বৃহস্পতিবার ● ৩০ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » জাতীয় » আগামীকাল বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস
আগামীকাল বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস
আগামীকাল শুক্রবার ৩১ মে ২০১৯ বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। তামাকের স্বাস্থ্যঝুঁকিসমূহ তুলে ধরে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস’ পালন করা হয়ে থাকে। ফুসফুস এবং শ্বাসতন্ত্র জটিলতার সঙ্গে তামাক সেবনের সম্পর্ক বিষয়ে জনসাধারণ এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ব্যাপক পরিসরে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এ বছর বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘Tobacco and Lung Health’। ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্র সংক্রান্ত অসুস্থতা বিশ্বব্যাপী অকাল মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ এবং গোটা বিশ্বে মৃত্যুর ৫টি শীর্ষস্থানীয় কারণের মধ্যে ২টিই ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্র সংক্রান্ত জটিলতা। তামাক ব্যবহার এবং পরোক্ষ ধূমপান ফুসফুসের বিভিন্ন রোগের প্রধানতম কারণ। এসমস্ত রোগের মধ্যে রয়েছে, ফুসফুস ক্যান্সার, ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিস (সিওপিডি), যক্ষ্মা এবং অ্যাজমা। তামাক ব্যবহারের ফলে প্রতি বছর বিশ্বে ৮০ লাখেরও বেশি মানুষ মারা যায়। এছাড়া পরোক্ষ ধূমপানের কারণে মৃত্যুবরণ করে আরো প্রায় ১০ লাখ মানুষ, যার বড় একটি অংশ শিশু। বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১ লক্ষ ২৬ হাজার মানুষ মারা যায় তামাক ব্যবহারের কারণে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১০ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ি দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগ, যা একইসাথে তামাক ব্যবহারজনিত মোট মৃত্যুর ২৮ শতাংশের জন্য দায়ি। উদ্বেগজনক বিষয় হলো, বাংলাদেশে শিশু যক্ষ্মা রোগী পাওয়ার হার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৭ সালে এই হার বেড়ে ৪.৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ২০১৩ সালে ছিল মাত্র ২.৮ শতাংশ। সাম্প্রতিক গবেষণায় রাজধানী ঢাকার প্রাথমিক স্কুলে পড়া ৯৫ শতাংশ শিশুর দেহে উচ্চমাত্রার নিকোটিন পাওয়া গেছে, যার মূল কারণ পরোক্ষ ধূমপান। গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে ২০১৭ অনুযায়ী বাংলাদেশে এখনও ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ (৩৫.৩%) প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে। কর্মক্ষেত্রে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৮১ লক্ষ মানুষ। এমনকি বাড়িতেই পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে ৪ কোটি ৮ লক্ষ মানুষ এবং এক্ষেত্রে নারীরা আক্রান্ত হচ্ছে অনেক বেশি।
এবিষয়ে তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা’র (প্রগতির জন্য জ্ঞান) নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, কার্যকর কর ও মূল্য পদক্ষেপের অভাবে বাংলাদেশে তামাকপণ্যের দাম অত্যন্ত কম। ফলে দেশের তরুণ এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী খুব সহজেই তামাক ব্যবহার শুরু করতে পারে। আসন্ন বাজেটে কার্যকর করারোপের মাধ্যমে তামাকপণ্যের দাম জনগণ, বিশেষ করে তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠির ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যেতে হবে।
গৃহস্থালি, কর্মস্থল, গণপরিবহণসহ সব ধরনের পাবলিক প্লেসে পরোক্ষ ধূমপানের প্রকোপ কমানো না গেলে ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্র সংক্রান্ত জটিলতা এবং মৃত্যু হ্রাস করা সম্ভব হবেনা। এক্ষেত্রে সকল পাবলিক প্লেস থেকে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ বিলুপ্তকরণসহ বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। একইসাথে এফসিটিসি আর্টিক্যাল ৫.৩ বাস্তবায়নের মাধ্যমে তামাক কোম্পানির আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে।