সোমবার ● ১৫ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » একাধিকবার তদন্তে থানা পুলিশ ও পিবিআই ব্যার্থ : পুনঃতদন্তের জন্য বিশ্বনাথ থানার ওসি’কে আদালতের নির্দেশ
একাধিকবার তদন্তে থানা পুলিশ ও পিবিআই ব্যার্থ : পুনঃতদন্তের জন্য বিশ্বনাথ থানার ওসি’কে আদালতের নির্দেশ
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: (৩০ আশ্বিন ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১০.০৩মি.) সিলেটের বিশ্বনাথে প্রায় ১৭মাস পূর্বে এক অজ্ঞাত নারী হত্যা মামলার তদন্তে ব্যর্থ হয়েছেন থানা পুলিশের তৎকালিন তদন্তকারি কর্মকর্তা। শুধু তাই নয় পরবর্তীতে ওই মামলা তদন্তে ব্যার্থ হয়েছেন দুইজন পিবিআই’র তদন্তকারি কর্মকর্তাও। অবশেষে এই মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি)’কে নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। সম্প্রতি টাঙ্গাইল থেকে রুমি আক্তার নামের এক কিশোরীকে বিশ্বনাথে এনে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করে আসামি উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত ওয়াহাব উল্লার পুত্র পেশাদার খুনি ও গণধর্ষণ মামলার আসামী শফিক মিয়ার কাছ থেকে সেই নারী হত্যার স্বীকারোক্তীও আদায় করেন বিশ্বনাথ থানার ওসি। এরপর আদালতে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমূল জবানবন্দিতে ১৭মাস পূর্বে একই স্থানে সেই অজ্ঞাত নারী হত্যার দায় স্বীকার করে ঘাতক শফিক। ফলে গত ১অক্টোবর ওই মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য বিশ্বনাথ থানার ওসিকে এই নির্দেশ দেন আদালত।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২২এপ্রিল উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের আইয়ব আলীর বাড়ির সামন থেকে এক অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। তৎকালিন থানা পুলিশের এসআই রফিক বাদি হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েল করেন। বিশ্বনাথ থানায় মামলা নং-১১ ও জিআর মামলা নং- ৬৫/১৭। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান তৎকালি থানার ওসি তদন্ত কামাল হোসেন। এসময় এই লাশের সাথে থাকা ব্যানেটি ব্যাগের ভেতরে পলিথিনে মুড়ানো রামচন্দ্রপুর গ্রামের ইমরান আহমদ রিয়াদ ও দুলাল আহমদ নামের দুই যুবকের ছবি পাওয়া যায়। ওই ছবিগুলো ফেসবুক থেকে প্রিন্ট করে শত্রুতা মেটাতে লাশের ব্যাগে রাখে ঘাতক সফিক মিয়া। আর এ দুটি ছবির উপর ভরসা করে ইমরান আহমদ রিয়াদ ও লুৎফুর রহমান নামের দু’জনকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। মামলায় রিয়াদ ও লুৎফুর প্রায় ৬মাস হাজতবাস করেন। কিন্তু কামাল হোসেন মামলা তদন্তে ব্যার্থ হলে ১মাস ৯দিন পর ওই মামলাটি সিলেটের পিবিআই’র কাছে প্রেরণ করা হয়। সেখানে প্রথমে এই মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক সুনীল রঞ্জন দাস। তিনি মামলাটি ২০১৭ সালের ১জুন থেকে তদন্ত শুরু করে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত তদন্ত করেন। তার বদলি জনিত কারনে এই মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান একই সংস্থার পুলিশ পরিদর্শক মোহন লাল তালুকদার। তিনি প্রায় ৮মাস তদন্ত করে চলতি বছরের ২৪ জুলাই ওই মামলাটির চুড়ান্ত রির্পোট (চার্জশীট) আদালতে দাখিল করেন। অজ্ঞাতনামা ভিকটিমকে কে বা কারা হত্যা করেছে এর তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করা সম্ভব না হওয়ায় উক্ত মামলা থেকে সন্ধিগ্ধ আসামী ইমরান আহমদ রিয়াদ ও লুৎফুর রহমানকে অব্যাহতি প্রদানে জন্য ওই চুড়ান্ত রিপোর্টে আবেদন জানান পিবিআই’র কর্মকর্তা মোহন লাল তালুকদার। কিন্তু এর পূর্বেই ইমরান ও লুৎফুরকে গ্রেফতার করে হয়রানি করা হয়। গত ১০ সেপ্টেম্বর কিশোরী রুমি আক্তারের লাশ উদ্ধারের পর ঘাতক সফিক মিয়া’কে গ্রেফতার করা হলে সে রুমিকে খুন করার ১৭মাস পূর্বে ওই নারীকেও খুন করেছে বলে স্বাকারোক্তী দিয়েছে। এই স্বীকরোক্তী আদায় করায় পূর্বের ওই মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য বিশ্বনাথ থানার বর্তমান ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম’কে নিদের্শ দিয়েছেন আদালত।
আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ওসি বলেন, ওই শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন- অজ্ঞাতনামা নারী হত্যা মামলার তদন্ত অনেকটা এগিয়ে গেছে। কিছু দিনের ভেতরই রহস্য উদ্ঘাটন হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।