শুক্রবার ● ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » বাগেরহাটে ৪০ দিনের কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ভেস্তে যেতে বসেছে : সম্পৃক্ততা নেই স্থানীয়রা
বাগেরহাটে ৪০ দিনের কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ভেস্তে যেতে বসেছে : সম্পৃক্ততা নেই স্থানীয়রা
বাগেরহাট অফিস : (২০ মাঘ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.২৭মি.) বাগেরহাটের চিতলমারীতে ৪০ দিনের কর্মসূচিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই কাজে সংশ্লিষ্ট গ্রামের স্থানীয় নারী-পুরুষদের পরিবর্তে বাইরের পুরুষ শ্রমিকদের এনে দায়সারাভাবে কাজ করানো হচ্ছে। গ্রামের উন্নয়নে গ্রামের মানুষদের সম্পৃক্তকরণ- সরকারের ৪০দিনের কর্মসূচির এই মুল লক্ষ্য ভেস্তে যেতে বসেছে বলে অভিজ্ঞরা অভিমত জানিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার হিজলা ইউনিয়নের বোয়ালিয়া কাশিকৃষ্ণের মন্দির থেকে লনার বিল পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার খালের মাটি যেনতেন প্রকারে কাটা হয়েছে। শৈলদাহ এলাকার মাটিকাটা সরদার আক্কাছ মোল্লার নেতৃত্বে প্রায় ৩০জন দিনমজুরকে আনা হয়েছে। তারা খালের উপরের অংশে কোন রকমে এককোদাল করে মাটি কেটে পাড়ে ফেলছেন। একইভাবে দসরদার আক্কাছ মোল্লা জানান, দৈনিক জনপ্রতি চারশ’ টাকা করে তাদের দেয়া হচ্ছে। স্থানীয় মেম্বার জগদীশ বসু, বাদশা মেম্বার। ওই একই শ্রমিকদের দিয়ে লনার খালের পার্শ্ববর্তী কাটাখালীর খালেও এমনভাবে কাজ করানো হচ্ছে যে, সরেজমিনকালে খালের তলদেশে প্রচুর পেড়িমাটি জমে থাকতে দেখা গেছে। এই খালের কাজ করাচ্ছেন লিটন মেম্বার। স্থানীয় মানুষেরা মেম্বারদের সামনে এসে কোন কথা বলতে চান না।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী অভিযোগের সুরে বলেন, ‘‘আগে ৪০ দিনের কর্মসূচিতে গ্রামের নারীদের কাজে লাগানো হতো। তাতে অন্ততঃ নিজেদের গ্রামের খালের কাজটির মান ভাল হতো এবং কাজে নারীরা থাকতে পারতো। নারীদের অর্থ সংস্থানও হতো। কিন্তু চলমান এই কাজে নারীদের অংশগ্রহণ নেই এবং গ্রামের বাইরের লোকেরা এসে আর্থিক সুবিধা নিয়ে দায়সারাভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’’
এ ব্যাপারে হিজলা ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আজমীর আলী বলেন, ‘দায়সারাভাবে খালের মাটি ফেলার কথা আমিও শুনেছি। ওভাবে কাটা যাবেনা। খাল গভীরভাবে কাটার জন্য আমি নির্দেশ দিয়েছি।’’ তিনি আরো জানান, ৪০ দিনের কর্মসূচিতে দৈনিক ৪০জন গ্রামের মানুষ কাজ করবে, যার কমপক্ষে ৩০% ভাগ নারী থাকার কথা। শ্রমিকেরা জনপ্রতি দৈনিক দেড়শ’ (১৫০) টাকা পাবে।
চিতলমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহাগ ঘোষ বলেন, ‘৪০ দিনের কর্মসূচির মুল লক্ষ্য হচ্ছে গ্রামের মানুষদের তাদের নিজেদের উন্নয়ন কাজে সম্পৃক্ত করা, তাদের মধ্যে অবশ্যই ৩০% নারী থাকতে হবে। শ্রমিকদের দৈনিক ১৭৫ টাকা করে দেয়ার কথা। ইউনিয়ন পরিষদকে আমরা চেকের মাধ্যমে টাকা দেই এবং শ্রমিকদেরকেও একাউন্টের মাধ্যমে টাকা প্রদানের নিয়ম রয়েছে। তবে কোন প্রকল্পে কতজন শ্রমিক দৈনিক কাজ করবে সেটা নির্ধারনের দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদের।’ তিনি আরো বলেন, ‘যথাযথ নিয়মে কোন প্রকল্পের কাজ না হলে টাকা সরকারের নিকট ফেরত যাবে।