রবিবার ● ১৯ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » শিরোনাম » মানুষের প্রতি মানুষের মমত্ববোধ জাগ্রত হলে তবেই পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে : পররাষ্ট্র মন্ত্রী
মানুষের প্রতি মানুষের মমত্ববোধ জাগ্রত হলে তবেই পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে : পররাষ্ট্র মন্ত্রী
সিলেট প্রতিনিধি :: পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন,বুদ্ধ পূর্ণিমার এই মহান দিনে মানুষকে ভালোবাসার ব্রতি নেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গৌতম বুদ্ধ মানুষকে ভালোবাসার কথা বলে গেছেন। মানুষকে সেবা করার কথা বলে গেছেন। মানুষকে ভালোবাসলে, মানুষের প্রতি মানুষের মমত্ববোধ জাগ্রত হলে তবেই পৃথিবীতে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। বুদ্ধ পূর্ণিমার এই দিনে সবার ব্রতী এটাই হোক। গৌতম বুদ্ধের আদর্শ ধারণ করে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে সবাই একসঙ্গে কাজ করে যাবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবতার অন্যতম উদাহরণ দেখিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ‘সাম্প্রতিককালে রোহিঙ্গা সমস্যা একটি বিরাট আকার ধারণ করেছে। নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে যখন রোহিঙ্গারা এদেশে এসেছে, জননেত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবতার অনন্য নিদর্শন স্থাপন করেছেন। মানুষের প্রতি তাঁর ভালোবাসা শ্রদ্ধা ছিল বলেই তিনি এই অনন্য নিদর্শন স্থাপন করতে পেরেছেন।’
মিয়ানমারের আচরণ এর প্রতি দুঃখ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর অনেক প্রান্তে এখনও যুদ্ধ-বিগ্রহ, সংঘাত, মারামারি লেগেই আছে। পৃথিবীতে এখনও পূর্ণাঙ্গ শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যে শান্তির বাণী গৌতম বুদ্ধ দিয়ে গেছেন আড়াই হাজার বছর আগে। চন্ডীদাশ আজ থেকে ছয়শ বছর আগে বলে গেছেন সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই। এই অঞ্চলের মানুষের মনমানসিকতা দেখেই তিনি এই কথা বলেছিলেন। মানুষের প্রতি মানুষের যদি ভালোবাসা, শ্রদ্ধাবোধ এবং মানবতাবোধ থাকে তবেই পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।’
গতকাল ১৮ মে শনিবার নগরীর আখালিয়ার নয়াবাজার ব্রাহ্মণশাসন সিলেট বৌদ্ধ বিহারে সিলেট বৌদ্ধ সমিতির উদ্যোগে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্য ভাষা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. জ্ঞানরত্ন মহাথের এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। পূজনীয় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম বোধিজ্ঞান ভাবনা কেন্দ্রের শ্রীমৎ লোকপ্রিয় মহাথের, সিলেট বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ সংঘানন্দ থের, বিদর্শন ভাবনা কুটির রাউজান, চট্টগ্রাম;র অধ্যক্ষ শ্রীমৎ জগৎজ্যোতি থের, চট্টগ্রাম বিশ্বমৈত্রী বৌদ্ধ বিহার উপাধ্যক্ষ শ্রীমৎ বোধিরত্ন ভিক্ষু ও সিলেট বৌদ্ধ বিহারের শ্রীমৎ আনন্দ ভিক্ষু। সিলেট বৌদ্ধ সমিতির সভাপতি অরুন বিকাশ চাকমার উদ্বোধনী ভাষনের মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন পরিষদের আহবায়কের বক্তব্য রাখেন সাধন কুমার চাকমা, সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পেশ করেন সিলেট বৌদ্ধ সমিতির সাধারণ সম্পাদক উৎফল বড়ুয়া।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, গোবিন্দগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, পুলিশ কর্মকর্ত মো. আজবাহার আলী শেখ পিপিএম, শাহ হারুনুর রশিদ, সিটি কাউন্সিলর ইলিয়াছুর রহমান, রেবেকা বেগম রেনু, সাবেক কাউন্সিলর জগদীশ চন্দ্র দাশ, বিশিষ্ট সমাজ সেবী হাজী সেলিম, রামেন্দ্র বড়ুয়া, দিলীপ বড়ুয়া, তপন কান্তি বড়ুয়া, অধ্যাপক বরণ চৌধুরী,দিবাকর বড়ুয়া,সুকান্তি বড়ুয়া, প্রকৌশলী সাজু বড়ুয়া, শিমুল মুৎসুদ্দি, লিটন বড়ুয়া, দিলু বড়ুয়া, পলাশ বড়ুয়া, অংশু প্রু মারমা, মিলন বড়ুয়া,জয়ধন বড়ুয়া, দ্বিপ্তীমান বড়ুয়া,শিমুল বড়ুয়া,প্রকৌশলী সেতু কুমার বড়ুয়া, রাজীব বড়ুয়া, চষুইন্স মারমা, চিন্তামনি চাকমা, দেবপ্রিয় চাকমা, নিখিল কান্তি চাকমা, ডাঃ সেবু বড়ুয়া রাজু বড়ুয়া ও সুজন বড়ুয়া প্রমূখ।
সকলে ধর্মীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে বুদ্ধ পূজা উৎসর্গ, সংঘাদান, অষ্টপরিস্কার দান, বিশ্ব শান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা, ধর্মদেশনা. ভিক্ষু সংঘের পিন্ডদান ও সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্জলনের মাধ্যমে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চলানা করেন চন্দ্র শেখর বড়ুয়া ও চন্দ্রিকা বড়ুয়া মন্টি।