শুক্রবার ● ২৪ নভেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » কৃষি » জিরো থেকে টার্কি খামারে হিরো হলো মাস্টার্স পাশ বেকার যুবক দেলোয়ার
জিরো থেকে টার্কি খামারে হিরো হলো মাস্টার্স পাশ বেকার যুবক দেলোয়ার
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (১০ অগ্রহায়ন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.৪০মি.) ঝিনাইদহ শৈলকুপায় টার্কি পাখির খামার গড়ে স্বাবলম্বী হতে চলেছে শিক্ষিত বেকার যুবক দেলোয়ার হোসেন, ২টা থেকে শুরু করে ১ বছরের মাথায় ২শতাধিক পাখি, গড়ে তুলেছেন ৭ লাখ টাকার পুজি। টার্কি বড় আকারের গৃহ পালিত পাখি। পশ্চিমা বা বিদেশী হলেও দেশে খাদ্য তালিকায় ক্রমেই এর অবস্থান বাড়ছে। ঝিনাইদহ শৈলকুপায় শিক্ষিত বেকার যুবক দেলোয়ার হোসেন টার্কির পাখি চাষ করে স্বাবলম্বি হতে চলেছে। ৬ হাজার টাকা দিয়ে মাত্র ২টা কিনে চাষ শুরু করে ১ বছরের মাথায় এখন তার খামারে জনপ্রিয় টার্কির সংখ্যা এখন ২শতাধিক, যার দাম ৭লক্ষাধিক টাকা। ডিম, বাচ্চাও পাওয়া যাচ্ছে তার খামারে। সুস্বাদু এ পাখির মাংশ, পাখি, ডিম, বাচ্চা কিনতে দেলোয়ারের খামারে এখন অনেক মানুষের ভীড়। এক একটির ওজন কমপক্ষে ৭কেজি হয়। এক জোড়া টার্কি বিক্রি হয় ৫ থেকে ৬হাজার টাকা। তার দেখাদেখি এলাকায় গড়ে উঠেছে আরো কয়েকটি খামার। যুব উন্নয়ন অফিস দিচ্ছে প্রশিক্ষন আর প্রানী সম্পদ বিভাগ করছে দেখভাল। ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে ওঠার ছয় মাসের মধ্যে টার্কি ডিম দেয়। বছরে ২৩০টার বেশী ডিম দেয়। ছয় মাসের মেয়ে টার্কির ওজন হয় পাঁচ থেকে ছয় কেজি। আর পুরুষ গুলো প্রায় আট কেজি। মুরগির মাংসের মতো করেই টার্কি রান্না করা হয়। রোস্ট ও কাবাব করা যায়। ঝিনাইদহ শৈলকুপায় মাস্টার্স পাশ করে চাকুরীর আশায় না থেকে একটি কোচিং সেন্টার চালানোর পাশাপাশি যুবক দেলোয়ার শুরু করেছে এই পাখির চাষ। ২০১৭ সালের শুরুতে এবি ফার্ম নামে শহরের শিক্ষক পাড়ায় বাসার সাথে ফার্ম শুরু করে আব্দুল হকের ছেলে দেলোয়ার। যুবক দেলোয়ার হোসেন জানায়, বছর শেষ না হতেই তার হাতে এখন ৭ লাখ টাকার পুজি।
এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ২লাখ টাকা। তাঁর কাছ থেকে বাচ্চা নিয়ে অনেক শৌখিন খামারি ছোট আকারে টার্কি পালন শুরু করেছেন। ময়ূরের মতো লেজ ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায় পাখিরা। আর ডাকাডাকিতে ঘর মাথায় তুলে। এর মাংস খেতে সুস্বাদু। পাশাপাশি তিনি তিতির পাখিও পুষতে শুরু করেছেন। টার্কি পাখির বাচ্চা ফুটাতে নিজেই একটি ‘ইনকিউবেটর’ যন্ত্র তৈরি করেছেন। তার দেখাদেখি শৈলকুপার বাগুটিয়া, সাধুহাটি, মজুমদারপাড়া, গোবিন্দপুরে গড়ে উঠেছে টার্কি ফার্ম ।টার্কির খাবার ও রোগবালায় নিয়ে মুরগির চেয়ে দুর্ভাবনা কম, ৬মাসের মধ্যে ডিম দিতে শুরু করে। এরা ঠান্ডা-গরম সব সহ্য করতে পারে। ধান, গম, ভুট্টা সহ দানাদার খাবারের চেয়ে সাধারণ প্রাকৃতিক খাবার কস্তুড়ি, কলমির শাক, বাঁধাকপি, ঘাস এসব বেশি পছন্দ করে। তবে সরবরাহ পর্যাপ্ত না থাকায় এখনো দাম একটু বেশি। সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে টার্কি খাওয়ার প্রচলন শুরু হয়নি। কিন্তু অনেকের মধ্যে বাড়ছে আগ্রহ এমন কথা জানান স্থানীয়রা । শৈলকুপায় যুব উন্নয়ন অফিস প্রশিক্ষন দিচ্ছে টার্কি পাখি চাষে আগ্রহীদের। সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মাসুদার রশিদ জানায়, তারা টার্কির মাংসে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য গুণাগুণ বিদ্যমান। টার্কির মাংস সুস্বাদু এবং স্বাদ ও পুষ্টিগুন অনেক বেশি। এর মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আছে এবং টার্কির মাংসে চর্বি অনেক কম। এর মাংস আন্যান্য পাখীর মাংসের চেয়ে বেশী পুষ্টিকর। জেলার শৈলকুপা উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্ত গোলাম মোস্তফা জানান, টার্কি পাখি চাষ করে সাবলম্বী হওয়া যায় সহজেই। তাই বিভিন্ন স্থানে যারা টার্কি পাখি চাষ করছেন, সেখানে রোগ বালায় সম্পর্কে সচেতন করে চলেছেন। তিনি শিক্ষিত যুবক দেলোয়ার হোসেনের ফার্মের প্রশংসা করেন।