বৃহস্পতিবার ● ১৬ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গোবিন্দগঞ্জে পুলিশের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মহাসড়ক অবরোধ
গোবিন্দগঞ্জে পুলিশের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মহাসড়ক অবরোধ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও সিএনজি-অটোরিকশা আটক-মামলা সহ নানাভাবে হয়রানির অভিযোগে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রতিবাদ করেছেন গোবিন্দগঞ্জ সিএনজি ও অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন। সংগঠনের শ্রমিকরা প্রতিবাদের এক পর্যায়ে দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ চৌরাস্তায় অবস্থান নিয়ে শতাধিক সিএনজি দিয়ে মহাসড়কে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে যানচলাচল বন্ধ করে দেয়। প্রায় ১ ঘন্টা অবরোধে মহাসড়কের উভয় পাশে র্দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।এতে চড়ম ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা।
শ্রমিকদের অভিযোগ, আমরা গাড়ীতে গ্যাস তোলার জন্য বগুড়া যাবার পথে এবং মহাসড়ক অতিক্রম করতে গেলেই গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা আমাদের সিএনজি থামিয়ে কাগজপত্র যাচাই, মহাসড়কে সিএনজি উঠানো যাবেনা এরকম নানা বাহানায় চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিতে পারলে সিএনজি আটক করে থানায় ঢুকিয়ে আমাদের রুজির পথ বন্ধ করে দেয়। পরে থানা থেকে সিএনজি ছেড়ে নিয়ে আসতে গেলেও নানা হয়রানির স্বীকার হতে হয়। হয়রানি থেকে পরিত্রাণ পেতে আজকের এ প্রতিবাদ।
খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি মেহেদী হাসান ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রধান শ্রমিকদের অবস্থান স্থানে এসে হয়রানি থেকে মুক্তি দিতে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণে আশ্বস্ত করলে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়। তবে শ্রমিকরা বলেন হয়রানি থেকে মুক্তি না পেলে পুনরায় তারা রাস্তা অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি পালনের ঘোষনা দেন।
রংপুর চিনিকলের অপহৃত মোটর ড্রাইভার উদ্ধার, থানায় মামলা
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধা জেলার একমাত্র কৃষিভিত্তিক ভারিশিল্প কারখানা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জের রংপুর চিনিকলকে ধ¦ংস করার জন্য একটি মহল নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সারাদেশের সব ক’টি চিনিকলের মত নানাবিধ জটিলতার কারণে অব্যাহত লোকসানে প্রায় মুখথুবড়ে পড়া এ চিনিকলকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ আখচাষিরা। আর এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার (১৪ মে) চিনিকলের একজন মোটর ড্রাইভারকে অপহরণের ঘটনাও ঘটেছে।
চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও আখচাষিরা অভিযোগ করেছেন, গত পাঁচ-ছয় বছর যাবৎ রংপুর চিনিকলের বাণিজ্যিক খামারের লীজ গ্রহীতা একটি মহল লীজের মেয়াদ শেষে আর মেয়াদ না বাড়ানোয় ক্ষুব্ধ হয়ে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি সাঁওতাল অধ্যুষিত গ্রামের বাসিন্দাদের ভুল বুঝিযে খামারের জমি দখলে উদ্বুদ্ধ করে। চিনিকলের জমি উদ্ধারের কথা বলে তারা একটি প্রভাবশালী মহলকে সাথে নিয়ে চাঁদা তুলে তহবিল গঠন করে। এরপর উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে মিথ্যা প্রলোভন দিযে সাঁওতালদের ডেকে এনে রংপুর চিনিকলের বাণিজ্যিক খামারের একটি অংশ দখল করে নেয়।
এরপর গত ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর প্রশাসন অবৈধ দখলদারদের হঠিয়ে দিয়ে দখলমুক্ত করে চিনিকলকে জমি বুঝিযে দেয়। এ সময় সাঁওতালদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে তিন সাঁওতাল প্রাণ হারান। তীরবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন দশ-বারজন পুলিশসহ অর্ধশতাধিক সাধারণ মানুষ। এরপর সাঁওতালরা প্রকৃত অবস্থা বুঝতে পেরে জমি দখল থেকে পিছু হটলেও স্থানীয় একটি ভূমিদস্যু গ্রুপ আবার তাঁদের ভুল বুঝিয়ে জমি দখল করার পাঁয়তারা করছে। গত দুই-তিন মাস ধরে এই গ্রুপটি চিনিকলের বাণিজ্যিক খামারের পুকুরে চাষ করা মাছ লুট, আখের ক্ষেতে আগুন দেয়া, দলবেঁধে আখের জমিতে ঢুকে ছোট আখ কেটে নেয়া সহ একরের পর একর জমির আখ গরু-ছাগল দিয়ে নষ্ট করা অব্যাহত রাখে। এ কারণে সেখানে একটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন হলেও তাদের সামনেই এসব কাজ ঘটানো হয়। আর সামান্য কয়েকজন সাঁওতালকে তীর-ধনুক নিয়ে সামনে রাখলেও পিছনে থাকে ওই চিহ্নিত ভূমিদস্যু গ্রুপ।
এরই অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার সকাল পৌনে এগারটার দিকে খামারের জমিতে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করার সময় তীর-ধনুকসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে খামারে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ, আনসার ও পাহারাদারদের সামনেই এক ট্রাক্টর ড্রাইভারকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
পরে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ চিনিকলের খামারে বসে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে জয়পুর সাঁওতালপল্লী থেকে অপহৃত ড্রাইভার শহিদুল ইসলামকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। বেদম মারপিটে আহত ড্রাইভারকে আশংকাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় চিনিকল কর্তৃপক্ষ ১০ জন ভূমিদস্যূর নাম উল্লেখ করে গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।
রংপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: রফিকুল ইসলাম জানান, একটি কুচক্রী মহল সরকারি এ সম্পদটি ধ্বংস করার চক্রান্ত করছে। অবিলম্বে প্রশাসন হস্তক্ষেপ না করলে আরো জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।