রবিবার ● ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » কক্সবাজার » জেএসসিতে রুমখাঁপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের এবারও শতভাগ সাফল্য
জেএসসিতে রুমখাঁপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের এবারও শতভাগ সাফল্য
উখিয়া প্রতিনিধি :: (১৭ পৌষ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২.১৪মি.) নানা প্রতিকূলতার মধ্যে জেএসসিতে রুমখাঁ পালং উচ্চ বিদ্যালয় এবারও শতভাগ পাশের গৌরব অর্জন করেছে। কক্সবাজারের উখিয়ার হলদিয়াপালং ও রত্নাপালং দু’ইউনিয়নের সীমানায় ১৯৯২সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এ বিদ্যালয়টি। প্রতিষ্ঠানলগ্ন থেকে জীর্ণগৃহে শীর্ণ পাঠ চলছে। ঝুপড়ি ঘর। একটু বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি। স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ননএমপিওভুক্ত এ বিদ্যালয় থেকে এবারও ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত জেএসসি পরীক্ষায় ৬১জন পরীক্ষার্থীর শতভাগ পাশের সাফল্য অর্জন করে।
জানা যায়, বিগত ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬ সালেও বৃত্তিসহ শতভাগ পাশের গৌরব অর্জন করে অবহেলিত এ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত চালু ছিল। গত ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে নবম শ্রেণিতে (ব্যবসায় ও মানবিক শাখায়) শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এ বিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় শিক্ষা থেকে ৯জন এবং মানবিক শাখা থেকে ২১ জনসহ মোট ৩০জন শিক্ষার্থী আসন্ন ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিন।
ধারাবাহিক এ সাফল্যের ইতিবৃত্তে জানা যায়, বিদ্যালয়টি ১৯৯২সালে বর্তমান পরিচালনা কমিটির সভাপতি, পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহকারী শিক্ষক পুলিন বিহারী বড়ুয়া’র প্রচেষ্টায় বিদেশী দাতা সংস্থা ওয়াল্ড ভিশন ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠা করলেও ২০০৭ইং পর্যন্ত অনুমোদিত পরিচালনা কমিটি না থাকায় বিভিন্ন দিক দিয়ে পিছিয়ে ছিল এ বিদ্যালয়টি। পরবর্তীতে বর্তমান প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিন যোগদানের পর তৎকালীন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহমদ শামীম আল রাজিকে সভাপতি করে প্রথম অনুমোদিত কমিটি গঠন এবং তাঁর একান্ত প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি চালু হয়।
তিনি আরও বলেন প্রত্যন্ত অঞ্চল ও হতদরিদ্র অধিকাংশ অভিভাবক শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের নির্ধারিত মাসিক বেতন আদায়ে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি ভর্তি ফি, পরীক্ষা ফি এমন কি ফরম পুরণের ফি: জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়। সর্বোপরি এলাকার গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার সুযোগ দান সহ প্রতিষ্ঠানটির সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে বিনা বেতনে ১০ বৎসর যাবত স্বেচ্ছাসেবী মানসিকতায় ৪জন নিয়োগ প্রাপ্ত ও ৩ জন চুক্তিভিত্তিক সহ মোট ৭ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি শিক্ষক (অব:) পুলিশ বিহারী বড়ুয়া’র নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করে হাজারো শিক্ষার্থী ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, এডভোকেট, শিক্ষক ও সাংবাদিক সহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিযুক্ত হয়েছে। তাই বর্তমান সরকারের সর্বোচ্চ বিনিয়োগ খাত শিক্ষা ব্যবস্থার আওতায় প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি শিক্ষানুরাগী ও সচেতন মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের শতভাগ সাফল্যে প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিন সহ শিক্ষকমন্ডলী ও সংশ্লিষ্ট অভিভাবকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন ভবিষ্যতেও যেন এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকে, সে জন্য শিক্ষকবৃন্দ ও অভিভাবকদের সার্বিক সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।