শুক্রবার ● ১২ এপ্রিল ২০১৯
প্রথম পাতা » পাবনা » চাটমোহরে ভূয়া চিকিৎসক আটক
চাটমোহরে ভূয়া চিকিৎসক আটক
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি :: পাবনার চাটমোহরের বিলচলন ইউনিয়নের উত্তরসেনগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ে এক ভূয়া চিকিৎসককে আটক করেছে এলাকাবাসী। ১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে আটক করা হয়।
ভূয়া এ চকিৎিসকের নাম ডা. মো. মনজুরুল ইসলাম প্রকাশ মাসুম। এ চিকিৎসককে আটকের খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে আসেন প্রকৃত চিকিৎসক।
জানা গেছে, নাটোরের গুরুদাসপুরের আনোয়ার হোসেন চক্ষু ও জেনারেল হাসপাতালের আয়োজনে চাটমোহরের বিলচলন ইউনিয়নের উত্তরসেনগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে ১১ এপ্রিল চক্ষু মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে মর্মে গত কয়েক দিন যাবত মাইকে প্রচার প্রচারণা চালানো হয় ও লিফলেট বিতরণ করা হয়। লিফলেটে প্রচারণা চালানো হয় ঢাকার ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞ সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ আলী ও ডা. মো. মনজুরুল ইসলাম মাসুম মাত্র ৩০ টাকা ফি নিয়ে রোগী দেখবেন। ছানী রোগিদের নাম মাত্র মূল্যে আমেরিকান/ইন্ডিয়ান লেন্স দিয়ে ঢাকা ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ সার্জন দ্বারা নেত্র নালী, চোখের মাংস বৃদ্ধি, বা পর্দা অপারেশন করানো হবে। এমন চটকদার বিজ্ঞাপন প্রচারের পর ১১ এপ্রিল উত্তর সেনগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ে চিকিৎসা সেবা শুরু করেন ডাঃ মো. মনজুরুল ইসলাম মাসুম। তবে ডা. মোহাম্মদ আলী অনুপস্থিত ছিলেন। সকাল থেকেই রোগির ভিড় জমে যায়। প্রধান শিক্ষকের সাথে দেখা না করেই বা অনুমতি না নিয়েই তিনি রোগি দেখা শুরু করেন এবং ডা. মোহাম্মদ আলীর প্যাডে নিজের স্বাক্ষর দিয়ে প্রেসক্রিপশন করেন। এ সময় কয়েকজন রোগিকে উন্নত চিকিৎসা করানো প্রয়োজন বলে ৪/৫ হাজার করে টাকা দাবী করেন এ ভূয়া চিকিৎসক। বিষয়টি সন্দেহ জনক হওয়ায় উত্তরসেনগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ডা. মো. মনজুরুল ইসলাম মাসুমকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি আনোয়ার হোসেন চক্ষু ও জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত ডিপ্লোমাধারী বলে জানান। এ খবর ছড়িয়ে পরলে এলাকাবাসী তাকে প্রধান শিক্ষকের রুমে বসিয়ে রাখে। তার সহযোগি নার্সেরও কোন রকম প্রশিক্ষণ নেই বলে জানা গেছে।
ডা. মো. মনজুরুল ইসলাম বলেন, তিনি একজন ডিপ্লোমা ধারী চিকিৎসক। তবে ডিপ্লোমার কাগজপত্র দেখাতেও তিনি ব্যর্থ হন। তিনি রোগি দেখে ডা. মোহাম্মদ আলীর প্যাডে প্রেসক্রিপশন করছিলেন। তিনি এটা করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে ভূল হয়েছে বলে জানান। দুপুরের পর ডা. মোহাম্মদ আলী ঘটনাস্থলে পৌছে উপস্থিত জনতার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং কিছু রোগির টাকা ফেরত দেন।
স্থানীয়রা এ ঘটনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার অসীম কুমার ও থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ নাসীর উদ্দিনকে অবহিত করলে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এস আই নাসির উদ্দিন। তারা ডা. মোহাম্মদ আলী, ভূয়া ডা. মো. মনজুরুল ইসলাম, তাদের সহযোগি নার্স ও এই টিমের অপর এক ব্যক্তিকে থানা হেফাজতে নিয়ে আসেন।
নটাবারিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য হোসেন আলী, বর্তমান ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফাসহ এলাকাবাসী বলেন, এ ধরনের ঘটনায় আমরা বিস্মিত।
রাতে সহকারী কমিশনার ভূমি অভিযুক্তদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। স্বাক্ষ্য প্রমানের পর দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ভূয়া ডা. মো. মনজুরুল ইসলাম কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন তিনি।
চাটমোহরে ট্রাকের ধাক্কায় অটোভ্যান যাত্রী দুই গৃহবধূ নিহত
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি :: পাবনার চাটমোহরে ট্রাকের ধাক্কায় অটোভ্যানযাত্রী দুই মহিলা নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে পাবনা-চাটমোহর মহাসড়কের শিমুলতলা এলাকায় এ দূর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, পাবনা সদর উপজেলার বাংলাবাজার এলাকার রবিউল ইসলামের স্ত্রী হাসিনা খাতুন (৪৫) ও লস্করপুর গ্রামের মতিয়ার হোসেনের স্ত্রী ফিরোজা খাতুন (৪৮)। আহত হয়েছেন আনছার আলীসহ আরো দুইজন।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে তোফাজ্জল প্রামানিকের বাড়িতে তার কয়েকজন আত্মীয় বেড়াতে আসেন। বিকেলে একটি ব্যাটারি চালিত অটোভ্যানে চড়ে বাড়ি ফেরার পথে শিমুলতলা এলাকায় আঞ্চলিক সড়ক থেকে পাবনা-চাটমোহর মহাসড়কে ভ্যানটি ওঠার সময় চাটমোহর থেকে পাবনাগামী দ্রুত গতির একটি ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট-১১-০০৭৯) ধাক্কা দিলে ভ্যানের আরোহীরা গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে পাবনা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসিনা খাতুন ও ফিরোজা খাতুনকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে দূর্ঘটনার পর চালক পালিয়ে গেলেও স্থানীয়রা ওসমান প্রামানিক নামে ট্রাকের হেলপার ও ট্রাকটি আটক করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চাটমোহর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেখ নাসীর উদ্দিন বলেন, দূর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে হেলাপর ও ট্রাকটি আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।