জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহারের প্রবণতা যেমন কমছে অপরদিকে পরিবেশ রক্ষা পাচ্ছে। এই জৈব সার ব্যবহারের ফলে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ফলনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফসল উৎপাদনে কমছে খরচ।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা, কৃষি অধিদপ্তরের উদ্যোগে ও উপজেলা কৃষি অফিসের বাস্তবায়নে ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রজেক্ট (এনএটিপি) এর আওতায় উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে কমন ইন্টারেস্ট গ্রুপ (সিআইজি) প্রকল্পের মাধেমে ৬টি সিআইজি কৃষক সমিতির মাধ্যমে ভার্মি কম্পোস্ট প্রদর্শনী চলমান রয়েছে। প্রতিটি সমিতিতে ওই গ্রামের ৬০জন কৃষক-কৃষাণী সদস্য রয়েছে। এই সমিতির ১জন কৃষকের বাড়িতে এই ভার্মি কম্পোস্ট (কেচোঁ দ্বারা জৈব সার উৎপাদন) প্রদর্শনী চালু রয়েছে। সমিতির বাকি সদস্যরা এই প্রদর্শনী থেকে কেচোঁ সার উৎপাদনের যাবতীয় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন এবং উৎসাহিত হচ্ছেন। পরবর্তিতে উৎসাহী কৃষকদের এই থাই কেচোঁ দ্বারা জৈব সার তৈরির সকল সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে কৃষি অফিস থেকে। এই প্রদর্শনীর সকল উপকরন সরকার বিনামূল্যে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে কৃষকদের প্রদান করছেন। এই ভার্মি কম্পোস্ট মানেই কৃষকের বাড়িতে পরিবেশ বান্ধব জৈব সারের কারখানা। কৃষকরা পরিবেশ বান্ধব এই সার তাদের বিভিন্ন ফসলের জমিতে ব্যবহার করছেন। ফসলের ক্ষেতে তাদের আর আগের মতো রাসায়নিক ব্যবহার করতে হচ্ছে না। এই সার ব্যবহারে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সঙ্গে রক্ষা পাচ্ছে পরিবেশ। সারা বছরই এই সার তৈরি করা যায়। আস্তে আস্তে উপজেলায় এই ভার্মি কম্পোস্ট খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের কুজাইল গ্রামের কৃষক মো. মাহবুব আলম খাঁন সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, আমি কৃষি অফিসের উদ্যোগে আমার বাড়িতে ভার্মি কম্পোস্টের প্রদর্শনী চালু করেছি। কৃষি অফিস থেকে আমাকে থাই কেচোঁ থেকে শুরু করে এই প্রদর্শনীর জন্য সকল উপকরণ দিয়েছে। আমি এই জৈব সার উৎপাদন করছি এবং আমার সবজি ক্ষেত থেকে শুরু করে ধান ক্ষেতে এই সার ব্যবহার করছি। ব্যবহারের পর অবশিষ্ট সার সমিতির অন্যান্য কৃষকদের মাঝে বিতরন করি। এই সার ব্যবহারের ফলে আমি ফসলের ক্ষেতে আর রাসায়নিক সার তেমন ব্যবহার করছি না। এই জৈব সারের বহুমুখি উপকার। ইতিমধ্যেই আমার দেখাদেখি অন্যান্য কৃষকরাও এই ভার্মি কম্পোস্টের প্রকল্প শুরু করেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এসএম গোলাম সারওয়ার সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, জমিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমানো ও কৃষকদেরকে পরিবেশ বান্ধব কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্ধুদ্ধ করতেই সরকার এই সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বর্তমানে জৈব সার উৎপাদনের এই পদ্ধতিটি উপজেলার কৃষকদের মাঝে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আমরা সব সময় কৃষকদের পরিবেশ বান্ধব কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারের পরামর্শ প্রদান করে আসছি। আশা করা যায় এই পরিবেশ বান্ধব কৃষি প্রযুক্তি আর অল্প দিনের মধ্যেই উপজেলায় আরো ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়বে।