শুক্রবার ● ৮ ডিসেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » রোহিঙ্গা নেতাদের হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় স্থানীয়রা
রোহিঙ্গা নেতাদের হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় স্থানীয়রা
পলাশ বড়ুয়া :: (২৪ অগ্রহায়ন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.০০মি.) মিয়ানমারে নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে ২৫ আগষ্টের পর থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গারা পালিয়ে বাংলাদেশের নাইক্ষ্যংছড়িসহ উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেয়। স্থানীয়রা নানা ভোগান্তি স্বত্তেও নির্যাতিত মানুষ গুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে। মানবিক সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার ও বর্হিবিশ্ব।
এদিকে রোহিঙ্গা আসার পর থেকে উখিয়ার পাহাড়ী জঙ্গলে অজ্ঞাত লোকজনের সন্দেহজনক আনাগোনা দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে। উখিয়া সদর রাজাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম হরিণমারা গ্রামের কাছে বন বিভাগের পাহাড় ও জঙ্গলে এসব অপরিচিত অচেনা লোকজন আস্তানা গড়ে তুলেছে বলে জানা গেছে। এরা কারা স্থানীয় গ্রামসীরা চিনে না। তাদের ভয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে।
সুত্রে জানা যায়, রোহিঙ্গা নাগরিক কথিত ডাক্তার ছৈয়দ নূর হরিণমারা গ্রামে বন বিভাগের জায়াগায় বসতবাড়ী নির্মাণ করে বসবাস করার পর থেকে এলাকার মানুষের মধ্যে নানা সন্দেহ ও ভয়ভীতি দেখা দিয়েছে। তার আস্তানায় প্রতিনিয়ত আনাগোনা বেড়ে গেছে অপরিচিত ও অজানা লোকজনের। ইতিমধ্যে ছৈয়দ নূর বন বিভাগের জায়গা দখলসহ পশ্চিম হরিণমারা গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা খাইরুল হককে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় খাইরুল হক উখিয়া থানায় গত ২৭ অক্টোবর জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী লিপিবদ্ধ করেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বার্মাইয়া সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে ১ একর জায়গা দখল করে নেওয়ার বিষয়টিও অভিযোগে আসে।
ভূঁয়া ডাক্তার ছৈয়দ নূর রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গ্রুপের কর্মকান্ডে জড়িত থাকার সন্দেহের বিষয়টি গোয়েন্দা বাহিনীর তথ্যে উঠে এসেছে।
তথ্য মতে, বার্মার আরকান থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশের পার্বত্য বান্দরবান অঞ্চলে অবস্থান নেয় কথিত ছৈয়দ নূর। পাহাড়ী জনপথে বিচরণের সুযোগ পেয়ে এক সময় মিয়ানমারের বিদ্রোহী সংগঠন আরএসও এবং আরিএফের সদস্যদের চিকিৎসা করতেন। এরপর থেকে বার্মার মৃত আবুল হোছন ফকিরের ছেলে বার্মাইয়া ডাক্তার ছৈয়দ নূর নানা অপরাধ কর্মকান্ডসহ জঙ্গি কানেকশনে জড়িয়ে যায় বলে সুত্র জানায়।
এই সে ছৈয়দ নূর বর্তমানে উখিয়া রেঞ্জের রাজাপালং বন বিটের আওতাধীন হরিণমারা গ্রামের কাছে বন বিভাগের জায়গা অবৈধভাবে জবর দখল করে দাপর্টের সাথে বসবাস করছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। কারণ তার সাথে রয়েছে বিভিন্ন সন্ত্রাসী ও জঙ্গি গ্রুপের যোগাযোগ।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, বার্মাইয়া ছৈয়দ নূর পার্শ্ববর্তী রামুর গর্জনিয়া বাজারে একটি ঔষুধের ফার্মেসী খুলে নিজেকে ডাক্তার পরিচয়ে নানা অপরাধকর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ করছে।
সরকারী বন বিভাগের পাহাড়ের জঙ্গলে আস্তানা গড়ে সেখানে ছৈয়দ নুর কি করছে তা এলাকাবাসীর কাছে জানা নেই।
সংশ্লিষ্ট রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, ছৈয়দ নূর ও তার কর্মকান্ড সম্পর্কে তিনি জ্ঞাত নন। তবে খোঁজ খবর নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়ের বলেন, পাহাড় ও জঙ্গলে কেউ অবস্থান করে অপরাধ কর্মকান্ডের আস্তানা গড়ে তুললে তা কঠোর হস্তে দমণ করা হবে। অতিশীঘ্রই এসব এলাকা গুলোতে পুলিশী অভিযান পরিচালনা করার কথাও জানান তিনি।