সোমবার ● ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » কৃষি » আমের মুকুল গাছে গাছে, ছড়াচ্ছে পাগল করা ঘ্রাণ
আমের মুকুল গাছে গাছে, ছড়াচ্ছে পাগল করা ঘ্রাণ
গৌতম কুমার,বগুড়া :: (১৪ ফাল্গুন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সকাল ১১.৪৯মি.) ‘আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা,ফুল তুলিতে যাই, ফুলের মালা গলায় দিয়ে , মামার বাড়ে যাই। ঝড়ের দিনে মামার দেশে, আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসেম রঙিন করি মুখ…।’
পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতার পংক্তিগুলো বাস্তব রূপ পেতে বাকি রয়েছে আর মাত্র কয়েক মাস। তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে। গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ।
বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল।
বগুড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে সরেজমিনে দেখা যায়, আম বাগানের সারি সারি গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ।
তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগান মালিকরা।
এদিকে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলোতে। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে ভাসছে স্বপ্ন। আম্রুপালি, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি ও ক্ষিরসাপা অন্যতম। ইতিমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরও কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলে জানান বাগান মালিকরা।
বাগান মালিক আবদুল হবি ও মালেক জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকে তাদের বাগানে লাগানো আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। কিছু গাছে গাছে মুকুল বের হচ্ছে।
তারা জানান, মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুল রোগ বালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন তারা।
বাগান মালিকরা আরও জানান, বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। এ অবস্থা থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
বগুড়া জেলা কৃষি বিভাগ বলেছেন, প্রাকৃতিক কারণে এবার স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অন্তত ১৫ দিন পরে এলেও জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলার আম বাগান এখন মুকুলে সুরভিত। আর চাষীদের আগ্রহের কারণে জেলায় দিন দিন বাড়ছে আমের বাণিজ্যিক চাষ।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রতুল চন্দ্র সরকার জানান, রাজশাহী বা চাঁপাইনবাবগঞ্জের মতো না হলেও বগুড়ায় বাণিজ্যিকভাবে আম চাষ সম্প্রসারণের চেষ্টা চলছে। এবার আদমদীঘি ও শিবগঞ্জ উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে আম চাষ শুরু হয়েছে। চাষীদের আগ্রহী করে তুলতে বিভিন্ন পর্যায়ে বাগানের যত্ন ও ফল বাজারজাতের বিষয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুল হক জানান, এবার প্রায় ১৫ দিন পর মুকুল এলেও আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। জেলায় বাণিজ্যিকসহ প্রায় ৩ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। আর প্রতি হেক্টরে ফল আসে গড়ে প্রায় ১০ টন।