বৃহস্পতিবার ● ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » পিসিপি’র রাঙামাটি জেলা কমিটি গঠন
পিসিপি’র রাঙামাটি জেলা কমিটি গঠন
ষ্টাফ রিপোর্টার :: ২৪ সেপ্টেম্বর : রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, দমন-পীড়ন, নির্যাতন থেকে জাতিকে রক্ষার্থে ছাত্র সমাজ ঐক্যবদ্ধ হোন” এই আহ্বানে ইউপিডিএফ সমর্থীত পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর রাঙামাটি জেলা শাখার ৬ষ্ঠ কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে। এতে অনিল চাকমা সভাপতি ও কুনেন্টু চাকমা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় কুতুবছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের হলরুমে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সকল শহীদদের স্মরণে ২ মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। পিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি বাবলু চাকমার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অনিল চাকমার সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অংগ্য মারমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য রতন স্মৃতি চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য মন্টি চাকমা প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিসিপি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নিউটন চাকমা।
কাউন্সিলের অধিবেশনে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অংগ্য মারমা বলেন, সরকার ‘‘ভাগ করো শাসন করো’’ এই নীতির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে মূলত পাকিস্তানী কায়দায় উপনিবেশিক শাসন-শোষণ চালাচ্ছে। আমাদের মধ্যে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত চলতে থাকলে আমরা কোনভাবেই এই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে পারবো না। সংঘাত চলমান থাকলে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন যেমনি হবে না, তেমনি পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের সংগ্রামকেও বেগবান করতে পারবো না। তাই পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য বিভেদ নয়, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
প্রতিনিয়ত অন্যায় ধরপাকড় চালানো হচ্ছে। তিনি সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বে ছাত্র সমাজকে সংগঠিত হতে হবে। তাদেরকে চিন্তা-চেতনায় আদর্শিকভাবে গড়ে উঠতে হবে। অন্যথায় ছাত্র সমাজ পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমিকা রাখতে পারবে না।
বাবলু চাকমা বলেন, সরকার উন্নয়নের নামে পাহাড়িদের জায়গা-জমি দখল করার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ না চাইলেও সরকার জোর করে মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করছে। এই পদক্ষেপ থেকে না বোঝার কোন অবকাশ নেই যে সরকার কি করতে চাচ্ছে।
বাবলু চাকমা আরো বলেন, সরকার একদিকে ভূমি বেদখল, অন্য দিকে দমন-পীড়ন, নির্যাতন, জেলে প্রেরণ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন দমনের চেষ্টা করছে। তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, দমন-পীড়ন, নির্যাতন চালিয়ে, মিথ্যা মামলা দিয়ে, জেলে পুড়ে, হত্যা করে আমাদের আন্দোলন দমন করা যাবে না।
ইউপিডিএফ এর কেন্দ্রীয় সদস্য দেবদন্ত ত্রিপুরা এবং পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কাউখালী উপজেলা শাখার সভাপতি কংচাই মারমাসহ মিথ্যা মামলায় আটক সকলকে নিঃশর্তে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান।
কাউন্সিল অধিবেশন থেকে অবিলম্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অগণতান্ত্রিক ১১ নির্দেশনা বাতিলপূর্বক অন্যায় ধরপাকড় বন্ধ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে সাধারণ সম্পাদক অনিল চাকমা সাংগঠনিক রিপোর্ট তুলে ধরেন। রিপোর্ট তুলে ধরার পর প্রতিনিধিরা বিভিন্ন বিষয়ে সংযোজন-বিয়োজন করেন। পরে সকলের করতালির মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক তার সাংগঠনিক রিপোর্টটি পাশ করে ।
কাউন্সিল অধিবেশনে উপস্থিত সকল প্রতিনিধিদের সর্বসম্মতিক্রমে অনিল চাকমাকে সভাপতি, কুনেন্টু চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক ও আসেন্টু চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট রাঙামাটি জেলা শাখার নতুন কমিটি গঠন করা হয়। পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সদস্য রতন স্মৃতি চাকমা নতুন কমিটির সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান।
কাউন্সিল অধিবেশন শেষে নতুন কমিটির নেতৃত্বে কুতুবছড়ি ইউপি কার্যালয়ের সামনে থেকে ১টি প্রচার মিছিল করে মহাপূরম উচ্চ বিদ্যালয়ের গেটের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন। পিসিপি নেতৃবৃন্দ আগামীতে যেকোন পরিস্থিতিতে আন্দোলন সংগ্রাম পরিচালনার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
আপলোড : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ : বাংলাদেশ : সময় সন্ধ্যা ৭.২৪ মিঃ