রবিবার ● ২৮ জানুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » ময়মনসিংহ » ঈশ্বরগঞ্জে যুবলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি
ঈশ্বরগঞ্জে যুবলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি
ময়মনসিংহ অফিস :: (১৫ মাঘ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৪৭মি.) ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সংবর্ধনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি শোডাউন ও সংঘর্ষের পর স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
আজ ২৮ জানুয়ারি রবিবার দুপুরে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এলিশ শরমিন উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করার বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মাইকিং করে জানিয়ে দেন। মাইকিং এ বলা হয়, রবিবার বেলা সাড়ে ১২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ঈশ্বরগঞ্জ পৌরশহরে সব ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান সুমনের ছোট ভাই আবুল খায়েরকে আহ্বায়ক করে ৩৩ সদস্যবিশিষ্ট উপজেলা যুবলীগের কমিটি পাঁচদিন আগে অনুমোদন করে ময়মনসিংহ জেলা যুবলীগ। এ কমিটিতে বিদায়ী সভাপতি মতিউর রহমান মতিকে এক নম্বর সদস্য করা হয়।
আজ ২৮ জানুয়ারি রবিবার সকাল ১১টায় স্থানীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় নতুন কমিটির নেতাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের প্রস্ততি চলছিল। কিন্তু অনুষ্ঠান শুরুর আগেই উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান মতির নেতৃত্বে দলীয় একাংশের নেতাকর্মীরা সংবর্ধনা মঞ্চে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় তাদের অস্ত্রের আঘাতে নতুন আহ্বায়কের অনুসারী উপজেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি তারিকুল ইসলাম বাবুল, সদর ইউনিয়ন আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তারা মিয়া, ছাত্রলীগ নেতা তুষার ও আকবর আলী নামে এক পথচারী আহত হলে তাদের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে গোটা উপজেলা সদরে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে শোডাউনে নেমে পড়ে ও হুমকি প্রদর্শন করতে থাকে।
এসময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিলে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা সদরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে।
নব গঠিত যুবলীগের এ কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুস সালাম এ ব্যাপারে সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম এর প্রতিনিধিকে বলেন, সংবর্ধনা দেয়ার জন্য স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে মঞ্চ তৈরির পর রবিবার বেলা ১১টার দিকে সাবেক আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি ও তার লোকজন গিয়ে মঞ্চ ভেঙে দেয়ার পাশাপাশি অগ্নিসংযোগ করে এবং কর্মীদের ওপর হামলা চালায়।
বিদায়ী সভাপতি মতিউর রহমান মতি এ বিষয়ে সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম এর প্রতিনিধিকে বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে করা এ কমিটি আমরা মানতে পারিনা। তাই সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য তৈরি মঞ্চ ভেঙে দেয়া হয়েছে।’
কিন্তু ১৪৪ ধারা জারির পরও উপজেলা যুবলীগের নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক আবুল খায়ের দুপুর দেড়টার দিকে প্রায় হাজারখানেক মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউন করে অনুষ্ঠানস্থলের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাঁধা দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রায় ১০ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বলে স্থানীয় সূত্র জানায়।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এলিশ শরমিন সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম এর প্রতিনিধিকে জানান, ‘যুবলীগের নব-গঠিত আহ্বায়ক কমিটির সংবর্ধনাকে কেন্দ্র্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অনেকে আহত হয় এবং নতুন করে সংঘর্ষের আশঙ্কায় পৌর শহরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।’
ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বদরুল আলম খান সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম এর প্রতিনিধিকে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২ / ৩ রাউন্ড টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি ছোড়া হতে পারে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং স্থানীয় স্মৃতিসৌধসহ বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।