বৃহস্পতিবার ● ১ মার্চ ২০১৮
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত সিলেটের পশ্চিম নিশ্চিন্ত বিদ্যালয়
উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত সিলেটের পশ্চিম নিশ্চিন্ত বিদ্যালয়
সিলেট প্রতিনিধি :: (১৭ ফাল্গুন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.৪০মি.) সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষণাবন্দ ইউপির পশ্চিম নিশ্চিন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ভবনে কোন রকমে পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন শিক্ষকরা।
১৯৭২ সালে ৩১ শতক জমির উপর প্রতিষ্টিত এ স্কুলটি ১৯৯১-৯২ সালে প্রথম অাধাপাকা একটি ভবন তৈরী হয়। এরপর আর কোন ভবন তৈরী হয়নি। আর আদৌ হবে কি তা কতৃপক্ষের কেউ বলতে পারছেন না।
অনুসন্ধানে জানা যায়, স্কুলে শিক্ষক পদ সংখ্যা ৫ জন থাকলে সেখানে আছেন মাত্র তিনজন । দীর্ঘদিন থেকে প্রধান শিক্ষক পদ খালি রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে কোন রকম পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে কর্মরত আছেন ৩ জন। পুরুষ শিক্ষক ২ জন আর মহিলা শিক্ষিকা ১ জন। ছাত্র ছাত্রী প্রাায় ৮৫ জনের মতো। তবে নতুন বছরে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে শিক্ষকদের আশ্বাস।
প্রাক প্রাথমিকের দায়িত্বে রয়েছেন ফজলুল হক আর সহকারি শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মনোয়ারা বেগম পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত কোনরকম পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখলেও শিক্ষক সংকটের কারণে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদেরকে। আর এদিকে সেলিনা ইয়াসমিন নামের একজন শিক্ষিকা ডেপুটেশনে ২০১৩ সালে সিলেট সদর থানার শাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। কিন্তু এই শিক্ষিকা অফিসিয়ালি কর্মরত বেতন পাচ্ছেন এ স্কুলের।
এদিকে স্কুল শিক্ষিকা সেলিনা ইয়াসমিনের সাথে টেনিফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ থাকার কারনে আমার বাড়ির পাশে স্কুলে বর্তমানে চাকরি করতেছি, সেখানে স্থায়ী করনের আবেদন করেছি। আমার কিডনি সমস্যার কারনে ডাক্তার বলেছে খুব বেশি জার্নি না করতে। সেই বিষয়ে আমরা গোলাপগঞ্জ শিক্ষা অফিসকে অবগত করেছি।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মনোয়ারা বেগম বলেন, আমরা খুবই কষ্টের মধ্যে ক্লাস করাচ্ছি, মাত্র তিনজন শিক্ষক কিভাবে একটি বিদ্যালয়ের ক্লাস করাতে পারে। তাছাড়া স্কুলে বাউন্ডারি থাকলে ও গেইট, ওয়াসরুম, বাথরুম নেই এমনকি নেই একজন নৈশ্য প্রহরী।
আসলে আমাদের স্কুল উন্নয়ন থেকে একে বারেই বঞ্চিত। তিনি বলেন আমাদের স্কুলের শিক্ষার মান খুবই ভাল, বাচ্ছাদের ভাল পড়ানোর জন্য সকল প্রকার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সহির উদ্দিন বলেন, স্বাধীনতার এক বছর পরেই আমাদের এই স্কুল স্থাপিত হলেও এখন পর্যন্ত কোন উন্নত, আধুনিক বিদ্যালয়ে রুপান্তরিত হতে পারেনি আমাদের এই বিদ্যানিকেতন। বিদ্যালয়ের একটি ভবনের খুবই প্রয়োজন। এখন অধাপাকা যে ভবনটি আছে তার টিনসেডে পানি পরে, আমরা কয়েকদিন আগে সরকারীভাবে অল্প কিছু টাকা দিয়ে সামান্য কয়েকটি টিন পরিবর্তন করেছি, কিন্তু এখন সামান্য একটু বৃষ্টি হলে টিন দিয়ে পানি পড়ে এবং শিশুদের বই, খাতা বিজে যায়। তাছাড়া আর ও বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আছি আমরা এই স্কুলে। তাই আমি আপনাদের মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি দেওয়ার অনুরোধ করছি।
এদিকে এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক আলাউদ্দিন আহমদ বলেন, আমাদের গ্রামের একটি মাত্র স্কুল হচ্ছে পশ্চিম নিশ্চিন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আমাদের অনেক স্বপ্ন এই বিদ্যালয় নিয়ে। বিদ্যালয়টি নানা সমস্যায় জর্জরিত। তাই আমি মাননীয় শিক্ষামন্ত্রির দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে স্কুলের সমস্যা গুলো সমাধান করা হোক।