সোমবার ● ৬ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » চাচা ভাতিজির প্রেম : অতপর নির্যাতন, ৯৯৯ কল থানায় আটক
চাচা ভাতিজির প্রেম : অতপর নির্যাতন, ৯৯৯ কল থানায় আটক
রাজশাহী প্রতিনিধি :: রাজশাহীর তানোরে স্কুল পড়ুয়া ভাতিজির সাথে প্রেম লিলায় জড়িয়ে পড়েছেন চাচা নামের লম্পট বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা জানতে পেরে পিতা মাতা মেয়ের প্রতি নির্যাতন চালায় । যার ফলে স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী বাধ্য হয় ৯৯৯এ কল করে । কল করার পর লম্পট চাচা স্কুল ছাত্রী ও তাঁর বাবা মাকে থানা পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আসার পর রফাদফায় জিম্মানামায় ছেড়ে দেয়া হয় বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন ।
গতকাল শনিবারে উপজেলার পাচন্দর ইউপি এলাকার চকপাড়া নামক গ্রামে ঘটে ঘটনাটি। এতে করে এমন ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা না নেবার কারনে এলাকাবাসীর মাঝে বিরাজ করছে অসন্তোষ। জানা গেছে উপজেলার পাচন্দর ইউপি এলাকার চকপাড়াগ্রামের মনির নামের এক যুবক লেখাপড়া করে রাজশাহী কলেজে ।
মনির দীর্ঘপ্রায় দুই বছর ধরে দশম শ্রেণী স্কুল পড়ুয়া ভায়ের মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। কিন্তু মেয়ের পিতা মাতা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারেনি এমন ঘটনা। এরই এক পর্যায়ে চলতি মাসের ২৭ এপ্রিল শনিবার স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী ও প্রেমিক চাচা মনিরের সাথে ঘরের দরজা বন্ধ করে প্রেমে লিপ্ত হন । এঅবস্থা দেখে মেয়েকে পিতা মাতা তাকে মারধর করে । মারার ঘটনা মানতে না পেরে মেয়ে ৯৯৯-এ কল করেন । কলের প্রেক্ষিতে থানা পুলিশ মেয়ে চাচা পিতা মাতা সহ অভিযুক্তদের থানায় নিয়ে আসেন। এমন কি অভিযুক্তদের হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়েছিলেন বলেও অনেকে জানান।
গ্রামের বেশ কিছু ব্যাক্তি নাম প্রকাশ না করে বলেন, চাচা ভাতিজির বাড়ি একটাই । তাদের সম্পর্কের ঘটনা অনেকেই জানতো । কিন্তু তাঁরা ধনাঢ্য হবার কারনে কেউ কিছু বলত না ।
ঘটনার দিন ইউপি সদস্য আ”লীগ নেতা রিয়াজ উদ্দিন তাদের বাড়িতে গিয়ে সব ঘটনা শোনেন এবং বাড়িতে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়নি তিনি। সবাইকে পুলিশ তুলে নিয়ে যাবার পর গ্রামবাসী মনে করেছিল এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা হবে।
ইউপি সদস্য রিয়াজের কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, তাদের সাথে আমার চলাফেরা নাই। ঘটনার দিন আপনি তাদের বাড়িতে গিয়ে সব শুনেছেন এমন প্রশ্ন করা হলে এড়িয়ে গিয়ে বলেন এসব ব্যাপারে পরে কথা বলা হবে।
গত মঙ্গলবার সকালের দিকে থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) খাইরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান ঘটনাটি তদন্ত ওসি ভালো বলতে পারবে । তাঁর সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি।
তদন্ত ওসি রাকিবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান ছাত্রী রেগে গেলে নানা কিছু করে ফেলে এবং সেই রাগ থেকে ৯৯৯-এ কল করেছিল । ঘটনা শোনার পর জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।
পুঠিয়া থানায় এবার গাঁজা কেলেংকারি, এসআই ক্লোজড
রাজশাহী :: রাজশাহীর পুঠিয়ায় থানায় এবার গাঁজা কেলেংকারির ঘটনা ঘটেছে। এক এসআই মালখানা থেকে পাঁচ কেজি গাঁজা বিক্রি করে দেয়। সেই গাঁজাসহ র্যাবের হাতে ধরা পড়ে তিন মাদক ব্যবসায়ী। বিষয়টি পুলিশ সুপারের কানে গেলে তাৎক্ষনিক ভাবে ওই এসআইকে প্রত্যাহার করা হয়।
এর আগেই এ থানায় এধরনের একাধিক ঘটনা ঘটে। সাধারণ লোকজনকে মাদক দ্রব্য দিয়ে মামলা ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে পুলিশের অর্থ আদায়ের ঘটনা ঘটে। এমনকি সিগারেট খাওয়ার অপরাধে তরুণ-তরুনীকে রাতভর থানা হাজতে আটকে অর্থ দাবি করা হয়। টাকা না দেয়ায় মাদক সেবী হিসেবে তাদের চালান দেয়ার ঘটনা ঘটেছে এ থানায়। পুলিশের এই বানিজ্য থেকে রেহায় পায়নি সাংবাদকর্মীও।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে র্যাব-৫ এর একটি দল পুঠিয়া পৌরসভা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচ কেজি গাঁজা তিন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তারা র্যাবকে জানায় গাঁজাগুলো তারা কিনেছেন পুঠিয়া থানার এসআই মনিরুল ইসলামের কাছ থেকে।
আটককৃত মাদক ব্যবসায়ীরা হলেন, পুঠিয়া পৌরসভার এলাকার মৃত শেখ ফরিদ হোসেনের ছেলে জহুরুল ইসলাম বকুল (৩০), গৌরাঙ্গ চন্দ্র সরকারের ছেলে শ্রী গনেশ চন্দ্র সরকার (৩৮) এবং একই এলাকার আনছার আলীর ছেলে শিমুল ইসলাম (৩০)।
এদিকে, গাঁজা বিক্রির ঘটনায় এসআই মনিরুল ইসলাম শুক্রবার প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। জেলা পুলিশ সুপার তাকে প্রত্যাহারের আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন পুঠিয়া থানার ওসি সাকিল উদ্দিন আহম্মেদ।
তবে গাঁজা কেলেংকারির বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে ওসি সাকিল দাবি করেছেন, ‘একটি মাদক মামলার তদন্তে ধীর গতি থাকায় এসআই মনিরুলকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
অপরদিকে পুলিশ ও র্যাবের সূত্র জানায়, গত ২৭ এপ্রিল পুঠিয়া সদরে একটি কাভার্ড ভ্যানে তল্লাশি করে ৯৬ কেজি গাঁজাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৫। পরে র্যাব বাদী হয়ে ২৮ এপ্রিল পুঠিয়া থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
পুঠিয়া থানা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, র্যাবরে ৯৬ কেজি গাঁজা উদ্ধারের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব দেয়া হয় এসআই মনিরুল ইসলামকে। মামলার আলামত হিসেবে জব্দকৃত ৯৬ কেজি গাঁজা তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুলের কাছে হস্তান্তর করে র্যাব। পরে এসআই মনিরুল জব্দকৃত গাঁজাগুলো মালখানায় না রেখে থানা ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে নিয়ে রাখেন। সেখান থেকে গত বৃহস্পতিবার রাতে পাঁচ কেজি গাঁজা মাদক ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম বকুলের কাছে বিক্রি করে দেয়। তবে ওই রাতে র্যাবের একটি দল অভিযান চালিয়ে পাঁচ কেজি গাঁজাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর বকুল র্যাবকে জানায় এসআই মনিরুল ইসলামের কাছ থেকে এই পাঁচ কেজি গাঁজা তারা কিনেছেন। বিষয়টি র্যাবের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপারকে জানানো হলে শুক্রবার এসআই মনিরুলকে প্রত্যাহারের আদেশ জারি করা হয়।
যোগাযোগ করা হলে গাঁজা বিক্রির কথা অস্বীকার করে মনিরুল ইসলাম বলেন, তারা র্যাবের কাছে গ্রেপ্তার হওয়ার পর আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে। মামলা থেকে বাঁচতে তারা আমার উপর দোষ চাপিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।