বৃহস্পতিবার ● ৪ জানুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » জাতীয় » ছাত্রলীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ
ছাত্রলীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ
বিশ্বনাথ (প্রতিনিধি :: (২১ পৌষ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বেলা ২.২৫মি.) বাংলা ও বাঙালির স্বাধীনতা ও স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের জন্মেরও এক বছর আগে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। তার নেতৃত্বেই ওই দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে আনুষ্ঠানিকভাবে এর যাত্রা শুরু হয়। তৎকালীন তরুণ নেতা শেখ মুজিবের প্রেরণা ও পৃষ্ঠপোষকতায় এক ঝাঁক মেধাবী তরুণের উদ্যোগে সেদিন যাত্রা শুরু করে ছাত্রলীগ। দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী সেই সংগঠনটির ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ৪ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার।
৭০ বছরে ছাত্রলীগের ইতিহাস হচ্ছে জাতির ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা, মুক্তির স্বপ্ন বাস্তবায়ন, স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনা, গণতন্ত্র প্রগতির সংগ্রামকে বাস্তবে রূপদানের ইতিহাস। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল সংগ্রামে ছাত্রলীগ নেতৃত্ব দিয়েছে এবং চরম আত্মত্যাগের মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বাঙালী জাতির ইতিহাসে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে বাঙালির ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা, ’৫৪-এর সাধারণ নির্বাচনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ পরিশ্রমে যুক্তফ্রন্টের বিজয় নিশ্চিত, ’৫৮-এর আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলনে ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা, ’৬৬-এর ৬ দফা নিয়ে ছাত্রলীগে নেতাকর্মীদের দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া, ৬ দফাকে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে পাক শাসকের পদত্যাগে বাধ্য করা এবং বন্দিদশা থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করা, ’৭০-এর নির্বাচনে ছাত্রলীগের অভূতপূর্ব ভূমিকা পালন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখসমরে ছাত্রলীগের অংশগ্রহণ, স্বাধীনতাপরবর্তী সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্রে উত্তরণসহ প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগের অসামান্য অবদান দেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্রলীগ চার দিনব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ছাত্রলীগ। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় সারাদেশে দলের কেন্দ্রীয় ও দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন, ৬টা ৩০ মিনিটে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, সকাল ৮টায় কার্জন হলে কেক কাটা এবং ৬ জানুয়ারি শনিবার সকাল ১০টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শুরু হবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, কাকরাইল, নাইটিঙ্গেল ও পল্টন মোড় হয়ে ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ হয়ে গুলিস্তানে গিয়ে শেষ হবে। শোভাযাত্রায় ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতারা উপস্থিত থাকবেন। ৮ জানুয়ারি সোমবার দুপুর ২টায় সোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, ৯ জানুয়ারি মঙ্গলবার স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি এবং ১১ জানুয়ারি বেলা ১০টায় অপরাজেয় বাংলায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হবে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন। এ জন্য সংগঠনের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন সফল করতে মোট ১০টি উপকমিটি করা হয়েছে। সে সব কমিটি প্রস্তুতি শেষ করেছে।