মঙ্গলবার ● ১৩ মার্চ ২০১৮
প্রথম পাতা » ময়মনসিংহ » সবুজ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের ৫ মাস ২৪ দিন পর পরিবারের কাছে কঙ্কাল হস্তান্তর
সবুজ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের ৫ মাস ২৪ দিন পর পরিবারের কাছে কঙ্কাল হস্তান্তর
ময়মনসিংহ অফিস :: (২৯ ফাল্গুন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.১৬মি.) ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে সবুজ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের ৫ মাস ২৪ দিন পর আদালতের নির্দেশে নিহতের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করেছে পুলিশ। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নিখোঁজ হওয়ার পর ফুলবাড়িয়া উপজেলায় ঝোপ থেকে সুটকেসে ভর্তি মুখ ঝলসানো,হাত-পা বাঁধা অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের পর আঞ্জুমানে মফিদুলের মাধ্যমে দাফন পরবর্তীতে হত্যা কান্ডের রহস্য উদ্ঘাটনের ৫ মাস ২৪ দিন পর মঙ্গলবার পরিবারের কাছে নিহত সবুজের লাশ(কঙ্কাল)হস্তান্তর করা হয়।
আজ ১৩ মার্চ মঙ্গলবার নগরীর ভাটিকাশরে আঞ্জুমানে মফিদুলে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা লাশ নিহত সবুজের সনাক্তের পর ময়মনসিংহ আদালতের নির্দেশে উত্তোলন করে ঈশ্বরগঞ্জের নাউরী গ্রামে নিহতের পরিবারের কাছে কঙ্কাল হিসেবে হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরগঞ্জের মগটুলা ইউনিয়নের নাওরী গ্রামের নুরুল আমীন ভূঁইয়ার ছেলে সবুজ মিয়া (৩৮)’র কাছ থেকে একই উপজেলার মধুপুর গ্রামের নূর উদ্দিন ফকিরের মেয়ে লাভলী আক্তার দাদনে টাকা নেয়। প্রায় ১৩ লাখ টাকা গত ২১ সেপ্টেম্বর সবুজ মিয়াকে ফেরত দেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু টাকার চাপে দিশেহারা লাভলী টাকা আনতে যাওয়া সবুজ মিয়াকে টাকা ফেরত না দিয়ে হত্যা করে লাশ সুটকেটে ভরে গুমের চেষ্টা করে।
এদিকে গত ২৩ সেপ্টেম্বের ফুলবাড়িয়া উপজেলার দেওখোলা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর বড়ই আটা এলাকায় ফুলবাড়িয়া-ময়মনসিংহ সড়কের পাশের একটি ঝোপ থেকে সুটকেসে ভর্তি মুখ ঝলসানো,হাত-পা বাঁধা অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ।
পুলিশ নিহতের ছবি ও বিভিন্ন আলমত সংগ্রহ শেষে পরিচয় সনাক্ত না হওয়ায় ময়মনসিংহের ভাটিকাশরে দাতব্য সংস্থা আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করে।
পরে নিহতের পরিবার খোঁজ নিতে গিয়ে সবুজের পরিধেয় কাপড় ও ছবি দেয়ে লাশটি তার বলে শনাক্ত করার পর এ ঘটনায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর নিহতের পরিবারের সদস্য মোনায়েম ভুঁইয়া বাদি হয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করে। থানা পুলিশের মামলার প্রেক্ষিতে ময়মনসিংহ গোয়েন্দা পুলিশ গত ২৭ সেপ্টেম্বর দাদনের টাকা নেয়ায় জড়িত লাভলী আক্তারকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করে। পরে হত্যাকান্ডের মূল হোতা লাভলীকে ময়মনসিংহ আদালতে সোপর্দের পর লাভলী আদালতে সবুজ হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিতে এ হত্যাকান্ডে অংশ নেয়া চারজনের নাম প্রকাশ সেইসাথে ‘দাদনের টাকার চাপে দিশেহারা হয়ে সবুজকে হত্যার লোমহর্যক বর্ণনা দেয় বলে আদালত পুলিশ সূত্র জানায়। পরে পুলিশ এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আরও তিন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করলে তারাও হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তি দেয় বলে জানায় পুলিশ।
এ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ময়মনসিংহ ডিবির এসআই মো. ইখতিয়ার উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, আসামি লাভলী ‘দাদনে নেয়া টাকার চাপে সবুজকে হত্যা করে।’ মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলনের পর পরিবারের কাছে লাশ(কঙ্কাল)হস্তান্তর করা হয়েছে।