বৃহস্পতিবার ● ১ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » এফপিএবি‘র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দীর্ঘ ১১ মাস ধরে বেতন নেই : মানবেতর জীবণ যাপন
এফপিএবি‘র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দীর্ঘ ১১ মাস ধরে বেতন নেই : মানবেতর জীবণ যাপন
ষ্টাফ রিপোর্টার :: (১৯ মাঘ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.০৩মি.) বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি (এফপিএবি) মুলতঃ একটি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন অরাজনৈতিক সেচ্ছাসেবী সংস্থা। বাংলাদেশে ১৯৫৩ সালে মরহুম ডাক্তার হুমায়রা সাইদের নেতৃত্বে এ সংস্থার জন্ম হয়। প্রাথমিক অবস্থায় দুটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এ সংস্থা কাজ শুরু করে।
যার প্রধান কার্যালয় বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি-এফপিএবি,২ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০।
উদ্দেশ্যগুলো প্রথমত: মা ও শিশু স্বাস্থ্য কল্যানের লক্ষ্যে ও পরিকল্পিত পরিবারের ধারণাকে জনপ্রিয় করা এবং পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহনে আগ্রহী দম্পতিদের প্রয়োজনীয় তথ্য ও সামগ্রী সরবরাহ করা।
দ্বিতীয়ত: পরিবার পরিকল্পনাকে জাতীয় কর্মসূচীতে অন্তর্ভুক্ত করা লক্ষ্যে সরকারের নীতি নির্ধারক এবং জনপ্রতিনিধিদের উদ্বুদ্ধ করা।
এছাড়াও বর্তমানে বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি (এফপিএবি)‘র বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত এলাকার সেবা গ্রহীতাদের দোড়গোড়ায় মাঠকর্মী, প্যারামেডিকস এবং অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা পরিবার পরিকল্পনা ও প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা। স্ট্যাটিক ক্লীনিকের মাধ্যমে সুবিধা বঞ্চিত ও দরীদ্র জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে অথবা স্বল্পমূল্যে পরিবার পরিকল্পনা, প্রজনন স্বাস্থ্য, নিরাপদ ডেলিভারী (নরমাল/সিজারীয়ান) ও প্রাথমিক সেবা এবং বিনামূল্যে এইচ আইভি পরীক্ষা করা।বিধবা, নির্যাতিত এবং সুবিধা বঞ্চিত নারীদেরকে নিয়ে ক্লাব গঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের কারিগরী প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় তথ্যের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়ন ও সাবলম্বী করে গড়ে তোলার কাজ করছে।
বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি (এফপিএবি)’র সারা দেশে ২১টি জেলা শাখা রয়েছে, প্রতিটি জেলা শাখায় ২জন প্রথম শ্রেণীর,২জন ২য় শ্রেণীর,৫জন ৩য় শ্রেণীর ও ৬জন ৪র্থ শ্রেণীর কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন। আবার কোন কোন জেলা শাখায় কর্মকর্তা এবং কর্মচারী কম ও বেশী রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি (এফপিএবি)’র প্রধান শাখাসহ প্রায় ৫০০জন কর্মকর্তা এবং কর্মচারী দীর্ঘ ১১ মাস যাবৎ তাদের বেতন পাচ্ছেনা।
একজন জেলা কর্মকর্তা জানান, গত ফেব্রয়ারি-২০১৭ ইংরেজি মাসের বেতন দেয়া হয়েছে ডিসেম্বর-২০১৭ ইংরেজি মাসে।
মাসের পরে মাস ধরে ২১টি জেলা শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বন্ধ থাকায় পরিবার পরিজনদের নিয়ে তাঁরা মাববেতর জীবণ যাপন করছেন।
রাঙামাটি জেলা শাখার সিনিয়র এক্সকিউটিভ ক্লীনিকেল সাভিস কিরণ কান্তি শিকদার জানান,তিনি শাখার কাজে রাঙামাটি শহর থেকে মোটরসাইকেলে করে কাপ্তাই যাওয়ার পথে গত ২৫ মে-২০১৭ ইংরেজি সড়ক দুঘর্টনায় মারাত্মক ভাবে আহত হন। দীর্ঘ দিন ধরে তার বেতন বন্ধ থাকায় টাকার অভাবে তিনি তাঁর চিকিৎসা করাতে পারছেন না এবং তাঁর ঘরভাড়া, পরিবার পরিজনদের ভরণপোষণ সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারছেন না এবং মাসের পর মাস বেতন বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবণ যাপন করছেন এই পরিবারটি। তাছাড়া সময় মতো চিকিৎসা না পেলে কিরণ কান্তি শিকদার পঙ্গু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরো জানান, রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের সার্জারী কনসালটেন্ট ডা. মোতাহার হোসেন এর তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। তিনি আরো বলেন, চলিত বছরের ১৩ জুলাই-২০১৮’তে তাঁর চাকুরীর মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।
দীর্ঘ ১১ মাস যাবৎ বেতন না পেলেও কিরণ কান্তি শিকদার এখনও প্রায় অর্ধপঙ্গুত্ব বরণ করে স্ক্যাচ এ ভর দিয়ে অফিসে আসা-যাওয়া করেন। তাঁর নিজের দাপ্তরিক দায়িত্ব পালন করেন এবং বাহিরে চলাফেরা করার চেষ্টা করছেন।
এবিষয়ে বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি (এফপিএবি) রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যানেড প্যারেন্ডহুড ফেডারেশন (আইপিপিএফ)’র চাহিদা মোতাবেক গত দুইমাস আগে আমাদের জাতিয় কমিটি গঠনতন্ত্র সংশোধন করে সংশ্লিষ্ট মান্ত্রনালয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন হলে(আইপিপিএফ)’র কাছে গঠনতন্ত্রটি পাঠানো হবে। তখন “আইপিপিএফ” এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনের অর্থ ছাড় করে দেয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তিনি আরো বলেন,হয়তো আগামী মার্চ-২০১৮ ইংরেজি মাসের ভিতর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন পাবেন বলে আশাবাদি।