মঙ্গলবার ● ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » নওগাঁ » রাণীনগরে চলছে নিন্ম মানের নিষিদ্ধ গাইড বই বিক্রয়ের রমরমা ব্যবসা
রাণীনগরে চলছে নিন্ম মানের নিষিদ্ধ গাইড বই বিক্রয়ের রমরমা ব্যবসা
সুদাম চন্দ্র, নওগাঁ প্রতিনিধি :: (৮ ফাল্গুন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.২০মি.) বছরের শুরু থেকেই নওগাঁর রাণীনগরে চলছে নিন্ম মানের নিষিদ্ধ গাইড ও ব্যাকরণ বই বিক্রয়ের রমরমা ব্যবসা। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই সব নিন্ম মানের প্রকাশনার সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে আতাত করে শিক্ষার্থীদের সেই সব নিন্ম মানের বই কিনতে বাধ্য করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এই সব অখ্যাত-কুখ্যাত প্রকাশনার নিন্ম মানের গাইড ও ব্যাকরণ বই পড়ে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে আগামীর প্রজন্ম শিক্ষার্থীরা।
অপরদিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি জননী পাবলিকেশন্সসহ একাধিক নিন্মমানের বই প্রকাশনীর সঙ্গে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে আতাত করে সমিতির আওতায় থাকা ২৮টি মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে এই বই কেনার জন্য বাধ্যতা মূলক নিয়ম বেধে দিয়েছে। তাই শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষকের মতামতের বাইরে অন্য কোন প্রকাশনীর বই কিনছে না। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই খারাপ হলেও অভিভাবকরা সেই সব গাইড ও ব্যাকরণ বই সন্তানদের কিনে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। আর এই সুযোগেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানের বইয়ের দোকানগুলো নিন্মমানের বই বিক্রয় করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের অর্থ।
সূত্রে জানা, শিক্ষক সমিতির বাহিরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাণীনগর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় লেকচার প্রকাশনীর সঙ্গে আতাত করে শিক্ষার্থীদেরকে সেই প্রকাশনীর বই কিনতে বাধ্য করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও রাণীনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অনুপম প্রকাশনীর সঙ্গে ও গোনা উচ্চ বিদ্যালয় বাংলাদেশ লাইব্রেরীর সঙ্গে একই পথ অবলম্বন করেছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাই উপজেলার বিভিন্ন স্থানের বইয়ের দোকানগুলোতে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে এই সব নিন্মমানের নিষিদ্ধ গাইড ও ব্যাকরণ বই। মান সম্মত প্রকাশনীগুলো কমিশন কম দেয় বলে সেই সব প্রকাশনীর বই বিক্রয় করছে না এই সব লাইব্রেরীগুলো। এত করে চরম বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
উপজেলা সদরের বিভিন্ন লাইব্রেরীতে বই কিনতে আসা অভিভাবক নজরুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম ও লিটনসহ অনেকেই সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিকে বলেন শিক্ষকদের নির্দেশের বাইরে বই নিয়ে গেলে সন্তানরা সেই বই গ্রহণ করছে না। অনেকেই বলছেন এই সব বইয়ের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে রয়েছে শত শত ভুল সেই সঙ্গে লেখার মানও ততটা উন্নত নয়। তাই বাধ্য হয়েই শিক্ষকদের বলে দেওয়া নিন্মমানের প্রকাশনীর বই কিনতে বাধ্য হচ্ছি আমরা। দিন দিন এই নিষিদ্ধ নিন্মমানের গাইড ও ব্যাকরণ বইয়ের দৌরাত্ম বেড়েই চলেছে।
এবিষয়ে রাণীনগর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যলয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবহান মৃধা সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিকে বলেন, আমারা কোন প্রকাশনীর সঙ্গে গাইড ও ব্যাকরণ বই বিষয়ে আতাত করিনি।
রাণীনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিকে বলেন, শিক্ষক সমিতি যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই আমাদের সিদ্ধান্ত।
গোনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মখলেছুর রহমান বলেন, কোন বছরেই আমরা কোন প্রকাশনীর কিংবা কোন লাইব্রেরীর সঙ্গে গাইড ও ব্যাকরণ বই বিষয়ে আতাত করি না।
এ রাণীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ঘোষগ্রাম কফিলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোজাহার হোসেন সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিকে বলেন, এই সব বিষয়ে আমার কোন কিছু জানা নেই।
রাণীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিকে বলেন, আমার কাছে এই সব বিষয়ে কোন অভিযোগ আসেনি। আর কোন গাইড ও ব্যাকরণ বই ভালো আর কোনটা মন্দ সেই সম্পর্কে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষরাই ভালো জানেন।
উপজেলার সচেতন মহল শিক্ষার্থীদের নিন্মমানের ভুলে ভরা গাইড ও ব্যাকরণ বই পড়া থেকে বিরত রাখতে ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই চরম ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের জোড়ালো হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।