মঙ্গলবার ● ২৬ মার্চ ২০১৯
প্রথম পাতা » কৃষি » রাউজানে বোরো চাষে পর্যাপ্ত সুবিধা থাকলেও আগ্রহ নেই কৃষকদের
রাউজানে বোরো চাষে পর্যাপ্ত সুবিধা থাকলেও আগ্রহ নেই কৃষকদের
রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :: চট্টগ্রামের রাউজানে কৃষিজীবিদের জন্য বোরো ধানের চাষাবাদের জন্য সব সেবা নিশ্চিত করা হলেও কৃষকরা চাষাবাদের প্রতি দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে! বিশেষ করে কৃষকরা বোরো চাষাবাদ থেকে দিনের পর দিন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে একমাত্র লোকসানের অভিযোগে এনে।
সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, শতশত একর কৃষি জমিতে এবার বোরো চাষ হচ্ছে না। কৃষকরা বলেছেন বোরো চাষে জমিতে নেমে প্রতি বছর তারা লোকসান গুনেছেন প্রতিনিয়ত। বোরো চাষাবাদে নেমে লোকসানের ঘানি আর টানতে চান না তারা।
সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, উপজেলার পাহাড়তলী, কদলপুর, হলদিয়া, ডাবুয়া, বাগোয়ান ও নোয়াজিশপুরে কিছু জমিতে বোরো চাষ হলেও ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে অন্যান্য ইউনিয়নের বড় বড় বিল খালি পড়ে আছে। এলাকায় যারা বাপ দাদার পেশা হিসাবে কৃষিকাজকে বেঁচে নিয়েছিল তারা এখন বলছে এই কাজে জড়িয়ে তারা আর লোকসান দিতে চান না। মৃদুল দে নামের এক কৃষক বলেছেন রাউজানে যারা কৃষিজীবি তারা প্রায় সকলেই কামলা নির্ভর। গৃহকর্তা এই পেশায় থাকলেও পরিবারের অন্য কোনো সদস্যকে পাওয়া যায় না মাঠে সহযোগি হিসাবে। এ কারণে দৈনিক আট’শ টাকা মুজুরীতে কামলা নিয়োগ করে যে উৎপাদন পাওয়া যায়, তা বিক্রি করে কামলার মুজুরীও উঠানো সম্ভব হয় না বলে কৃষিজীবিরা দিন দিন বোরো চাষাবাদে আগ্রহ হারাচ্ছে।
আবদুল করিম নামের অপর এক কৃষিজীবি বলেছেন রাউজানের নব্বই শতাংশ জমির মালিক কৃষিকাজ করেন না। তারা নিজেদের জমি লাগিয়ত করেন বর্গা চাষীদের। বর্গা চাষীরা চাষ করে জমিদারের খাজনার পাশাপাশি মুজরী দিতে হয় কামলাদের। চাষাবাদের লাভ লোকসান হিসাব করে অনেক কৃষক কৃষিকাজ ছেড়ে দিয়েছে।
উপজেলা সুত্রে, রাউজানের কৃষকদের চাষাবাদে সুবিধায় উপজেলার প্রতিটি খাল খনন করে দিয়ে পানি প্রবাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। বীজ, সার কিটনাশক পাওয়া সহজতর করা হয়েছে। দেয়া হয়েছে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম। সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়ার ব্যবস্থা বিদ্যমান আছে। কৃষিজীবিদের জন্য এই সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করেছেন রাউজানের সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার সুশিল বোরো চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ হারানোর কথা স্বীকার করে বলেছেন অনেক কৃষক বোরো মৌসুমে ধান বীজ রোপন না করলেও অনেকেই জমিতে বিকল্প ফসল উৎপাদন করে। তিনি জানান এবার রাউজানে বোরো চাষাবাদের টার্গেট পূরণ করা যায় নি। পূর্ব নির্ধারিত পাঁচ হাজার চারশত হেক্টর জমির মধ্যে এবার বোরো চাষ হয়েছে তিন হাজার তিন শত হেক্টর জমিতে। তবে স্থানীয়দের মধ্যে যারা এই নিয়ে ধারণা রাখেন তারা মনে করেন রাউজানে এবার বোরো চাষাবাদ এর আওতায় আসা জমির পরিমান দুই হাজার হেক্টরও হবে না।