মঙ্গলবার ● ১৪ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » কৃষি » জমি নেই তাতে কি ছাদ তো আছে
জমি নেই তাতে কি ছাদ তো আছে
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি :: বৈচিত্রময় রূপের অধিকারী ভূমি। এর ব্যবহার ও বৈচিত্রময়। ভূমির রূপের মালিকানার পরিবর্তন ঘটছে। ভূমির মধ্যে অসংখ্য নতুন নতুন আইল হওয়ায় কমছে ব্যবহার যোগ্য ভূমির পরিমান। অনেক ভূমি হীন মানুষ ও রয়েছেন যারা সব সময় বসবাস অথবা চাষাবাদের জন্য এক খন্ড ভূমি নিজের করে পাবার স্বপ্ন দেখেন।
পাবনার চাটমোহর পৌর সদরের বালুচর মহল্লার মৃত আনসার আলীর ছেলে আবুল হোসেন (৩৮) একজন মুদি দোকানদার। তার সখ বাগান করা। মাথা গোঁজার ঠাই টুকু ছাড়া বাড়তি কোন ভূমি নেই তার। অবশেষে বাড়ির ছাদে বাগান করে তিনি তার সখ মেটাচ্ছেন। নিজের ছাদ বাগান সম্পর্কে আবুল হোসেন বলেন, “ গাছের পাতার সবুজ রং আমায় মুগ্ধ করে। ইচ্ছা করে গাছ লাগাতে । কিন্তু গাছ লাগানোর মতো কোন জায়গা ও জমি নেই আমার। মাত্র তিন শতক বসত বাড়ির মালিক আমি। প্রবাসে থাকাকালীন সময়ে সঞ্চয় করা টাকায় দ্বিতল ভবন করেছি। জমি নেই তাতে কি ছাদতো আছে। বছর সাতেক পূর্বে এ ভবনের ছাদেই গাছ লাগানোর চিন্তা মাথায় আসে। সখের বশে ছাদ বাগানে সিমেন্টের চাড়িতে ৪ টি আমরোপালি, ৪ টি লিচু, ৪ টি লেবু, ২ টি পেয়ারা, ২ টি বেদানাসহ ক্যাকটাস, বড়ই, ঘৃতকাঞ্চন, কমলাসহ বিভিন্ন জাতের ফলের গাছ লাগাই। এখন ফল গাছগুলো থেকে টাটকা ফল পাচ্ছি। অবসর সময়ে যখন গাছগুলোর পরিচর্যা করি তখন ভালো লাগার অনুভূতিতে আচ্ছন হই। নিজ হাতে গাছ থেকে নিরাপদ আম পেয়ারা লিচু পেরে খাই ”।
আবুল হোসেন আরো বলেন, আমরা অনেক ভাই বোন। অনেক সদস্যের সংসার চালাতে হিম শিম খেতে হতো আমার বাবাকে। চাটমোহর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়া লেখা করানোর পর আমাকে আর পড়াতে পারেন না। এর পর বছর চারেক পরে অতি কষ্টে টাকার যোগার করে আমাকে কুয়েত পাঠান। ১৬ বছর কুয়েতে প্রবাস জীবন কাটাই। একটা অফিসে পিয়ন পদে কাজ করেছি। ২০০৭ সালে দেশে ফিরে বিয়ে করে আবার প্রবাসে পারি জমাই। ২০০৮ সালে ফিরে আসার পরে আর বিদেশে না গিয়ে বাড়ি করি এবং দ্বিতল ভবনের নিচ তলায় মুদি দোকান করি। এ দোকানের/বাড়ির ছাদেই বাগান করেছি।
এক বছর পর পর ছাদ বাগানের সিমেন্টের চাড়ির মাটি পাল্টান তিনি। স্ত্রী শান্তা ও মা বেগম আরাও আবুলের ছাদ বাগানের পরিচর্যা করেন। গাছে নিয়মিত পানি দেন তারা। যাদের বাগান করার মতো নিজস্ব সম্পত্তি নেই তারা ইচ্ছা করলে বাড়ির ছাদ বা উঠোনের স্বল্প জায়গায় ও টবে মনোরম বাগান করতে পারেন বলে জানান আবুল হোসেন।