রবিবার ● ২৭ মে ২০১৮
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » অপেক্ষা বাড়ছে সিলেটে পাসপোর্ট আবেদনকারীদের
অপেক্ষা বাড়ছে সিলেটে পাসপোর্ট আবেদনকারীদের
সিলেট প্রতিনিধি :: (১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.৪৪মি.) সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে আবেদন করেও দীর্ঘদিন ধরে পাসপোর্ট পাচ্ছেন না তারা আবেদনকারীরা। অথচ পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সিটিজেন চার্টারে উল্লেখ রয়েছে- সাধারণ আবেদনকারীর (যারা ৩ হাজার টাকা ফি দিয়ে আবেদন করেন) পুলিশ প্রতিবেদন পাওয়ার ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে। আর জরুরী আবেদনকারীর (৬ হাজার টাকা ফিস দিয়ে আবেদন) পুলিশ প্রতিবেদন পাওয়ার ৭ কর্মদিবসের মধ্যে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট (এমআরপি) পাসপোর্ট আবেদনকারীকে প্রদান করা হবে।
সংশ্লিস্টদের মতে, সাধারণ আবেদনকারীরও পুলিশ প্রতিবেদনসহ পাসপোর্ট পেতে সর্বোচ্চ এক মাস সময় প্রয়োজন হয়। অথচ সিলেটে চলতি বছরের শুরু থেকে তিনমাস আগে আবেদন করেও এখনো অনেকে পাসপোর্ট বুঝে পাননি।
তবে সংশ্লিস্টরা জানিয়েছেন, পাসপোর্ট (এমআরপি) বইয়ের সংকট থাকায় আবেদনকারীদের যথাসময়ে পাসপোর্ট সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। শুধু সিলেট নয়, সারা দেশেই এ সমস্যা চলছে।
পাসপোর্ট অফিসের একটি সূত্র জানিয়েছে, পাসপোর্ট বই সংকট কাটানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে ইংল্যান্ড থেকে পঞ্চাশ লাখ পাসপোর্ট বই ছাপিয়ে আনা হচ্ছে। এসব বই পৌঁছানোর পর চলমান সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক এ কে এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, কয়েকটি দেশ অবৈধ বাংলাদেশিদের বৈধ হওয়ায় সুযোগ প্রদান করেছে। ফলে এরা নতুন করে পাসপোর্ট তৈরি করে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাসপোর্টের এই চাপের কারণে পাসপোর্ট বইয়ের সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। ফলে অনেক আবেদনকারীর পাসপোর্ট পেতে বিলম্ব হচ্ছে। সারাদেশেই এই সমস্যা হচ্ছে।
তিনি বলেন, পাসপোর্টের আবেদন পাওয়ার পর সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সাত-আট দিনের মধ্যে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। ঢাকা থেকে পাসপোর্ট বই এলে আমরা তা আবেদনকারীর হাতে পৌঁছে দেই। ঢাকা থেকে বই আসতে দেরি হলে সিলেট অফিসে কিছু করার থাকে না।
যথাসময়ে পাসপোর্ট না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন জরুরী প্রয়োজনে বিদেশ যাত্রীরা। চিকিৎসা, ব্যবসা ও উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশ যেতে ইচ্ছুকদের বিদেশ যাত্রা আটকে আছে পাসপোর্টেও দীর্ঘসূত্রিতায়।
প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের প্রতিবছরই বিপুল সংখ্য লোক কাজের জন্য বাইরে যান। উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ যাওয়ার প্রবণতাও বেড়েছে।
এছাড়া সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় ভারতের সাথে রয়েছে এখানকার ব্যবসায়ীদের ব্যবসা-বাণিজ্য। চিকিৎসার প্রয়োজন এবং ভ্রমণের জন্যও ভারত যান অনেকে। পাসপোর্ট জটিলতায় ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা সবাই।
আবেদনকারী কয়েকজন জানান, পাসপোর্ট প্রাপ্তির নির্ধারিত তারিখে তারা পাসপোর্ট অফিসে গিয়েও তা হাতে পাননি। অফিস থেকে পাসপোর্ট পেতে দেরি হবে বলে জানানো হলেও নিশ্চিত করে কোনো তারিখ দেওয়া হচ্ছে না।
সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে জরুরী আবেদন করে দুই মাস ধরে পাসপোর্টের জন্য অপেক্ষারত সিলেটের হেতিমগঞ্জের রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে আমার খাদ্যনালীতে ক্যান্সার ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা কেমোথেরাপি নেওয়ার পরামর্শ দেন। ভারতে গিয়ে এই থেরাপি নেওয়ার খতা বলেন আমার স্বজনরা। সে জন্য পাসপোর্টের আবেদন করেছিলাম। কিন্তু দুই মাসে পাসপোর্ট পাইনি।
এদিকে, পাসপোর্টেও অপেক্ষায় থেকে বাংলাদেশেও চিকিৎসা শুরু হয়নি। অথচ ক্যান্সার দিনদিন শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে।
সিলেট নগরীর একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পাসর্পোটের আবেদন করেছিলেন আরও আগে। প্রায় আড়াইমাস পেরিয়ে গেলেও এখনো পাসপোর্ট পাননি তিনি। পাসপোর্ট না পাওয়ায় আটকে আছে উচ্চ শিক্ষার জন্যে অভির পোল্যান্ড যাওয়ার প্রক্রিয়া। কেবল এই দুজন নয়, এমন ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক শ’ পাসপোর্ট প্রত্যাশী।