বুধবার ● ১৪ মার্চ ২০১৮
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বনাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে আত্মহত্যার প্রবণতা: ১ মাসে ৬ আত্মহত্যা
বিশ্বনাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে আত্মহত্যার প্রবণতা: ১ মাসে ৬ আত্মহত্যা
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: (৩০ ফাল্গুন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.২৮ মি.) সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় এক মাসে ৬ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। ফলে এলাকায় আত্মহত্যার প্রবণতা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরমধ্যে ৫ নারী ও ১ পুরুষ আত্বহত্যা করেছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সামাজিক অস্থিশীলতা ও নিয়ন্ত্রণহীনতায় আবেগ ও অবিশ্বাসের কারণেই এ ধরনের আত্মহত্যার ঘটছে। গত ৭ ফেব্রুয়ারী বিশ্বনাথে স্বামীর অত্যাচার সইতে না পেরে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন রহিমা বেগম (৩৮) নামের ৪ সন্তানের জননী। উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামপাশা দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। রহিমা ওই গ্রামের আমির আলীর স্ত্রী।
গত ১ ফেব্রুয়ারী বিশ্বনাথে সিমা বেগম (১৭) নামের এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। সে উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের উত্তর দশপাইকা গ্রামের আবদুল মতিনের মেয়ে। সে নিজ ঘরে গলায় উড়না পেছিয়ে আত্মহত্যা করে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারী বিশ্বনাথে কথিত প্রেমিক সুমনের প্রতারণা সহ্য করতে না পেরে তাছলিমা খানম রিমা (১৬) নামের এক কলেজ ছাত্রীর আত্মহত্যা করে। নিহত রিমা বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক, লামাকাজী ইউনিয়নের বিদ্যাপতি (কেশবপুর) গ্রামের ডাক্তার শাহানুর হোসাইন’র মেয়ে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারী দিবাগত রাতে নিজ বাড়ির শয়নকক্ষের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে নিজ ওড়না গলায় পেছিয়ে সে আত্মহত্যা করে। রিমা ‘সিলেট মইন উদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজে’র একাদশ শ্রেনীতে অধ্যায়নরত ছিলো। গত ২১ ফেব্রুয়ারী বিশ্বনাথে রুমন খান (২৭) নামের এক যুবক আত্বহত্যা করে। সে উপজেলার জাহারগাঁও গ্রামের রহমত খানের পুত্র। গত ২ মার্চ বিশ্বনাথে যুক্তরাজ্য প্রবাসীর স্ত্রী শিরিয়া বেগম (৪০) নামের দুই সন্তানের জননী গলায় রশি পেছিয়ে আত্মহত্যা করেন। তিনি উপজেলার নোয়াগাঁও পূর্বপাড়া গ্রামের প্রবাসী মাসুক মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী।
সবশেষে গত ১২ মার্চ সোমবার উপজেলার শাবান টেংরা গ্রামের সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী নূর জাহান সিদ্দিকা রিমা (২৫) নামের এক সন্তানের জননী গলায় ওড়না পেছিয়ে আত্বহত্যা করেন। তিনি উপজেলার অলংকারি ইউনিয়নের শাবান টেংরা গ্রামের সৌদি প্রবাসী জালাল হোসেনের স্ত্রী।
এলাকার সচেতন মহলের কয়েকজন জানান, নৈতিক মূল্যবোধের অভাব, পারিবারিক বন্ধন দুর্বল হয়ে পড়া, খেলার সাথী না পাওয়া এবং সর্বেপারি বিজাতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসনকেই এক্ষেত্রে দায়ী। তবে কর্মক্ষেত্রে বা পারিবারিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন অবিশ্বাস ও সন্দেহ থেকে এরকম ঘটনা ঘটে যায়। এক্ষেত্রে সকলেরই দায়িত্বশীল আচরণ এবং পারস্পারিক সহযোগিতা খুবই প্রয়োজন।
তারা মনে করেন, আত্মহত্যা প্রবনতা থেকে মুক্তি পেতে হলে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করার পাশাপাশি নৈতিক মূল্যবোধের চর্চা করতে হবে।
এ ব্যাপারে ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, প্রতিটি আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় অপমৃত মামলা দায়ের হয়েছে।