শনিবার ● ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » পাবনা » চলনবিল এখন মধু’র ভান্ডার
চলনবিল এখন মধু’র ভান্ডার
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি :: ঋতুর পালা বদলে শীতের আগমণী বার্তায় উত্তরাঞ্চলের চলনবিলের মাঠে মাঠে এখন সৌন্দর্য্যমন্ডিত হলুদ সরিষা ফুল। গ্রামের দিগন্ত মাঠ সেজেছে হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহে। উত্তরাঞ্চলের চলনবিলের এখন মাছ ছাড়াও ধান, শরিষা, রসুনের পাশাপাশি মধু উৎপাদনে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছে। মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা বিলাঞ্চল। এ অঞ্চলের ফসলের মাঠে এখন সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। মাঠ জুড়ে হলুদ ফুলের দৃষ্টিনন্দন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। মধু উৎপাদনে চলনবিলে এক নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উম্মোচিত হয়েছে। এ মৌসুমে দেশে বিভিন্ন স্থান থেকে চলনবিলে মৌ চাষীরা এসেছে মধু সংগ্রহে। ইতিমধ্যেই এ বছর চলনবিলে প্রায় ৩ শ’ মৌ-চাষীরা হাজার হাজার মৌ বক্স নিয়ে এসেছেন মধু সংগ্রহের জন্য । সরিষার ক্ষেতের পাশে স্থাপন করেছে শত শত মৌ বক্স।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলনবিল অঞ্চলের চাটমোহর, বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর, সিংড়া, তাড়াশ, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলায় চলতি রবি মওসুমে ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন আগাম ও নাবী জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। চলনবিল মাঝ বরাবর বনপাড়া-হাটিকুমরুল যমুনা সেতু সংযোগ মহাসড়কের দু’ধারে মাঠের পর মাঠ দৃষ্টিনন্দন মনোমুগ্ধকর থোকা থোকা হলুদ ফুলের চাঁদর বিছানো।
চলতি মওসুমে যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে চলনবিল থেকে এক হাজার ৫’শ থেকে একহাজার ৬’শ টন মধু আহরণের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানালেন উত্তরাঞ্চল মৌ চাষী সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম। যার বর্তমানে বাজার মূল্য প্রতি কেজি সর্বনিন্ম ২০০ টাকা হিসেবে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। প্রায় এক মাস আগে বগুড়া, যোশর, কুষ্টিয়া, খুলনা, সাতক্ষীরা, পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ৭ শতাধিক প্রশিক্ষিত মৌ খামারি চলনবিলে অস্থায়ী আবাস গেড়েছেন। মৌ চাষিরা সরষে ক্ষেতের ৪০ থেকে ৫০ হাজার মৌ বাক্স বসিয়েছেন। প্রতি বছর নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সরষে ফুলের মধু আহরণ চলে। এসময় গড়ে একেকজন মৌ চাষি গড়ে দুই থেকে আড়াই টন মধু আহরণ করতে পারেন। প্রতিটি বক্স থেকে সপ্তাহে ৫ থেকে ৬ কেজি করে মধু সংগ্রহ হয়ে থাকে। আর সপ্তাহ শেষে ঢাকা থেকে মধু সংগ্রহ কারি বিভিন্ন কোম্পানির লোক এসে প্রতিমন মধু ৪ হাজার থেকে ৪৫ শ” টাকা করে ক্রয় করে নিয়ে যায়।
সাতক্ষীরা থেকে আসা মৌ-চাষী আবুল আলীম জানান, আমরা প্রতিবছর এ সময় চলনবিলে আসি মধু সংগ্রহ করতে। আমার খামারে ২৫০ টি মৌ-বক্্র আছে। প্রতিটি বক্্র থেকে সপ্তাহে ৫ থেকে ৬ কেজি করে মধু সংগ্রহ করতে পারি। কাম্পানির লোক এসে প্রকার ভেদে প্রতিমন মধু ৪ হাজার থেকে ৪৫ শ” টাকা করে ক্রয় করে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সরিষা ও মৌ-চাষে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। আশা করছি এ বছর সরিষার বাম্পার ফলন হবে ও ২০ থেকে ২৫ মেট্রিকটন মধু সংগ্রহ হবে ।